Nusrat Jahan: ২৪ কোটির আর্থিক প্রতারণা মামলায় ইডির তলব, মুখ খুললেন নুসরত জাহান...
Nussrat Jahan: মঙ্গলবার দুপুরে হিঙ্গলগঞ্জ মহাবিদ্যালয় একটি অনুষ্ঠানের উপস্থিত হন বসিরহাটের সাংসদ ও অভিনেত্রী নুসরত জাহান। মঙ্গলবার সকালেই জানা যায় যে আগামী মঙ্গলবার নুসরতকে তলব করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এদিনের অনুষ্ঠানে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে এই বিষয়ে মুখ খোলেন অভিনেত্রী।
বিমল বসু: কিছুদিন আগেই ২৪ কোটির আর্থিক প্রতারণায় নাম জড়িয়েছে বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ ও অভিনেত্রী নুসরত জাহানের (Nussrat Jahan)। সেই সময় এক পার্টিতে এই বিষয়ে নুসরতকে জিগ্গেস করা হলে তিনি ও যশ দাশগুপ্ত দুজনেই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানিয়েছিলেন যে তাঁর নাম অভিযোগ উঠলেও ইডি অভিনেত্রীকে ডাকবেন না। তবে তার কয়েকদিনের মাথায় উলট পুরাণ। মঙ্গলবার নুসরতকে তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। আগামী মঙ্গলবার সিজিও কমপ্লেক্সে তাঁকে হাজিরার নির্দেশ দেয় ইডি। নুসরতের সঙ্গে ওই সংস্থার ডিরেক্টর রাকেশ সিংহকেও তলব করা হয়েছে বলেই খবর। এবার ইডির তলব প্রসঙ্গে মুখ খুললেন অভিনেত্রী সাংসদ।
আরও পড়ুন- Jawan First Show: বাংলায় 'জওয়ান' জ্বর, রাত ২টো বা ভোর ৫টা স্ক্রিন দাপাবেন বাদশা
বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদের নামে ২৪ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ জমা পড়েছিল ইডি-র কাছে। টাকা নিয়েও ফ্ল্যাট হস্তান্তর না করার অভিযোগ ওঠে অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে। সেভেন্থ সেন্স ইনফ্রাস্টাচার নামক এক কোম্পানির ডিরেক্টর থাকাকালীন ২৪ কোটি টাকা বেআইনি লেনদেনের সঙ্গে জড়িত বলে গড়িয়াহাট থানায় এইআইআর দায়ের হয়েছিল নুসরতের বিরুদ্ধে। এবার সেই কেসে নুসরত জাহানকে ডেকে পাঠাল ইডি। মঙ্গলবার দুপুরে হিঙ্গলগঞ্জ মহাবিদ্যালয় একটি অনুষ্ঠানের উপস্থিত হন বসিরহাটের সাংসদ নুসরত জাহান। সেখানে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে কাজের চাপে মেইল চেক করা হয়নি। যদি তেমন কোনো নোটিশ আসে তবে অবশ্যই ইডিকে সহযোগিতা করব’।
নুসরতের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৪ সালে নুসরতের সংস্থা ৪২৯ জনের কাছ থেকে ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা করে নেয়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন একটি ব্যাঙ্কের অবসর প্রাপ্ত কর্মচারী সহ বেশ কিছু চাকুরীজীবী। তাঁদের বলা হয়েছিল, তিনবছরের মধ্যে রাজারহাট হিডকোর কাছে প্রত্যেককে 3BHK করে ফ্ল্যাট দেওয়া হবে।কিন্তু ২০২৩ সাল অর্ধেক কেটে যাওয়ার পরেও আজ পর্যন্ত ফ্ল্যাট পাননি কেউই।তাই বাধ্য হয়েই ইডির দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন- Sharmila Tagore: একযুগেরও বেশি সময় পার, ফের বাংলা ছবিতে শর্মিলা ঠাকুর
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা প্রতারিতদের সঙ্গে নিয়ে অভিযোগ জানাতে যান ইডি দফতরে। শঙ্কুদেব পন্ডার অভিযোগ, গড়িয়াহাট রোডে মেসার্স ৭সেন্স ইনফাস্ট ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি আছে। সেই কোম্পানির ডিরেক্টর তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান।আরও অভিযোগ, ৪২৯ জনের কাছ থেকে ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা করে, প্রায় ২৪ কোটি টাকা নিয়েছে সেই সংস্থা।এমনকী সেই টাকা দিয়ে নুসরত জাহান নিজে পাম এভিনিউতে ফ্ল্যাট কিনেছেন বলেও অভিযোগ।
এরপরেই নুসরত প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেন, তিনি কোনও আর্থিক দুর্নীতিতে যুক্ত নন। সংস্থাটির ডিরেক্টর থাকাকালীন কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা ফেরত দিয়ে দেন। নুসরতের দাবি, 'এই কোম্পানি থেকে ২০১৭-র ১ মার্চ আমি রিজাইন করি। আমার বাড়ি দুর্নীতির টাকা দিয়ে কেনা নয়। এই কোম্পানি থেকে আমি লোন নিই। ১ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ২৮৫ টাকা লোন নিই। ২০১৭-র ৬ মে সুদ সহ ১ কোটি ৪০ লাখ ৭১ হাজার ৯৯৫ টাকা ফেরত দিই এই কোম্পানিতে। সব ব্যাংক ডিটেইলস ও রেকর্ড আমার কাছে আছে। আমি কোনওদিনই এরকম কোনও কাজ না করেছি, না করব। ৩০০ শতাংশ চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, দুর্নীতির সঙ্গে আমি কোনওভাবেই জড়িত নই’।
কিন্তু, নুসরতের দাবিতেই সব 'হিসেব' মেলেনি! কারণ যখন এই অপরাধটা হয়েছে, তখন অর্থাৎ ২০১৪ সালে তিনি কোম্পানির অন্যতম ডিরেক্টর ছিলেন। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি ওই কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। ৩ বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালের মধ্যে ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা ছিল! এদিকে ওই সময় তিনি ওই কোম্পানি থেকে লোন নিয়ে তাঁর ফ্ল্যাটটি কেনেন। ফলে কোম্পানি থেকে লোন নেওয়া প্রসঙ্গেও উঠছে প্রশ্ন। প্রশ্নের জবাব দেননি নুসরত। এরপরেই ইডির তলব অভিনেত্রী সাংসদকে।