Firhad Hakim: করোনা সংক্রমণকে নবান্ন মেড বলে কটাক্ষ শুভেন্দুর; এরা দিল্লি যাতায়াত করে এসব আনছে, পাল্টা দিলেন ফিরহাদ
রবিবার সকালে বেড়াতে বেরিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, রাজ্যে করোনা অনেকগুণ বেড়ে গিয়েছে। সব জায়গাতেই বাড়ছে। কেন ছড়াচ্ছে, কীভাবে আটকানো যাবে তা কেউ ঠিকভাবে বলতে পারছেন না
নিজস্ব প্রতিবেদন: গত কয়েক দিনে রাজ্যে লাফিয়ে বেড়েছে করোনা সংক্রমণ। শনিবার রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪,৫১২ জন। এনিয়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল। রাজ্য সরকারও আগামী ৩ জানুয়ারি বৈঠক করে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে। এনিয়ে মুখ খুললেন শুভেন্দু অধিকারী থেকে দিলীপ ঘোষ। পাল্টা দিলেন ফিরহাদ হাকিম, সৌগত রায়।
করোনা সংক্রমণের সাম্প্রতিক ঢেউকে নবান্ন মেড করোনা বলে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ক্রিসমাস, নববর্ষ ও তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের ভিড়ের কথা উল্লেখ করে টুইটে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু। জনস্বাস্থ্যে অব্যবস্থায় এগিয়ে বাংলা বলেও কটাক্ষ করেছেন শিশিরপুত্র। লাহুল স্পিতি, কলকাতা, মুম্বই, আহমেদাবাদ ও চেন্নাইয়ে করোনা সংক্রমণের হার উল্লেখ করে রাজ্যকে বিঁধেছেন শুভেন্দু।
শুভেন্দু অধিকারীর দিকে পাল্টা তোপ দেগেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। 'অর্ধশিক্ষিতের মতো কথা বলছেন শুভেন্দু। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে কি করোনা হচ্ছে না! সারা ভারতবর্ষে করোনা হচ্ছে। যে ঢেউটা এসেছে তাতে সারা পৃথিবীতে করোনা হচ্ছে। সারা বছর সব বন্ধ করে রাখলে মানুষ বাঁচবে কী করে? কোভিডে মৃত্যুর হার খুব কম। সব বন্ধ করে দিলে মানুষ তো না খেয়ে মারা যাবে। যারা দিন আনে দিন খায় তাদের কী হবে? তাদের কী ব্যবস্থা হবে তা ভেবে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এদের তো তা নেই। ', শুভেন্দুকে এভাবেই পাল্টা কটাক্ষ করলেন ফিরহাদ।
করোনা নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন নিয়ে দিলীপ ঘোষের পরামর্শ নিয়েও সরব হন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, কেন্দ্র সরকারের এনিয়ে একটি কমিটি রয়েছে। তারা পরামর্শ দিচ্ছে। এরপরও স্বাস্থ্যভবনে বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন। তারাও পরামর্শ দিচ্ছেন। দিলীপ ঘোষ বা শুভেন্দু এমন মনে করছেন শুধু পশ্চিমবঙ্গে করোনা হচ্ছে। শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, গোটা দেশে এটা হচ্ছে। বরং ভারতের অন্য জায়গা থেকে পশ্চিমবঙ্গে এসেছে। এই শুভেন্দুরা এতবেশি দিল্লি যাতায়াত করে যে এরাই নিয়ে আসছে এসব।
রবিবার সকালে বেড়াতে বেরিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, রাজ্যে করোনা অনেকগুণ বেড়ে গিয়েছে। সব জায়গাতেই বাড়ছে। কেন ছড়াচ্ছে, কীভাবে আটকানো যাবে তা কেউ ঠিকভাবে বলতে পারছেন না। তাই সাবধানাতা অবলম্বন করতে হবে। ভিড়কে আটকানো বা হ্য়ান্ডেল করার বিষয়টা সবসময় হাতে থাকে না। কিন্তু অত্যাধিক ভিড় যাতে না হয় তার জন্য় আগে থেকেই আগে থেকেই বিধিনিষেধ লাগু করা উচিত। চারদিকে উত্সব চলছে, ভোটের প্রস্তুতিও চলছে। আমার মনে হয় সরকারের এবার বিবেচনা করা উচিত। একটি বিশেষজ্ঞ টিম তৈরি করে তাদের পরামর্শমতো ঠিক সময় ব্যবস্থা না নিয়ে এটা মহামারির আকার নেবে, বিদেশে যেমনটা হয়েছে।
আরও পড়ুন-করোনার মাঝেই 'ফ্লোরোনা' হানা, কী এই রোগ? কেন হয়?
দিলীপ ঘোষের পরামর্শ নিয়ে তাঁকে পাল্টা দিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের। তিনি বলেন, ওঁর পরামর্শ দরকার নেই। উনি একটা হেরে যাওয়া দলের অপসারিত সভাপতি। পরামর্শ দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের একটি বিশেষজ্ঞ টিম রয়েছে। তারা মুখ্যমন্ত্রীকে পরামর্শ দেন। আগামিকালই হয়তো তারা বৈঠকে বসবেন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলবেন। এনিয়ে দিলীপ ঘোষকে ভাবতে হবে না। ভোট হবে কিনা তা ঠিক করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
ত্রিপুরায় তৃণমূলের যাওয়া নিয়েও বিজেপিকে বিঁধেছেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ওরা তো ফেল করেছে। অমিত শাহজি আমার এখানে যে জায়গায় এসে খেয়ে গিয়েছেন সেখানে একটা ভোটও পায়নি। ওসব করে লাভ নেই। যেখানে বিজেপির অত্য়াচার হবে সেখানেই আমরা যাব। ভোটের থেকে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা ত্রিপুরা যাচ্ছে। যেখানে বিজেপি হানাদার রয়েছে, মানুষের নিরাপত্তা নেই সেখানেই আমরা আছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে সিপিএমের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন সেভাবেই বিজেপিকে ঠেকাবে তৃণমূল।