সারদাকাণ্ডে অষ্টম চার্জশিট দিতে পারে সিবিআই, থাকতে পারে সাংসদ-বিধায়কদের নাম
সিবিআই-কে দেবযানী জানিয়েছেন, প্রতি মাসে সল্টলেকের ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় ১০ হাজার টাকা করে দিতে হত। বেহালা ও বিষ্ণুপুর থানাকে প্রতি মাসে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা করে দিতে হত। অন্যান্য পুলিসকর্তাদের মাসে আরও প্রায় ৮ লাখ টাকা করে দেওয়া হত।
নিজস্ব প্রতিবেদন : সারদা মামলায় অষ্টম চার্জশিট পেশ করতে পারে সিবিআই। সিবিআই সূত্রে সামনে আসছে এমনই সম্ভাবনার কথা। দীর্ঘ ৭ মাস অপেক্ষার পর আজ সারদাকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে দেওয়া বয়ানে সামনে এসেছে দেবযানীর চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি। সিবিআই-কে দেওয়া বয়ানে দেবযানী দাবি করেছেন, 'সারদার সব নথি ট্রাঙ্কে ভরে আমি রাজীব কুমারকে দিয়েছিলাম'। আর এই স্বীকারোক্তিকেই রাজীবের বিরুদ্ধে মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে হাতিয়ার করতে চাইছে সিবিআই। পাশাপাশি, সিবিআই সূত্রে সামনে এসেছে আরও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সিবিআই-কে দেবযানী জানিয়েছেন, প্রতি মাসে সল্টলেকের ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় ১০ হাজার টাকা করে দিতে হত। বেহালা ও বিষ্ণুপুর থানার ক্ষেত্রে টাকার অঙ্কটা আকাশছোঁয়া। প্রতি মাসে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা করে এই দুটি থানায় দিতে হত। এরপর অন্যান্য পুলিসকর্তাদের মাসে আরও প্রায় ৮ লাখ টাকা করে দেওয়া হত। এখন সিবিআই-এর কাছে দেবযানীর সাফ স্বীকারোক্তি, এই সমস্ত খরচাপাতির হিসেবনিকেশ লেখা হত সারদার রোজকার খরচের খাতায়। উল্লেখ্য, এই রোজকার খরচের খাতাটি-ই হচ্ছে সারদার উধাও হয়ে যাওয়া সেই রহস্যজনক 'লাল ডায়েরি'। দেবযানী বলেছেন, "সেই খাতাটি বিধাননগর পুলিস বাজেয়াপ্ত করেছিল।" কিন্তু সিবিআই সেই খাতা অর্থাৎ 'লাল ডায়েরি' হাতে পায়নি।
এর পাশাপাশি, দেবযানী তাঁর স্বীকারোক্তিতে আরও বলেছেন, "আমি ২৩ দিন ধরে সারদার জমি ও মিডিয়া সংক্রান্ত সব তথ্য শর্টলিস্ট করে রাজীব কুমারকে দিয়েছিলাম। আমার বাছাই করে দেওয়া নথিপত্র দুটি আলাদা ট্রাঙ্কে ভরে পুলিস। একটি ট্রাঙ্কে মিডিয়া সংক্রান্ত নথি ছিল। আরেকটি ট্রাঙ্কে ছিল জমি সংক্রান্ত নথি। আমি আলাদা করে নথি সংক্রান্ত তথ্যের সূচি বানিয়ে দিয়েছিলাম ল্যাপটপে। আর সারদার গাড়ি সংক্রান্ত তথ্য পেন ড্রাইভে করে আমি দিয়েছিলাম।" কিন্তু বিধাননগর পুলিস বাজেয়াপ্ত জিনিসের তালিকায় কোনও পেনড্রাইভের কথা উল্লেখ-ই করেনি।
আরও পড়ুন, সিবিআই-কে বিভ্রান্ত করতে উন্নততর ভিওআইপি ও বাউন্স প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন রাজীব!
এই সব বিষয়গুলি উল্লেখ করেই এবার সারদা মামলায় অষ্টম চার্জশিট পেশ করতে পারে সিবিআই। এটাই হতে পারে চূড়ান্ত চার্জশিট। সেই চার্জশিটে রাজ্যের বেশ কয়েকজন সাংসদ ও বিধায়কের নাম থাকতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। এর পাশাপাশি আরও জানা যাচ্ছে, রাজীবের খোঁজে স্ত্রী সঞ্চিতা কুমারের পাশাপাশি অন্যান্য সহযোগীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে সিবিআই। সেই তালিকায় রয়েছে রাজীব কুমারের ড্রাইভার, পিওনের নামও। সূত্রের খবর, খোঁজ পাওয়া মাত্রই রাজীবকে গ্রেফতার করবেন সিবিআই গোয়েন্দারা। আধাসেনার নিরাপত্তায় তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই হেফাজতেই রাখা হবে।