কাজ নেই, পেটে খিদে! তিন সন্তানকে নিয়ে লড়াকু শ্রমিক মা-ই এবার দেবী দুর্গা
এবার দুর্গা পূজায় পরিযায়ী শ্রমিক মায়ের এই লড়াকু মানসিকতাকে কুর্নিশ জানিয়েছে বড়িশা ক্লাব।
নিজস্ব প্রতিবেদন- কঠিন সময় কেড়ে নিয়েছে কাজ। পেটে খিদে। যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুখ। তবুও সংগ্রামী স্বভাবে ছেদ পড়েনি। লড়াইয়ের মানসিকতাও অটুট। আসলে তিনি মা। তিন সন্তান অভুক্ত থাকলে মা কী করে সব আশা ছেড়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকে! লকডাউনের জেরে ভারত গড়ার কারিগরদের দুর্দশা দেখেছে ভারতবাসী। শ্রমিকরা কতটা অসহায়, আন্দাজ করতে পেরেছে দেশবাসী। যাঁদের পরিশ্রমের উপর ভর করে এই দেশের উন্নতির চাকা গড়াচ্ছে তাঁরাই থাকে অভুক্ত। সরকার আসে, সরকার যায়। বছর ঘুরে যায়। কিন্তু এদেশে শ্রমিকদের কপাল ফেরে না। শ্রমিক মায়ের সন্তান আধপেটা খেয়েই থাকে।
এবার দুর্গা পূজায় পরিযায়ী শ্রমিক মায়ের এই লড়াকু মানসিকতাকে কুর্নিশ জানিয়েছে বড়িশা ক্লাব। বেহালার এই ক্লাব পরিযায়ী শ্রমিক মায়ের রূপে দেবী দুর্গাকে উপস্থাপিত করবে। বড়িশা ক্লাবের এবারের থিম-এর নাম ত্রাণ। অর্থাৎ ত্রাণের খোঁজে লকডাউন-এর সময় এদেশের শ্রমিকদের অবস্থা কতটা খারাপ হয়েছিল, সেটাই তুলে ধরা হবে। এমন ভাবনা যাঁর মাথা থেকে এসেছে, সেই শিল্পী রিন্টু দাস বলেছেন, ''খিদে পেটে, চড়া রোদ মাথায় নিয়ে পরিযায়ী শ্রমিক মাকে হাজার কিলোমিটার হাঁটতে হয়েছে। সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে মা বদ্ধপরিকর ছিল। তাই হাজার কষ্ট উপেক্ষা করেও খাবারের খোঁজ চালিয়ে গিয়েছে। এমনকী একটু খাবার জলের জন্যও লকডাউন-এর সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের কত কষ্ট করতে হয়েছে। তাই এই ভাবনা।''
আরও পড়ুন- পুজোয় কীভাবে 'ক্রাউড ম্যানেজমেন্ট'? রাজ্যের কাছে জানতে চাইল হাইকোর্ট
বড়িশা ক্লাবের মায়ের হাতে কোনও অস্ত্র থাকবে না। বরং আট হাতে থাকবে ত্রাণের থলি। রিন্টু দাস বলেছেন, ''লকডাউন-এর সময় হাজার হাজার কিলোমিটার হাঁটতে দেখেছি পরিযায়ী শ্রমিকদের। কত অসহায় মা কোলে শিশু নিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরেছে। রোদ, ঝড়, জল সব কিছু উপেক্ষা করেছে। তখন থেকেই এমন একটা থিমের কথা মাথায় এসেছিল।'' শিল্পী রিন্টু দাসের ভাবনায় ৩২ তম বর্ষে বেহালার বড়িশা ক্লাবের পরিযায়ী মা ইতিমধ্যেই নেটিজেনদের কলমে সুপারহিট। কোলের সন্তানটি কার্তিক। গণেশ বসে অসুরের উপর। অর্থাৎ অসুর বিনাশ করলে আবার ব্যবসায়ীরা সিদ্ধিলাভের মুখ দেখবেন। আবার কাজ পাবেন পরিযায়ী মা।