পশ্চিমবঙ্গের নাম পাল্টাতে চাইছেন যাঁরা, তাঁদের ছোট্ট একটাই প্রশ্ন

Updated By: Aug 8, 2016, 10:02 PM IST
পশ্চিমবঙ্গের নাম পাল্টাতে চাইছেন যাঁরা, তাঁদের ছোট্ট একটাই প্রশ্ন

স্বরূপ দত্ত

চারিদিকে রব উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলের। খুব শিগগিরি হয়তো নাম বদল হয়েও যাবে, যে কোনওদিন। এই নাম পরিবর্তন ভালো হবে নাকি মন্দ হবে, তা আর আমি এখন কীভাবে বলব? অথবা কেউই বা এখনই কী করে বলবেন? সে তো বলবে ভবিষ্যত। তবে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং অভিজ্ঞ নেতা, মন্ত্রীরা যখন এমন করতে চাইছেন, তাহলে এর পিছনে কোনও যুক্তি নেই, এটা হতে পারে না। নিশ্চয়ই যুক্তি আছে। সত্যিই তো, যেকোনও অনুষ্ঠানে যেহেতু 'W' দিয়ে শুরু রাজ্য, তাই পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিদের ডাক পড়ে সবার শেষে! দিনের পর দিন এই নিয়মের অবিচারে পড়তে, কারই বা ভালো লাগে? আমি, আপনি, আপনাদের, কারওরই খুব একটা ভালো লাগবে না।

এমন নয় যে, এই নাম পাল্টানোর প্রস্তাব শুধু এই সরকার করেছে। এর আগে বামেরা যখন সরকারে ছিল, তাঁরাও একই প্রস্তাব দিয়েছিল। অর্থাত্ একটা জিনিস পরিষ্কার। ওই পদে বসলে অথবা ওখানকার ছোঁয়ায় এই ভাবনাটা 'কমন' হয়ে যায় দুটো বিপরীতমুখী দলের কাছেও। যখন আগে কেউ ছিল, তখন সে-ও একই প্রস্তাব দিয়েছে। এখন অন্য কেউ এসে একই প্রস্তাব দিচ্ছে। অথচ, একসঙ্গে এই 'কমন' প্রস্তাব দেওয়া যাবে না! বিরোধী যে! আলাদা আলাদাভাবে একই 'কমন' প্রস্তাব দেওয়া হবে কিন্তু একসঙ্গে কখনও নয়। রাজনীতি বড় মজার। শেখার তো বটেই।

এবার আমার ছোট্ট দুটো প্রশ্ন। এমন একটা 'কমন' প্রস্তাব যখন বিপরীত মেরুতে অবস্থান করা দুটি দলের পক্ষ থেকেই গিয়েছে কোনও না কোনও সময়ে, তাহলে সেটার যৌক্তিকতা আছেই। অতএব, তাঁরা যখন বদল চাইছেন, হোক পরিবর্তন। বেশি মানুষ যদি এটার পক্ষেই মত দেন, তাহলেও হোক পরিবর্তন। আমার কাছে আমার পশ্চিমবঙ্গও যা, আমার বঙ্গও তাই, আর বাংলা তো আমার বটেই। সুতরাং, ব্যক্তিগতভাবে আমার নাম পরিবর্তন নিয়ে কোনও নেতিবাচক কথা নেই। বরং, মজা করেই বলতে চাওয়া- 'কী নামে ডেকে বলব তোমাকে, মন্দ করেছে আমায় ওই দুটো চোখে'-র মতো অবস্থা!

আর শেষ বেলায় একটাই ছোট্ট প্রশ্ন।

১) আচ্ছা, রাজ্যের নাম পরিবর্তন করতে চান যাঁরা, তাঁরা কোনও একদিন দুম করে পারবেন নিজেদের রাজনৈতিক দলটার নামের পরিবর্তন করতে? অথবা পারবেন হঠাত্ করে কোনও একদিন নিজেদের রাজনৈতিক দলের প্রতীকের পরিবর্তন করতে? শহরের রঙ তো নীল-সাদা। ওই রঙের বাড়ি করলে তো করও কিছু কমছিল বা মুকুব হচ্ছিল পুরসভার পক্ষ থেকে। তা সেই নীল-সাদা শহরে আর রাজনৈতিক দলের পতাকার রঙগুলোয় এত সবুজ, গেরুয়া, লাল, সাদা রেখে লাভ কী! দিন না, পাল্টে। বেশ ভালই লাগবে দেখতে। কারণ, নীল-সাদা শহরটায় যেটুকু অন্য রঙ দেখা যায়, তার বেশিটাই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পতাকা, ফেস্টুন, ব্যানার, হোর্ডিং-ই তো। ইতিহাস বদলে ফেলা যাচ্ছে অবলীলায়। আর বর্তমানকে একটু বদলানো যাবে না? ভেবে দেখতে পারেন। শহরটাকে দেখতে এখন বেশ লাগে।  পরে হয়তো আরও ভালো লাগবে।  আর এই প্রশ্নটা খানিকটা মনে এসেছে তাই করা।  কোনও রাজনৈতিক নেতা, তাঁর দলকেই এটা করতে হবে না।  সেটা উচিত হবে না।  অনেকদিনের নামটার প্রতি মায়া থাকে তাই।  সব পরিবর্তন মেনে নেওয়ার মতো মন আমার, আমাদের আছে।  আপনারা এগিয়ে যান।  স্বাগতম। 

আরও পড়ুন বন্ধুত্বের দিনে সেরা প্রাণহীন ১০ বন্ধু আর বিশ্বের সেরা দুই বন্ধুকে সেলাম

.