লাল পতাকা জড়িয়ে 'সংসার সীমান্তে' পাড়ি আমৃত্যু বামপন্থী তরুণের
তরুণ মজুমদারের দেহ এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে বের করে নিয়ে আসায় হয় এনটিওয়ান স্টুডিয়োয় তাঁর অফিসে। মৃতদেহে জড়ানো ছিল লাল পতাকা আর গীতাঞ্জলি।
অনুষ্টুপ রায় বর্মণ: লম্বা লড়াইয়ের শেষে 'সিনেমা পাড়া দিয়ে' নিজের পথ চলা শেষ করলেন তরুণ মজুমদার। সোমবার সকালে ৯২ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন বিখ্যাত এই চিত্র পরিচালক।
নিজের সিনেমার মাধ্যমে প্রতিবার চেষ্টা করেছেন সাধারণ মানুষের জীবনকে তুলে ধরতে। সেরকমই সাধারণ মানুষের মতই জীবন কাটানোর চেষ্টা করেছেন তিনি নিজে। সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাদের জীবনের কথা নিজের সিনেমায় তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়েছেন আজীবন।
এহেন তরুণ মজুমদার শেষ সময় অবধি নিজের মতাদর্শের পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেন অনড়ভাবে। বামপন্থি মনন নিয়ে আজীবন পথ চলা তরুণ মজুমদারের শেষ কিছু ইচ্ছা আবারও প্রমাণ করে দিয়েছে মতাদর্শের প্রতি তাঁর চির আনুগত্য।
তরুণ মজুমদারের দেহ এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে বের করে নিয়ে আসায় হয় এনটিওয়ান স্টুডিয়োয় তাঁর অফিসে। মৃতদেহে জড়ানো ছিল লাল পতাকা আর গীতাঞ্জলি। সেখান থেকেই ফের এসএসকেএম হাসপাতালে দান করে দেওয়া হয় তাঁর মৃতদেহ।
মৃত্যুর পরেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রত্যাখ্যান করেন তরুণ মজুমদার। রবীন্দ্রসদন অথবা নন্দন কোথাও তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হোক তা চাননি বর্ষীয়ান এই পরিচালক। ফলত রাজ্য সরকার চাইলেও পরিবারের তরফে সব রকম রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রত্যাখ্যান করা হয়।
আরও পড়ুন: 'পথের পাঁচালী দেখুন', 'পথের পাঁচালী দেখা আমাদের কর্তব্য'; মিছিলের সামনে তরুণ
এনটিওয়ান স্টুডিয়োয় তাঁর অফিসে মানুষ তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারলেও তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী কোনও ফুল আনতেও বারণ করা হয় তাঁর অনুরাগীদের।
বামেদের ছাত্র সংগঠন ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, "রাজনীতির দলবদল আসলে মূল্যবোধের অবক্ষয়ের পরিচায়ক। এই পাপের স্রোতে দাঁড়িয়ে আমাদের মতো তরুণ প্রজন্মের সামনে আদর্শ তরুণ মজুমদার।"
তিনি আরও বলেন, "আমার সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় বহুবার উঠে এসেছে এই প্রসঙ্গ। প্রতিবার যে দৃঢ়তার সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন আমৃত্যু বামপন্থী থাকব তা তরুণ প্রজন্মের কাছে অসৎ না হওয়ার শিক্ষা।"