Sidharth Shukla: 'আজীবন সিদ্ধার্থের জীবন সেলিব্রেট করব', প্রিয় বন্ধুর মৃত্যুতে আবেগঘন পোস্ট Vidyut Jamwal-এর
২০০৪ সালে মুম্বইয়ের জিমে প্রথম দেখা দুই বন্ধুর।
নিজস্ব প্রতিবেদন: 'সিদ্ধার্থের মতো সুন্দর, স্বাস্থ্যসচেতন, সৎ, বুদ্ধিমান, প্রকৃত পুরুষ জীবনে আর একটিও দেখিনি। সে আমার এমন এক বন্ধু যাঁকে নিয়ে আমি সবসময় গর্ব বোধ করি, আজীবন করব। প্রিয় বন্ধুর মৃত্যুতে শোকাহত বিদ্যুৎ জামওয়াল (Vidyut Jamwal)। অভিনেতার মৃত্যুর প্রায় সাতদিন পর বুধবার ইনস্টাগ্রামে সিদ্ধার্থ শুক্লাকে (Sidharth Shukla) শ্রদ্ধার্ঘ জানালেন তাঁর প্রিয় বন্ধু বিদ্যুৎ জামওয়াল। কথার মাঝে মাঝেই আবেগান্বিত হয়ে পড়লেন বিদ্যুৎ।
ভিডিয়োতে বিদ্যুৎ বলেন, '১৫ থেকে ২০ বছরের বেশি সময় আমরা বন্ধু। কখনই আমরা কোনও প্ল্যান করতাম না। হঠাৎ হঠাৎই আমার কাছে ও চলে আসত। হয়তো প্রিয় বন্ধু এরকমই হয়। আমার কারোর সঙ্গে এরকম সম্পর্ক নেই যা শুক্লার সঙ্গে ছিল। ও ছিল আমার প্রথম জিম পার্টনার। ২০০৪ সালে মুম্বইতে প্রথম একটা জিমে আমাদের দেখা হয়। শেষ যখন ওর সঙ্গে দেখা হয়েছিল তখন ওকে বলেছিলাম তুই একমাত্র ছেলে যাঁর সঙ্গে আমার প্রথম দিনের দেখায় সে কি পরেছিল তা মনে আছে আমার। সাদা টিশার্ট আর বেজ কালারের প্যান্ট পড়েছিল সিদ্ধার্থ। লম্বা একটা ছেলে, চোখের উপর চুল অসম্ভব সুন্দর দেখতে। আমরা এরপর থেকে একসঙ্গেই জিম করতাম। ও সবসময় জিম করতে করতে বলত 'বি দ্য ম্যান টু বিট দ্য ম্যান'। আমি কম্যান্ডো ওয়ান আর টুতে অনেক স্টান্ট করেছি। শুক্লা ছিল অ্যাকশন ফ্যান। ও আমাকে অনেক মুভমেন্ট দেখাতো।'
আরও পড়ুন: Mimi Chakraborty:ওড়িশায় 'খেলা যখন'-এর শুটিং শেষ, মন ভারাক্রান্ত মিমির
একসঙ্গে অনেক মডেলিং শো করেছেন তাঁরা। বিদ্যুতের মতে সিদ্ধার্থ এই ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর এমন একজন বন্ধু ছিল যে বিদ্যুতের সব উন্নতি দেখে খুশি হত। অভিনেতা বলেন, 'আমাকে না জানিয়েই মাকে সঙ্গে নিয়ে কমান্ডো ওয়ান দেখতে গিয়েছিল শুক্লা। নায়ক হিসাবে ওটাই ছিল আমার প্রথম ছবি। আমি ওকে হলে দেখে চমকে যাই। ও কখনও বলতো না আমায় প্রিমিয়ারে ডাক। আমার চোখে দেখা ও ছিল একজন প্রকৃত পুরুষ। মেয়েদের অত্যন্ত সম্মান করত। ওর মা ওকে একজন প্রকৃতপুরুষ বানিয়েছিলেন। সবাইকে সম্মান করতো। জিমে এমন কেউ ছিল না যে ওকে ভালোবাসতো না।' বিদ্যুতের সঙ্গে ১৫ জুলাই শেষ দেখা হয়েছিল সিদ্ধার্থের। তিনি বলেন, 'সেদিন আমরা তিন ঘন্টা একসঙ্গে কাটাই। ও আমার বাড়িতে এসেই বলে বাইরে অনেক মিডিয়া। আমি তো কাউকে ডাকিনি। বলিউডের সবাই তাঁর জিম, এয়ারপোর্ট, ডিনারের যাবার ছবি তোলার জন্য মিডিয়াকে ডাকে কিন্তু সিদ্ধার্থ একমাত্র ব্যক্তি ছিল যে কখনও মিডিয়াকে ডাকেনি। মিডিয়ার সবাই ওকে এমনিই পছন্দ করত।'
বন্ধুর মৃত্যুর পর পুরনো দিনের কথা মনে পড়ছে বিদ্যুতের। পুরনো সেই গল্প বলতে গিয়ে বিদ্যুৎ বলেন,'মডেলিংয়ের টাইম ও একটা দামি বাইক কিনেছিল। আমি শ্যুটের সময়, কারোর সঙ্গে দেখা করতে ওর বাইক আমায় দিয়ে দিত। কেউ আজ অবধি জানে না ওটা আমার নয়। আমি শুক্লাকে অনেক ব্যবহার করেছি। যেখানেই যেতাম কোনও শুক্লা দেখলেই আমি বলতাম সিদ্ধার্থ শুক্লা আমার বন্ধু। এবার ওর মৃত্যুর পর যখন ওর মায়ের সঙ্গে দেখা করি তখন আমার কথা বলার ক্ষমতা ছিল না। আমি ভাবতাম যে আমিই বোধ হয় সেরা সন্তান। কিন্তু না, আমি ওকে দেখে লজ্জিত হতাম। যা যা স্টারডম ও চেয়েছিল সব ও পেয়েছিল। স্টার হওয়ার পরও মাটিতেই পা থাকত ওর। যাঁরা ওর ফ্যান তাঁদের হ্যাটস অফ। সবার ওর জীবন সেলিব্রেট করা উচিত। সিদ্ধার্থের তরফ থেকে আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই প্রথম আমি কারোর মৃত্যুতে শ্মশানে গেলাম যেখানে মনে হল ভগবানকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছে সবাই। ওঁর মধ্যে কোনও কমতি ছিল না। যাঁরা ওঁর মধ্যে কমতি দেখেছিল তাঁদের নিজেদের মধ্যে কমতি ছিল।'
সবশেষে সিদ্ধার্থের পছন্দের ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াসের গান তাঁকে উৎসর্গ করে বিদ্যুৎ বলেন,'কখনও ভাবিনি এই গানটা ওকে ডেডিকেট করতে হবে। ও চলে গেল, মাথা উঁচু করে চলে গেল।'
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)