Actress Murder: কার ফোন? সন্দেহ স্বামীর, কালভার্টের নীচে উদ্ধার অভিনেত্রীর টুকরো টুকরো দেহ...
Bangladesh Actress Murder Case: প্রথমে শ্বাসরোধ করে খুন আর তারপরে টুকরো টুকরো করা হয় দেহ। সেই দেহাংশ রাখা হয় ফ্রিজে। তারপর তিনদিন ধরে সেই দেহাংশ পাচার করে খুনিরা। বাংলাদেশের সাংসদ খুনে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ঠিক এই একই পদ্ধতিতে খুন হয়েছেন এক জনপ্রিয় অভিনেত্রী।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বাংলাদেশের সাংসদ খুনের ঘটনা যেন সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানায়। জানা যায় ১৩ তারিখ নিউটাউনের ওই ফ্ল্যাটে প্রথমে শ্বাস রোধ করে খুন করা হয়। এরপর সেই বডি টুকরো টুকরো করা হয়। তিন দিন ধরে সেই বডি পার্ট সারানো হয়।প্রথমে ১৪ তারিখ,১৫ তারিখ ও ১৮ তারিখ। ওই ফ্ল্যাটের ফ্রিজে রাখা হয়েছিল বডি পার্ট। তবে এই বডি পার্ট সরানোর দায়িত্ব যাদের ছিল তাঁদের এখনও কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে পুলিস সূত্রে খবর। ঠিক এই একইভাবে বছর দুয়েক আগে খুন হয়েছিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমু। নড়েচড়ে বসেছিল বাংলাদেশ পুলিস।
২০২১ সালের এক দুপুরে ঢাকার কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করা হয় বস্তাবন্দি রাইমা ইসলাম শিমুর মরদেহ। মৃতদেহ দু টুকরো করে দুটি বস্তায় ভরে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয়েছিল। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে বস্তার ভেতর থেকে খণ্ডিত অংশগুলো উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়। সেদিন রাতেই শিমুর দাদা শহিদুল ইসলাম খোকন মরদেহ শনাক্ত করেন।
ঘটনার তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্ত্রী মোবাইল ফোনে কার সঙ্গে কথা বলেন বা কোথায় যান, এসব নিয়ে প্রতিনিয়ত সন্দেহ করতেন নোবেল। রোববার (১৬ জানুয়ারি) সকালে শিমুর মোবাইলে কল আসে। তখন কে কল করল তা দেখতে চান নোবেল, এতে বাধা দেন শিমু। এ নিয়ে দুই জনের মধ্যে ঝগড়া হয়, যা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। একপর্যায়ে শিমুর গলা চেপে ধরলে তিনি মারা যান। হত্যাকাণ্ডে ছিলেন অভিনেত্রীর স্বামীর বন্ধু ফরহাদও।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও রিমান্ডের প্রথম দিন নোবেল দাবি করেন, তিনি একাই শ্বাসরোধ করে স্ত্রীকে হত্যা করেন। পরে লাশ গুম করতে বাল্যবন্ধু ফরহাদকে ডেকে নেন। ফরহাদ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেছেন, হত্যার আগে তিনি কিছুই জানতেন না। বন্ধুর ফোনে সাড়া দিয়ে হত্যাকাণ্ডের পর ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। তবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে এসেছে, নোবেল একা নয়, হত্যাকাণ্ডের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন ফরহাদ। দুই বন্ধু মিলেই শিমুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
সূত্র জানায়, ওই দিন সকালে নোবেলের বাড়িতে যান ফরহাদ। ফরহাদ যাওয়ার পর বাড়ির দরজাও খুলে দেন শিমু। এরপর তারা ডাইনিং টেবিলে বসে চা খান। কিছুক্ষণ পর শিমুর ফোন দেখা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া শুরু হলে ফরহাদ প্রথমে থামানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে নোবেল উত্তেজিত হয়ে স্ত্রীকে শেষ করে দেওয়ার কথা বলেন। এতে সহায়তা চাইলে ফরহাদও সাড়া দেন। তাৎক্ষণিকভাবে দুজন মিলে শিমুকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।
পরে ফরহাদ ও নোবেল পরিকল্পনা করে বাইরে থেকে বস্তা এনে শিমুর লাশ লম্বালম্বিভাবে দুটি পাটের বস্তায় ভরে প্লাস্টিকের সুতা দিয়ে সেলাই করেন। এরপর বাড়ির দারোয়ানকে খাবার আনতে বাইরে পাঠিয়ে নিজের ব্যক্তিগত গাড়ির পেছনের আসনে শিমুর লাশ নিয়ে বেরিয়ে যান। প্রথমে নোবেল ও ফরহাদ মিরপুরের দিকে গিয়েছিলেন, কিন্তু সেখানে লাশ গুমের উপযুক্ত পরিবেশ না পেয়ে তারা আবার বাড়ি ফেরেন। সন্ধ্যায় আবার তারা লাশ গুম করতে ঢাকার মোহাম্মদপুর, বছিলা ব্রিজ হয়ে কেরানীগঞ্জের দিকে যান। আনুমানিক রাত সাড়ে ৯ টায় মডেল থানার হযরতপুর ইউনিয়নের কদমতলী এলাকার আলীপুর ব্রিজের ৩০০ গজ দূরে রাস্তার পাশে ঝোপের ভেতর লাশটি ফেলে চলে যান তারা।
১৭ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে কেরানীগঞ্জ থেকে শিমুর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিস। মরদেহ উদ্ধারের পর ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে গ্রেফতার করা হয় শিমুর স্বামী শাখাওয়াত আলীম নোবেল (৪৮) ও তার বাল্যবন্ধু এস এম ওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদকে (৪৭)। পুলিস জানায়, লাশ গুম করতে দুটো বস্তা যে প্লাস্টিকের সুতা দিয়ে সেলাই করা হয়েছিল, সেই সুতারই হুবহু এক বান্ডিল শিমুর স্বামী নোবেলের গাড়িতে পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিকভাবে সন্দেহ হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরকে আটক করে পুলিশ। পুলিশি হেফাজতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর নোবেল ও তার বন্ধু ফরহাদ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন।
অথচ রোববার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শিমুকে না পাওয়ার কথা উঠলে স্বামী নোবেল দাবি করেন, তার স্ত্রী সকালে বাড়ি থেকে বের হন, এরপর থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। এদিন রাতেই নোবেল কলাবাগান থানায় স্ত্রীর সন্ধান চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)