JU Student death: স্বপ্নদীপের মৃত্যুর তদন্তে লালবাজারে তলব ডিন অব স্টুডেন্টস ও রেজিস্ট্রারকে
JU Student death: লালবাজার সূত্রে খবর, স্বপ্নদীপের মৃত্যুর তদন্ত করতে গিয়ে বেশকিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। তদন্তে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও এসেছে। সেখানেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও হোস্টেল আধিকারীরে ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে।
বিক্রম দাস ও অয়ন ঘোষাল: যাদবপুরে প্রথম বর্ষের পড়ুয়া স্বপ্নদীপ কুন্ডুর মৃত্যুর তদন্তে এবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অব স্টুডেন্টস ও রেজিস্ট্রারকে তলব করল লালবাজার। গতকালই জানা গিয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদাধিকারীকদের সঙ্গে কথা বলতে চায় লালবাজার। জানা যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও ডিন অব স্টুডেন্টসকে আজ দুপুর ৩টেয় ডেকে পাঠিয়েছে লালবাজার। নোটিস পাঠিয়ে তাদের জয়েন্ট সিপি ক্রাইম-এর সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন-কলকাতা-সহ দক্ষিণের সব জেলাতেই বাড়বে বৃষ্টি, ভারী বর্ষণ কোন কোন জেলায়?
লালবাজার সূত্রে খবর, স্বপ্নদীপের মৃত্যুর তদন্ত করতে গিয়ে বেশকিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। তদন্তে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও এসেছে। সেখানেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও হোস্টেল আধিকারীরে ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। সেইসব প্রশ্নের উত্তর পেতে চায় পুলিস। হস্টেলে অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও আদৌ কি কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল? অনিয়মের অভিযোগ যদি ওঠে তাহলে তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল? কেন দিনের পর দিন সিসিটিভি বন্ধ ছিল, কেন হস্টেলে রেজিস্টার মেনটেইন করা হতো না? সেইসব প্রশ্নের উত্তর পেতে চায় পুলিস। এর আগেও একবার এনিয়ে তাদের জিজ্ঞাসবাদ করা হয়। কিন্তু তা যথেষ্ঠ ছিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, স্বপ্নদীপের মৃত্যুর তদন্তে প্রাক্তন ও বর্তমান মিলিয়ে আরও ৬ পড়য়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। যে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের সঙ্গে স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনায় বড় ভূমিকা ছিল ওই ৬ জনের। এমনটাই পুলিস সূত্রে খবর। জানা যাচ্ছে গতকাল রাতে ওই ৬ জনকে টানা জেরা করে পুলিস। তাতেই তাদের বয়ানে বিপুল অসংগতি ধরা পড়ে। তার পরেই তাদের গ্রেফতার করে পুলিস। পুলিসের বক্তব্য স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনার দিন ও তার পরে ওই ৬ জনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। ওই ৬ জনের মধ্যে ৩ জন প্রাক্তনী ও ৩ জন বর্তমান পড়ুয়া। এদের মধ্যে রয়েছে মহম্মদ আসিফ, মহম্মদ আরিফ, অঙ্কন সরকার, অসিত সর্দার। ঘটনা ঘটার কিছুক্ষণ আগেও এই আরিফ ও সৌরভের ফোন থেকে বাড়িতে ফোন করেছিল স্বপ্নদীপ। বাকী ৫ জন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। আজ এদের আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে চাইবে পুলিস। এদের জেরা করে জানার চেষ্টা হবে আর কারা সেই রাতে ঘটনাস্থলে ছিল।
স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনায় এখনওপর্যন্ত মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করল পুলিস। ঘটনার পরপরই গ্রেফতার করা হয় প্রাক্তন ছাত্র সৌরভ, দীপশেখর ও মনোতোষকে। তাদের টানা জিজ্ঞাসাবাদ করেই ওই ৬ জনের নাম উঠে আসে। তার পর বিভিন্ন জায়গায় তাল্লাশি চালিয়ে ওই ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিস। এদের মধ্যে ৩ জন প্রাক্তনী ও ৩ জন বর্তমান পড়ুয়া। এরা হল মহম্মদ আসিফ আফজল আনসারি ইঞ্জিনিয়ারিয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র, মহম্মদ আরিফ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র, অঙ্কন সরকার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র, অসিত সর্দার তৃতীয় বর্ষের পাস আউট। বাকীর হল সপ্তক কামিল্যা ও সুমন নস্কর। সপ্তক, সুমন এবং অসিত প্রাক্তনী। এরা বাকি আবাসিকদের টিউটোরিয়াল করেছিল। অর্থাৎ সবাই পুলিসকে কী বয়ান দেবে তা নির্দিষ্ট করতে কয়েক দফা ব্রেন ওয়াশ করেছিল। ২২ জন আবাসিক পুলিসের কাছে স্বীকার করেছে, এই ৩ প্রাক্তনী তাদের একই কথা শিখিয়েছিল। সৌরভের গ্রেফতারির খবর পেতেই এরা গা ঢাকা দেয়। রীতিমত তল্লাশি অভিযান চালিয়ে এই ৬ জনকে গ্রেফতার করে লালবাজার ও যাদবপুর থানার যৌথ টিম। অসিত সর্দারকে কুলতলি থেকে, সুমন নস্কর মাধবপুর (মন্দিরবাজার) থেকে ও সপ্তক কামিল্যাকে এগরা থেকে গ্রেফতার করা হয়।