কেন্দ্রের বৈঠকে তো থাকেন না, জয়েন্টে বাংলার আর্জিতে চিঠি পাঠালে দেখব: বাবুল
জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষায় হিন্দি, ইংরেজি ও গুজরাটি ভাষা ঠাঁই পেয়েছে। বাংলাকে ব্রাত্য করার অভিযোগ করেছেন মমতা।
অঞ্জন রায়: জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষায় বাংলা ভাষাকে ব্রাত্য রাখার অভিযোগে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির বিবৃতি প্রকাশ করেছেন বিজেপি নেতারা। আসানসোলের সাংসদ বাবুলের কটাক্ষ, আপনি তো কেন্দ্রের বৈঠকে আসেন না, জানবেন কীভাবে!
জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষায় হিন্দি, ইংরেজি ও গুজরাটি ভাষা ঠাঁই পেয়েছে। বাংলাকে ব্রাত্য করার অভিযোগ করেছেন মমতা। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল নেত্রী প্রশ্ন তুলেছেন, জয়েন্ট এন্ট্রাসে হিন্দি ও ইংরেজি ছিল। গুজরাটিকে ঢোকানো হয়েছে। আমার গুজরাটি নিয়ে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু সব ভাষা ঢোকানো হবে না কেন?
বাবুল সুপ্রিয় টুইটারে লিখেছেন, কেন্দ্রের কোনও বৈঠকে তো আপনি থাকেনও না, কোনও অফিসারকে পাঠান না। তাহলে এই ব্যাপারগুলো জানবেন কি করে! আপনি বাংলায় প্রশ্নপত্র তৈরির কোনও উত্সাহ প্রকাশই করেননি। গুজরাট করেছে তাই পেয়েছে।
মাননীয়া দিদি, কেন্দ্রের কোনো মিটিংয়ে তো আপনি থাকেনও না, কোনো অফিসারকেও পাঠাননা তাহলে এই ব্যাপারগুলো আপনি জানবেন কি করে!! নিচের বিজ্ঞপ্তিটা একটু কষ্ট করে দেখুন আপনি বাংলায় প্রশ্নপত্র বানানোর কোনো উৎসাহ প্রকাশই করেননি - গুজরাট করেছে তাই পেয়েছে! #DividerDidi #SpeedbreakerDidi https://t.co/yKcsGtyKKk pic.twitter.com/3DfzDXRDq2
— Babul Supriyo (@SuPriyoBabul) November 7, 2019
রাজ্য সরকার আবেদন করলে তিনি বিষয়টি নিয়ে তদ্বির করবেন বলেও জানিয়েছে বাবুল। লিখেছেন, ''জয়েন্টের প্রশ্নপত্র বাংলায় করার জন্য অনুরোধপত্র পাঠান। আমি নিজে দেখবষ শুধু রাজনীতি করে বাংলার মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি করে চলেছেন।''
এবার দয়া করে টুইটগুলি মুছে ফেলে তাড়াতাড়ি বাংলায় জয়েন্ট এন্ট্রান্স-এর প্রশ্নপত্র বানানোর 'রিকোয়েস্ট লেটার'-টা লিখে পাঠিয়ে দিন এটি যাতে সত্বর করানো যায় তা আমি নিজে দেখবো ! শুধু পলিটিক্স করে বাংলার মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি করে চলেছেন আপনি ও আপনার #TMchhi @BJP4India @swapan55 pic.twitter.com/oDsV1jtazA
— Babul Supriyo (@SuPriyoBabul) November 7, 2019
ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির বিবৃতি টুইট করে রাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় কটাক্ষ করেছেন, ''ভাষার নামে মানুষের মধ্যে বিভাজন করে ভোট পাবেন না বিভাজক দিদি। বাংলায় পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আপনি কখনও অনুরোধ করেননি।''
Dear Divider Didi, dividing people in the name of language is not going to multiply your votes!
To set the record straight, you never requested the exam to be held in Bengali!
https://t.co/cgqcM8MGGF https://t.co/SnP6A1PQhs pic.twitter.com/5QkfygKSb6— Kailash Vijayvargiya (@KailashOnline) November 7, 2019
ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির বিবৃতি বলছে, ২০১৩ সালে জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষায় সম্মত হয়েছিল সবকটি রাজ্য। ওই বছরেই সব রাজ্যগুলিকে অনুরোধ পাঠানো হয়েছিল। শুধুমাত্র গুজরাট তাদের রাজ্যের পড়ুয়াদের জন্য গুজরাটিতে প্রশ্নপত্র করার আবেদন করে। ২০১৪ সালে মরাঠি ও উর্দুতে প্রশ্নপত্র করার আর্জি করে মহারাষ্ট্র। ২০১৬ সালে আবেদন প্রত্যাহার করে মহারাষ্ট্র। তবে গুজরাটি ভাষা চালু থাকে। আর কোনও রাজ্য ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির কাছে আবেদন পাঠায়নি।
রাজ্য সরকার আবার একটি চিঠি প্রকাশ করেছে। ৭ নভেম্বরের চিঠিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ পড়ুয়াই দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা মাধ্যম স্কুলে পড়াশুনো করে। কিন্তু ২০২০ সালে জয়েন্টের প্রবেশিকা পরীক্ষা হতে চলেছে ইংরেজি, হিন্দি ও গুজরাটিতে। এর ফলে সমস্যায় পড়বেন বাংলার সম্ভাবনাময় ছাত্রছাত্রীরা। কেরিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় সকলের সমান সুযোগ পাওয়া উচিত। ভারতীয় সংবিধানের ৮ নম্বর তপশিলীতে রয়েছে ২২টি অফিসিয়াল। তার মধ্যে বাংলাও আছে বলে মনে করিয়ে দিয়েছে রাজ্য।
মমতা দাবি করেছেন,''বাংলা ভাষা রাখার জন্য চিঠি পাঠিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ওরা বলেছিল, মহারাষ্ট্র ও গুজরাট চিঠি পাঠিয়েছিল। তাহলে মরাঠি কেন হল না? চিঠি আগেই পাঠানো হয়েছিল। বলতে হয় বলে দিল। শিক্ষানীতি থেকে অনেক কিছুই পরিবর্তন করা হচ্ছে।''
বাকযুদ্ধ তো চলছেই। রাজ্যের ব্লকে ব্লকে ভাষা নিয়ে আন্দোলনে নামতে চলেছে তৃণমূল। ১১ নভেম্বর রাজ্যজুড়ে সভা করা পরিকল্পনা করেছে তারা। একইসঙ্গে সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনেও সরব হবেন তৃণমূল সাংসদরা।
আরও পড়ুন- Exclusive: শোভন তৃণমূলে ফিরলে বিজেপিতে আসতে পারেন স্ত্রী রত্না? জোর জল্পনা