Kamduni: 'কামদুনির রায়ের পরে মহিলাদের উপর নির্যাতন আরও বাড়বে'!
'সম্পূর্ণভাবে মমতার পুলিস দায়ী। পুলিস আর প্রশাসনকে ব্যবহার করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটাই করে যাচ্ছে'। বললেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কামদুনিকাণ্ডে 'লঘু দণ্ড'। নিম্ন আদালতে যার ফাঁসি সাজা হয়েছিল, তাকে বেকসুর খালাস করে দিল হাইকোর্ট! ফাঁসির বদলে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হল বাকি দু'জনকে। রেহাই পেয়ে গেলেন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। 'আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব', জানালেন নির্যাতিতার পক্ষে আইনজীবী শীর্ষেন্দু সিংহরায়।
১০ বছর পার। কামদুনিকাণ্ডে অবশেষে রায় ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্টের জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু সেই রায়ে চরম হতাশ নির্যাতিতার বাবা-দাদা ও দুই বান্ধবী টুম্পা কয়াল ও মৌসুমী কয়াল। আদালতে চত্বরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। সকলেই মনে করছেন, গুরু পাপে 'লঘু দণ্ড' দিল হাইকোর্ট।
কামদুনিকাণ্ডে প্রথম থেকে নির্যাতিতা হয়ে মামলা লড়ছেন আইনজীবী শীর্ষেন্দু সিংহরায়। তিনি বলেন, 'যে নৃশংস গণধর্ষণ হয়েছিল, শুধু কামদুনিবাসী নয়, ভারতবাসী, বাংলাবাসী দেখেছে। ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৩ জনের যাবজ্জীবন ছিল। ৩ জনের ফাঁসির মধ্যে ২ জনকে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে। এবং চারজনকে ৭ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। যেহেতু ১০ বছর হয়ে দিয়েছে, সাজা মকুব হয়ে তারা ছাড়া পেয়ে গেলেন'।
নির্যাতিতার পক্ষের আইনজীবীর আরও বক্তব্য, 'ধর্ষণ মানবিকতার ও মহিলার সার্বভৌমত্বের উপর হেনস্থা। কাউকে কোনওভাবে ছাড়া উচিত নয়। আমাদের দাবি ছিল, তিনজনের ফাঁসি ও ৩ জনের যাবজ্জীবনই যেন থাকে। হতাশ আইনের উপর হয়নি। কিন্তু হতাশ নিজেদের উপর লাগছে'। তাঁর আক্ষেপ, 'দুর্নীতি হওয়ার জন্য, দুর্নীতি আরও যাতে বাড়ে, তারজন্য রাজ্য সরকার অনেক বড় বড় আইনজীবী দাঁড় করান। কিন্তু এখানে ১৪ জনকে পরপর পাল্টানোর পর, ২ জন দাঁড়িয়েছিল'।
এদিকে হাইকোর্টে রায়ে 'সন্তুষ্ট' সাজাপ্রাপ্তদের আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। তিনি বলেন, 'আমাদের কাজ ছিল আদালতে সওয়াল করা। আমি ২০১৩ সাল থেকে এই মামলাটা করছি। এই মামলাতে কিছু ছিল না, সইফুল আলিকে সাজার, যে প্রমাণ দেওয়া হয়েছে। আদালত গণধর্ষণের জন্য দু'জনকে সাজা দিয়েছে। আমৃত্যু ওরা জেলে থাকবে। আর তিনজনকে খালাস করেছে। ২ জনের প্রমাণ লোপাটের জন্য় ৭ বছর কারাদণ্ড দিয়েছিল। কিন্তু, যেহেতু ১০ বছর আছে, জরিমানাটা দিলে জেল থেকে ছাড়া পাবে'।
কী প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক মহলে? বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পলের মতে, 'আবার করে প্রমাণ হল, পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের, নারীদের অবস্থা কী!এই রায়ের পরে মহিলাদের নির্যাতন আরও বাড়বে। শাস্তি যদি না হয়, দুষ্কৃতীরা যদি অত্যাচার করে, কামদুনির মতো ঘটনা ঘটিয়ে, তাঁদের যদি শাস্তি না হয়, তাহলে দুষ্কৃতীরা আরও পার পেয়ে যাবে। সম্পূর্ণভাবে মমতার পুলিস দায়ী। পুলিস আর প্রশাসনকে ব্যবহার করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটাই করে যাচ্ছে'।
আরও পড়ুন: Kamduni Case: অপ্রত্যাশিত! ১০ বছর অপেক্ষার পর কামদুনিকাণ্ডে 'লঘু দণ্ড'...
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'এটা সম্পূর্ণই আদালতের বিষয়। বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ফাঁসি যে রায় থাকে, সেটা অনেক ক্ষেত্রে যাবজ্জীবনে হয়ে যায়। আবার এত বছর হয়ে গেলে, যাবজ্জীবনের মেয়াদের সঙ্গে অ্যাডজাস্ট হয়। এটা ভয়ংকর অপরাধ, আদালত নিশ্চয়ই সেই মতোই বিচার করেছেন। আদালতের রায়ে কোনও মন্তব্য করা যায় না। পুলিস পুরোদস্তুর তদন্ত করেছে। সেই অনুযায়ী শাস্তি হয়েছে,বাকিটা হাইকোর্টের বিষয়।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)