মুখে মাস্ক না পরে বাজারে! গলায় রজনীগন্ধার মালা পরিয়ে দিচ্ছেন তরুণ-তরুণীরা
কে কার কথা শোনে? তা বলে বাঙালি রাস্তায় দাঁড়িয়ে চা খাবে না?
সৌমেন ভট্টাচার্য:
- কী দাদা, মুখে মাস্ক কই।
- আর বলবেন না, আজই পড়তে ভুলে গিয়েছি।
- চিন্তা নেই, এই নিন একটা রজনীগন্ধার মালা পরুন।
- না, মানে...
- জানেন তো, কখন রজনীগন্ধার মালা পরে? করোনাকে এভাবে স্বাগত জানালে দুদিন পর তো দেওয়ালে আপনার ছবিতে মালা পড়বে।
এ কথা শুনে লজ্জায় লাল হয়ে যান প্রৌঢ়। বুঝতে পারেন ভুলটা কোথায় করে ফেলেছেন। রজনীগন্ধা মালার সঙ্গে মাস্কও বিতরণ করা হয়। তা পরে হাতে বাজারে থলি নিয়ে বাড়িমুখো রওনা দিলেন ওই প্রৌঢ়। রবিবার সকালে নিমতার বাজারে দেখা গেল এমনই দৃশ্য।
পুলিস কখনও লাঠিচার্জ করে, কখনও গান গেয়ে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছে। এমনকি রাস্তায় নেমে সোশ্যাল ডিসট্যান্স বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কে শোনে কার কথা? তা বলে বাঙালি রাস্তায় দাঁড়িয়ে চা খাবে না? বাজারে জটলা, মাস্ক ছাড়াই বেরচ্ছেন আমজনতা। তাঁদেরকে সচেতন করতে কোথাও কোথাও হিমশিম খেতে পুলিস-প্রশাসনকে। সেখানে গান্ধীগিরির পথে নামলেন এক দল তরুণ-তরুণী।
আরও পড়ুন- বাড়ছে সংক্রমণ; বাইরে বের হলে মাস্ক পরতেই হবে, নির্দেশিকা স্বাস্থ্য মন্ত্রকের
নিমতা বাজারে দেখা গেল, যাঁরা মাস্ক না পরে বাজারে এসেছেন, তাঁদের গলায় পরিয়ে দেওয়া হচ্ছে রজনীগন্ধার মালা। হকচকিয়ে গেলে তরুণ-তরুণীরা বুঝিয়ে দিচ্ছেন, মাস্ক না পরে বেরলে শুধু আপনারই নয়, সমাজেরও কতখানি ক্ষতি হতে পারে। তাই তাঁরাই দায়িত্বজ্ঞানহীন মানুষদের মুখে একটি করে মাস্কও পরিয়ে দিচ্ছেন।
কেউ নিজের ভুল বুঝে লজ্জায় মুখ ঢাকছেন। কেউ বা ভুল স্বীকার করে মাস্ক পরার অঙ্গীকার করছেন। ওই তরুণ-তরুণীদের এ হেন উদ্যোগে কুর্নিশ জানাচ্ছে স্থানীয়রা। রাজ্যে করোনা আক্রান্ত ৫০-র বেশি। ভয়াবহ হচ্ছে পরিস্থিতি। করোনা মোকাবিলায় সর্বত্রভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন। কিন্তু এই ভাইরাসের প্রতিরোধের দায়ভার এখন প্রত্যেক নাগরিকের। সোশ্যাল ডিসটেন্স বজায় রেখে ঘরবন্দি জীবনই মোদ্দা দাওয়াই করোনার।