স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল রূপ
বিসি রায় ও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে একের পর এক শিশুমৃত্যু। মুর্শিদাবাদের লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে প্রসূতির চিকিত্সায় বেনজির গাফিলতির ঘটনা, শিশু ও প্রসূতিদের চিকিত্সা পরিষেবার কঙ্কালসার ছবিকে আরও স্পষ্ট করেছে। কিন্তু কী পরিস্থিতি শহরের মেডিক্যাল কলেজগুলির অন্দরমহলে? কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও এনআরএস।
বিসি রায় ও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে একের পর এক শিশুমৃত্যু। মুর্শিদাবাদের লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে প্রসূতির চিকিত্সায় বেনজির গাফিলতির ঘটনা, শিশু ও প্রসূতিদের চিকিত্সা পরিষেবার কঙ্কালসার ছবিকে আরও স্পষ্ট করেছে। কিন্তু কী পরিস্থিতি শহরের মেডিক্যাল কলেজগুলির অন্দরমহলে? কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও এনআরএস। শহরের দুই নামী সরকারি হাসাপাতালের শিশু ও প্রসূতি বিভাগের বেহাল ছবি আগেই ধরা পড়েছিল চব্বিশ ঘন্টার গোপন ক্যামেরায়। সেই একই ছবি এবার উঠে এল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের প্রসূতি বিভাগে। প্রসূতি বিভাগে মোট শয্যা সংখ্যা একাত্তর। কিন্তু প্রতিদিনই এই বিভাগে গড়ে চিকিত্সা হয় দেড়শোরও বেশি প্রসূতির। একটি বেডেই ঠাঁই হয়েছে সদ্যজাত সন্তান সহ তিন প্রসূতির। বেডে জায়গা না মেলায় ওয়ার্ডের মেঝেতেই সদ্যজাতকে নিয়ে শুয়ে থাকতে হচ্ছে অসুস্থ মাকে। প্রয়োজনের তুলনায় বেড সংখ্যা যে অত্যন্তই কম তা বোঝা যাবে ওয়ার্ড ছাড়িয়ে হাসপাতালের করিডরে বেরোলেই। সেখানেও পা ফেলার জায়গা নেই। করিডরে পাতা সিঙ্গল বেডে সংক্রমণনের আশঙ্কাকে তোয়াক্কা না করেই কোনওভাবে সন্তানকে নিয়ে বসে রয়েছেন মায়েরা। কোথাও দুজন আবার কোথাও তিনজন।
পরিচ্ছন্নতাকে শিকেয় তুলে যত্রতত্র পড়ে রয়েছে ব্যবহৃত গজ, তুলো, সিরিঞ্জ, ফেলে দেওয়া খাবার, লেপ,তোষক, কাঁথা,বালিশ। প্রায় একই অবস্থা শিশু বিভাগেও। ষাট
শয্যার এই বিভাগে গড়ে প্রতিদিন চিকিত্সা চলে নব্বইটি শিশুর। ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। ঘটছে শিশু মৃত্যু। পরিসংখ্যান বলছে গতবছর পাঁচশো পঞ্চাশটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে পাঁচশো তিরিশটি শিশুর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাফাই, প্রয়োজনের থেকে চিকিত্সক ও নার্সের সংখ্যা কম। বিয়াল্লিশটি মেডিক্যাল অফিসার এবং তিরিশটি নার্সের পদ খালি। আর সেকারণেই ব্যাহত হচ্ছে পরিষেবা। সমস্যা কী ভাবে মিটবে তারও কোনও সঠিক উত্তর নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে।