হিমোফিলিয়া রোগীদের জন্য সুখবর, এবার বাড়িতেই মিলবে AHF ইঞ্জেকশন
বাড়িতেই ব্যায় বহুল AHF ফ্যাক্টর বিনামূল্যে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ন্যাশনাল হেলথ মিশন।
মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য: কোভিড পরিস্থিতিতে চরম সমস্যায় পড়েছিলেন হিমোফিলিয়া আক্রান্তরা। সময় মত হাসপাতালে যেতে না পারায়, অ্যান্টি হিমেফিলিয়া ফ্যাক্টর পাচ্ছিলেন না অনেকেই। এবার তাঁদের জন্য বাড়িতেই ব্যায় বহুল AHF ফ্যাক্টর বিনামূল্যে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ন্যাশনাল হেলথ মিশন।
হিমোফিলিয়া একটি ব্লিডিং ডিসঅর্ডার। এই অসুখে আক্রান্তদের শরীরে কোথাও কেটে গেলে, কিছুক্ষণ পরে ক্ষত জায়গায় রক্ত জমাট বাঁধে না। রক্তক্ষরণ হতে থাকে। সাধারণত রক্তে অ্যান্টি হিমোফিলিক গ্লোবিউলিন না থাকলে মানুষ হিমোফিলিয়ার শিকার হন।
আরও পড়ুন: দেশে ঝড়ের গতিতে টিকাকরণ সম্ভব হল ১ দিন, মুখ থুবড়ে পরল মঙ্গলবারই
রোগ প্রতিরোধের উপায়
হিমোফিলিয়া বিভিন্ন গ্রেড আছে। সিভিয়ার , মডারেট এবং মাইল্ড। এই রোগীদের ইঞ্জেকশনের মধ্যে রক্তে অ্যান্টি হিমোফিলিক ফ্যাক্টর দিতে হয়। যা যথেষ্ট খরচ সাপেক্ষ। মূলত মানুষের ওজনের উপর নির্ভর করে শরীরে কত ইউনিট AHF প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, গড়ে কেজি প্রতি দশ ইউনিট প্রয়োজন। সপ্তাহে তিনবার। প্রতি ইউনিটের সরকারি মূল্য দশ টাকা। অর্থাৎ কোনও ব্যক্তির ওজন পঞ্চাশ কেজি হলে, তাঁর দরকার পঞ্চাশ ইউনিট। আর পঞ্চাশ ইউনিটের দাম পড়বে ৫০০০ টাকা। মানে সপ্তাহে তিন বার AHF নিতে ওই ব্যক্তির খরচ পড়বে সপ্তাহে পনেরো হাজার টাকা। যা এক মাসে গিয়ে দাঁড়াবে ৬০ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: ২ বছরের ঊর্ধ্বে শিশুদের জন্য ভ্যাকসিন সেপ্টেম্বরে! জানালেন AIIMS প্রধান
রক্ত ক্ষরণ আরও বিপদ
এবার যদি হিমোফিলিয়া আক্রান্ত কোনও রোগী হঠাৎ রক্তক্ষরণ শরু হয়ে যায়, বিশেষ করে মস্তিষ্কে, তখন AHF-র ইউনিট আরও বাড়বে তখন কেজি প্রতি দিতে হবে পঞ্চাশ ইউনিট। তাও দিনে দুবার। সেক্ষেত্রে পঞ্চাশ কেজি ওই ব্যক্তির দরকার ২৫০০ ইউনিট AHF। যার দাম ২৫০০০ টাকা। আর দিনে দুবার সেই ইঞ্জেকশন নিতে খরচ হবে পঞ্চাশ হাজার টাকা।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরে নথিভুক্ত হিমোফিলিয়া রোগীর সংখ্যা প্রায় ২০০০। এর বাইরেও বহু রোগী আছেন, যাঁদের সরকারি খাতায় নাম নেই।
আরও পড়ুন: ভয়াবহ আকার নিতে চলেছে তৃতীয় ঢেউ, দিনে আক্রান্ত হবে ৫ লক্ষ: IIT কানপুর
বাড়িতেই মিলবে AHF
একে তো খরচ সাপেক্ষ, তারপর কোভিড পরিস্থিতিতে হাসপাতালে পৌঁছনো বেশ কষ্টকর। এ অবস্থায় হিমোফিলিয়া রোগীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল বাড়িতে AHF দেওয়ার। এবার সেই দাবিই মানতে চলেছে ন্যাশনাল হেলথ মিশন। তবে বাড়িতে AHF দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশিকাও আছে। রোগীদের যথাযথ রেকর্ড রাখতে হবে। তাঁরা যে হিমোফিলিয়া আক্রান্ত , সেটা নিজেকেই জানাতে হবে। এছাড়া প্রথম ডোজের অ্যাম্পিউল দ্বিতীয় ডোজের সময় ফেরত দিতে হবে। কোনও অবস্থাতেই ডোজের মাত্রা বাড়ানো যাবে না। প্রেসক্রিপশনে যা লেখা থাকবে সেই ডোজই নিতে হবে।