লক ডাউনে শিশুর সুরক্ষায় প্রয়োজন বাড়তি সচেতনতার
আসুন জেনে নেওয়া যাক এ বিষয়ে ঠিক কী বলছেন শিশু-বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক (চাইল্ড স্পেশালিস্ট) ডঃ অনিদ্য কুণ্ডু...
সুদীপ দে: রাস্তা-ঘাট শুনশান! পাবলিক ট্রান্সপোর্ট রাস্তায় প্রায় নেই বললেই চলে। কারণ, বুধবার মধ্যরাত থেকে গোটা দেশে ২১ দিনের জন্য লক ডাউন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই পরিস্থিতিতে বাড়ির কচি-কাঁচাদের সুস্থ রাখবেন কী ভাবে? আসুন জেনে নেওয়া যাক এ বিষয়ে ঠিক কী বলছেন শিশু-বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক (চাইল্ড স্পেশালিস্ট) ডঃ অনিদ্য কুণ্ডু...
ছোটদের মধ্যে যদি জ্বর, হাঁচি, কাশি, গলা ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ লক্ষ্য করেন, তাহলে কি করবেন?
ডঃ কুণ্ডু জানান, বছরের এই সময়টাতে জ্বর, সর্দি-কাশি এমনিতেই লেগে থাকে। তাই অযথা আতঙ্কিত হবেন না। শিশুকে নিয়ে হাসপাতালের আউটডোরে না ছুটে পরিবারের পরিচিত চিকিত্সকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। ওই চিকিত্সকের পরামর্শ মেনে প্রয়োজন হলে শিশুকে ওষুধ খাওয়ান। সাবধানে রাখুন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন, সন্তানকেও পরিচ্ছন্ন রাখুন। জ্বর, সর্দি-কাশি মানেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ— এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই।
এই সময় যে সব শিশুদের টিকা বা ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা, সে ক্ষেত্রে কী করতে হবে?
ডঃ কুণ্ডু জানান, এই সময়টায় ভ্যাকসিন দেওয়ার চেয়েও জরুরি ওদের সাবধানে রাখা। তাই ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য শিশুদের এই সময় বাড়ির বাইরে না বের করাটাই ভাল। ক’টা দিন পর ভ্যাকসিন দেওয়া হলেও খুব একটা সমস্যা হবে না। তবে বাইরে বরলে কোনও অসাবধানতাবসত যদি শিশুদের শরীরে সংক্রমণ ছড়ায়, সেক্ষেত্র ফল আরও ভয়ানক হতে পারে। যে সব শিশুর হাঁপানির সমস্যা রয়েছে বা সর্দি-কাশির ধাত, চিকিত্সকের পরামর্শ মেনে ওদের যে ইনহেলার বা ওষুধ দেওয়া হয়েছে সেগুলি চালু রাখুন। পেটে সমস্যা বা ডায়রিয়ার মতো উপসর্গ দেখলে শিশুদের বারে বারে ওআরএস-এর জল খাওয়ান। গা-ব্যথা, জ্বর থাকলে বাড়ির পরিচিত চিকিত্সকের পরামর্শ মেনে প্রয়োজন হলে শিশুকে প্যারাসিটামল খাওয়াতে পারেন। তবে কোনও ভাবেই এ সময় অ্যান্টিবায়েটিক খাওয়াবেন না।
আরও পড়ুন: কোন পথে এগোচ্ছে করোনার চিকিত্সা, ভাইরাস প্রতিরোধে কতটা তৈরি ভারত?
স্তন্যপায়ী শিশুদের মায়েদের ক্ষেত্রে ডঃ কুণ্ডুর পরামর্শ, সাম্প্রতিক কালের মধ্যে যদি কোনও বিদেশ বা ভিন-রাজ্য থেকে আসা আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করে থাকেন, যদি আপনার শিশু ওই ব্যক্তিদের সংস্পর্শে এসে থাকে তাহলে অবশ্যই সতর্ক হওয়া জরুরি। স্তন্যপায়ী শিশুদের মায়ের যদি এই সময় সর্দি-কাশি হয়, তাহলে সন্তানকে স্তনদানের আগে অবশ্যই হাত, মুখ ভাল করে ধুয়ে নেবেন। শিশুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাপড়ে জড়িয়ে রাখবেন। নিজেকেও যতটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, শিশুর সঙ্গে সব সময় থাকা মানুষগুলি যদি পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন থাকেন, তবেই সুরক্ষিত থাকবে শিশুও।