The Eken: পর্দার অন্যান্য গোয়েন্দাদের সঙ্গে একেনবাবুর পার্থক্য একটাই, খোলসা করলেন পরিচালক জয়দীপ মুখোপাধ্যায়
'এই গরমের দাবদহে যাঁরা অতিষ্ঠ তাঁরা হলে ঢুকে দার্জিলিঙ দেখে শান্তি পাবেন। বাঙালি যেভাবে দার্জিলিঙকে দেখতে পছন্দ করে, যে যে জায়গা দেখতে যায় তাও রয়েছে আবার যা যা দেখেনি তাও রয়েছে। একটা মানসভ্রমণ হয়ে যাবে।'
সৌমিতা মুখোপাধ্যায়: পয়লা বৈশাখে মুক্তি পেয়েছে জয়দীপ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত গোয়েন্দা ছবি 'দ্য একেন'। ইতিমধ্যেই ওয়েবসিরিজে জনপ্রিয় একেন, সেই একেনকে হলমুখী হয়েছে দর্শক। সেই ছবির খুঁটিনাটি নিয়েই জি ২৪ ঘণ্টার সঙ্গে আড্ডায় পরিচালক।
প্রঃ ওয়েবসিরিজ হিসাবে খুবই জনপ্রিয়, একেনবাবুকে নিয়ে সিনেমার পরিকল্পনা করলেন কেন?
জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ঃ আমরা যাঁরা এতদিন একেন বাবুকে ওয়েবসিরিজে দেখে এসেছি, পাঁচটা সিজন হওয়ার পর একেনবাবু যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে তার জেরে অনেকেই প্রশ্ন করতেন একেন বাবু কেন বড়পর্দায় আসছে না? কারণ অনেকেই সিনেমাটা বড়পর্দাতেই দেখতে পছন্দ করেন। তো তাঁরা যাতে বঞ্চিত না হন আর একেনের এই জনপ্রিয়তা যাতে বড়পর্দাতেও বাড়ে সেইজন্য একেনকে নিয়ে সিনেমা বানাই।
প্রঃএকেনবাবুর কী কোনও পরিবর্তন হচ্ছে?
জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ঃ না, একেনবাবু ওয়েবসিরিজের মতো একই আছেন, শুধু তাঁর ক্যানভাসটা বেড়ে গেছে।
প্রঃ দার্জিলিঙ ঘুরতে গিয়ে কোন রহস্যের মুখোমুখি একেন বাবু?
জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ঃ দার্জিলিঙ গিয়ে ওঁর সঙ্গে বিপাশা মিত্র নামের এক অভিনেত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয়, উনিই একেনবাবুকে একটি মূর্তি উদ্ধারেরর কেস দেন। কিন্তু প্রথমে সেই কেস নিতে চাননি একেনবাবু কারণ উনি ঘুরতে এসেছেন, ওঁর কাছে খাওয়া ঘোরাই মুখ্য। ইনি কোনও কেস এলেই মুষড়ে পড়েন। কেস সলভ করার কোনও মনই থাকে না। কিন্তু বিপাশা মিত্র যখন ঘনিষ্ঠ হয়ে বলেন কেসটা নিতে তখন উনি কেসটা নেন।
প্রঃদার্জিলিঙকে কতোটা আবিষ্কার করেছেন এই ছবিতে?
জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ঃ এই গরমের দাবদহে যাঁরা অতিষ্ঠ তাঁরা হলে ঢুকে দার্জিলিঙ দেখে শান্তি পাবেন। বাঙালি যেভাবে দার্জিলিঙকে দেখতে পছন্দ করে, যে যে জায়গা দেখতে যায় তাও রয়েছে আবার যা যা দেখেনি তাও রয়েছে। একটা মানসভ্রমণ হয়ে যাবে। দার্জিলিঙকে নতুনভাবে পাওয়া যাবে। পাহাড় তো খুব রহস্যময়, রোদ্দুর আর মেঘের খেলা চলতে থাকে। কখনও কুয়াশা কখনও বৃষ্টি, এবছর আবার রেকর্ড তুষারপাত হয়েছে, সবই রহস্যের আকার নিয়েছে এই ছবিতে। এখানে দার্জিলিঙ একটা চরিত্র হয়ে উঠেছে।
প্রঃঅভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ঃ আমি যে টিমটা নিয়ে গিয়েছিলাম, সবাই খুবই ভালো। আমরা যখন আউটডোরে কাজ করি তখন তো একটা পরিবারের মতো কাজ করি। এক জায়গায় থাকা, সেখান থেকে কাজে যাওয়া, ফিরে আবার আড্ডা, অচেনাদের মধ্যেও বন্ধুত্ব তৈরি হয়ে যায়। পায়েলের সঙ্গে আমি আগে কাজ করেছি। সুহত্র আমার পরিচিত, সোমকের সঙ্গে এই কাজের সূত্রেই পরিচয়, অনির্বান পরিচিত আবার অন্যদিকে অনুজয়, সমীরদার সঙ্গে প্রথম পরিচয়। প্রত্যেকেই সঙ্গেই বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে এবং আমরা পরিবারের মতো একসঙ্গে কাজ করেছি।
প্রঃপর্দার অন্যান্য গোয়েন্দাদের সঙ্গে একেন বাবুর প্রতিযোগিতা কতোটা?
জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ঃ এখনও অবধি যে গোয়েন্দা চরিত্রগুলো আমরা স্ক্রিনে দেখেছি সেগুলো বেশিরভাগই সাহিত্য নির্ভর। ব্যোমকেশ, ফেলুদা, কাকাবাবু সবাই সাহিত্যে হিট তারপর তারা সিনেমায় এসেছে। একেনবাবু একমাত্র চরিত্র যে পর্দায় আগে জনপ্রিয়তা পেয়েছে তারপর সাহিত্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই চরিত্রটা কিন্তু ইউনিক চরিত্র যাঁকে দর্শক স্ক্রিনে দেখে পছন্দ করেছে। সিনেমাপ্রেমীদের কাছে তিনি পছন্দের গোয়েন্দা। একেনের লেখক সুজন দাশগুপ্ত আমায় বলেছেন, তিনিও যখন এখন একেনের গল্প লেখেন তাঁর মাথায় অনির্বানের মুখটাই ভেসে ওঠে।
আরও পড়ুন: নববর্ষে ফের হলমুখী বাঙালি দর্শক, বাংলা ছবির শোয়ে হাউজফুল বোর্ড