Anurag Kashyap : 'হস্টেলে সিনিয়ারদের যৌন হেনস্থা, ট্রমার মধ্যেই কেটেছিল স্কুল জীবন'
অনুরাগের কথায়, স্কুল জীবনটা তাঁর ট্রমার মধ্যেই কেটেছে। বারবার উত্যক্ত হতে হতে তাঁর মধ্যে স্বাভাবিক নিয়মেই কিছু প্রবৃত্তি তৈরি হয়েছিল, যেটা অনেকসময় তাঁকে এধরনের ঘটনা থেকে বাঁচতে সাহায্য় করত। অনুরাগ কাশ্যপ বলেন, 'আবাসিত স্কুলগুলিতে যৌন নির্যতন আসলে ভীষণই সাধারণ ঘটনা। এতে ছাত্রছাত্রীদের কোনও দোষ নেই, আসলে গোটা সমাজ ব্য়বস্থাটাই ভীষই ত্রুটিপূর্ণ। যেটা আজ ভীষণভাবেই অনুভব করতে পারি। এধরনের ঘটনা আমাকে ভীষণভাবে প্রভাবিতও করেছিল। যদিও আমার মধ্যে বেঁচে থাকার তাগিদ বরাবরই খুব বেশি ছিল, তাই সমস্যা হয়নি।'
Anurag Kashyap, জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: 'ব্ল্যাক ফ্রাইডে', 'গ্যাংস অফ ওয়াসিপুর', 'গুলাল', 'নো স্মোকিং', 'দেব ডি', 'মুক্কাবাজ', 'মনমর্জিয়া'র মতো ছবি বানিয়েছেন। আবার 'স্যাক্রেড গেমস'-এর মতো ওয়েব সিরিজ বানিয়ে নিজের আলাদা পরিচিতি তৈরি করেছেন পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ। বলিউডের প্রথম সারির পরিচালকদের তালিকাতেই রয়েছে অনুরাগের নাম। পরিচালকের জন্ম ১৯৭২-এ, উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে। তাঁর স্কুল জীবনের কিছুটা কাটে দেরাদুনের গ্রিন স্কুলে এবং পরবর্তীসময়ে (৮ বছর বয়সে) গোয়ালিয়রের এসসি ইন্ডিয়া স্কুলে ভর্তি হন তিনি। যেটি কিনা আদপে একটি বোর্ডিং স্কুল। দিল্লি ইউনির্ভাসিটির অধীনে হংসরাজ কলেজে জুলজি নিয়ে পড়াশোনা করেন অনুরাগ কাশ্যপ।
পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপের স্কুল জীবনের অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর ছিল না। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্কুলজীবনের তিক্ত স্মৃতির কথা একবার নিজেই সামনে এনেছিলেন পরিচালক। স্কুল জীবনে সিনিয়াররা তাঁকে র্যাগিং করত, বহুবার যৌন হেনস্থার মুখোমুখিও হতে হয়েছিল তাঁকে। অনুরাগের কথায়, স্কুল জীবনটা তাঁর ট্রমার মধ্যেই কেটেছে। বারবার উত্যক্ত হতে হতে তাঁর মধ্যে স্বাভাবিক নিয়মেই কিছু প্রবৃত্তি তৈরি হয়েছিল, যেটা অনেকসময় তাঁকে এধরনের ঘটনা থেকে বাঁচতে সাহায্য করেছে। অনুরাগ কাশ্যপ বলেন, 'আবাসিত স্কুলগুলিতে যৌন নির্যতন আসলে ভীষণই সাধারণ ঘটনা। এতে ছাত্রছাত্রীদের কোনও দোষ নেই, আসলে গোটা সমাজ ব্যবস্থাটাই ভীষণ ত্রুটিপূর্ণ। যেটা আজ ভীষণভাবেই অনুভব করতে পারি। এধরনের ঘটনা আমাকে ভীষণভাবে প্রভাবিতও করেছিল। যদিও আমার মধ্যে বেঁচে থাকার তাগিদ বরাবরই খুব বেশি ছিল, তাই সমস্যা হয়নি।'
আরও পড়ুন-খালিস্তানি যোগ! জুবিন নটিয়ালকে গ্রেফতারের দাবিতে সোচ্চার নেটপাড়া
আরও পড়ুন-কেকে কাণ্ডে পাশে ছিলেন না, রূপঙ্করের অভিযোগের পাল্টা জবাব রাঘবের
অনুরাগ আরও জানান, সাধারণত সিনিয়ারদের অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য তিনি লাইব্রেরিতে গিয়ে লুকোতেন। আবার অনেকসময় তিনি লুকোনোর জন্য এমন জায়গা বাছতেন যেখানে সাধারণত কেউ যায় না। সেখানে গিয়েই তিনি পড়াশোনাও করতেন। যতক্ষণ না কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে, ততক্ষণ পর্যন্ত এধরনের র্যাগিং চলতেই থাকত। অনুরাগের কথায়, যখন তিনি দিল্লিতে হংসরাজ কলেজে ভর্তি হন, তখন তিনি সম্পূর্ণভাবেই একজন নির্ভিক ব্যক্তি। কলেজে পড়ার সময় বিভিন্ন খেলাধূলায় অংশ নিয়েছেন বলেও জানান তিনি। তাঁর কথায়, 'সারাক্ষণ হাতে হকি স্টিক নিয়ে ঘুরে বেড়াতাম। কলেজে যেসমস্ত সিনিয়াররা জুনিয়ারদের উপর অত্যাচার চালাত তাঁদের থেকে দূরেই থাকতাম। নিজের একটা আলাদা সমান্তরাল জগত তৈরি করে নি। যাঁরা দুর্বল তাঁদের পাশে দাঁড়াতাম।'
পরিচালকের কথায়, তাঁর অতীতই তাঁকে সফল পরিচালক হিসাবে গড়ে তুলেছে। প্রসঙ্গত ব্যক্তিগত জীবনে অনুরাগের ২১ বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। নাম আলিয়া কাশ্যপ। যদিও অনুরাগ নিজেকে মোটেও একজন ভালো বাবা মনে করেন না। তাঁর কথায়, তিনি একেবারেই মেয়েকে সময় দিতে পারেননি।