'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত', আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ব্রাত্যর ছবি 'ব্রাত্য'
বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন পরিচালক ব্রাত্য বসু
নিজস্ব প্রতিবেদন: ৫২ তম ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভাল অফ ইন্ডিয়া (IFFI) অর্থাৎ ভারতের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্যানেরমা বিভাগে (Panorama Section) নির্বাচিত হয়েছিল পরিচালক ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) ছবি 'ডিকশনারি' (Dictionary)। ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন আবীর চট্টোপাধ্যায় (Abir Chatterjee), নুসরত জাহান (Nusrat Jahan), মোসারফ করিম (Mosharraf Karim), পৌলমী বসু (Poulami Basu), অর্ণ মুখোপাধ্যায় (Arno Mukherjee)। ৫ নভেম্বর এই ছবি নিবার্চিত হওয়ার পর মেইলের মাধ্যমে পরিচালকের কাছ থেকে ছবি সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি তথ্য চাওয়া হয় চলচ্চিত্র উৎসবের পক্ষ থেকে । পরিচালক ব্রাত্য বসুকে জানানো হয় যে আগামী ২২ নভেম্বর গোয়ার (Goa) পাঞ্জিমের একটি হলে সকাল ১০টায় প্রদর্শিত হতে চলেছে 'ডিকশনারি'। এমনকি ছবির প্রযোজক ও পরিচালককে আমন্ত্রণও জানানো হয়। প্যানোরামা ফিচার বিভাগে নির্বাচিত হয় ২৫টি ছবি, তার মধ্যে ছিল পাঁচটি বাংলা ছবি। এরপর আচমকাই দেখা যায় কমে গেছে নির্বাচিত ছবির সংখ্যা। বাদ পড়েছে একটি মাত্র বাংলা ছবি 'ডিকশনারি'।
কেন বাদ পড়ল ডিকশনারি? চলচ্চিত্র উৎসবের পক্ষ থেকে মেইল মারফত জানানো হয়েছে ছবির বাদ পড়ার কারণ। ফিল্ম ফেডারেশনের অ্যাপ্লিকেশনে পরিচালক ব্রাত্য বসুর নামের বানান ভুল করে B এর বদলে D লেখা হয়। নামের বানান ভুল থাকাতেই নাকি বাদ পড়েছে এই ছবি। এরপর একটি মেইলের মাধ্যামে প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসানকে (Firdausul Hasan) জানানো হয় যে তাঁর প্রযোজনা সংস্থার যেকোনও একটি ছবি দেখাতে প্রস্তুত ইফি (IFFI), তবে 'ডিকশনারি' প্রদর্শিত করা সম্ভব নয়। শুধুমাত্র পরিচালকের নামের ভুলের কারণেই কি বাদ পড়ল ডিকশনারি, নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ?
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির হন প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসান ও পরিচালক শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, 'শুধুমাত্র একটা অ্যাপ্লিকেশনে একটা নামের ভুলে কারণে ছবি বাদ পড়া খুবই হাস্যকর। আমাকে ওরা যত মেইল করেছে, এমনকি ওদের ওয়েবসাইটেও আমার নামের বানান ঠিক ছিল। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সিদ্ধান্ত এটা। রাজনৈতিক কারণেই বাদ পড়ল এই ছবি। ওরাই জানিয়েছিল যে জুরিরা এই ছবির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছিল। বহু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও দেখানো হয়েছে এই ছবি। কোভিডের পর রিলিজ হওয়া এটাই ছিল প্রথম ছবি। সেইসময়ও এটা হাউজফুল ছিল। ইফিতে যখন ছবি পাঠানো হয় সম্ভবত তখন ওঁরা লক্ষ্য করেননি। পরে নির্বাচিত হওয়ার পর আমার রাজনৈতিক পরিচয়ের কথা ওঠে। তখনই বাদ পড়ল ছবি।'
বিজেপির উদ্দেশ্যে তোপ দেগে ব্রাত্য বসু বলেন, 'ফ্যাসিস্ট বিজেপির যা করার কথা ওরা তাই করেছে। দিল্লির রাজনৈতিক নেতারা যদি না জেনে থাকেন তাহলে আমি আবার বলব, আমার একটি রাজনৈতিক পরিচয় আছে। আমি সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) সদস্য়, আমার নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তারজন্য যদি আপনারা আমার ছবি বাদ দেন তো দিন। আমার বিজেপি বিরোধিতা অব্যাহত থাকবে। আমার সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডও জারি থাকবে । আমি কোনও সহানুভূতি চাইছি না, কোনও বিদ্রোহও করছি না। আমি আমার মন্তব্য তুলে ধরলাম। বারংবার আমাকে ওঁরা অভিনন্দন জানিয়েছে। কিন্তু এখানকার গণমাধ্যমে এই খবর সামনে আসার পরই বাদ পড়ল ছবি। জানি না এখান থেকে কোনও কলকাঠি নাড়া হল কিনা। রাজনীতির সঙ্গে যদি ছবিকে ওরা মেলায়, তাহলে আর কিছু বলার নয়।'
আরও পড়ুন: Anupam-Piya Divorce: কেন বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিলেন অনুপম ও পিয়া?
অন্যদিকে ছবির নায়িকা নুসরত জাহান জি ২৪ ঘণ্টাকে জানিয়েছেন, 'রাজনৈতিক কারণে যদি এই ছবি বাদ পড়ে তাহলে এটা খুবই ভুল কিন্তু যদি ক্রিয়েটিভ কারণে বাদ পড়ে তাহলে অভিনেতা হিসাবে খারাপ লাগবে।'