#ArrestFakeCBI: ভাড়া করা ক্যাবে নীল বাতি, সরকারি বোর্ড, কীভাবে জানালেন ক্যাবচালক
চালকের দাবি তাঁকেও চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রতারক।
পিয়ালি মিত্র: রেন্টাল ভিত্তিতে ক্যাব ভাড়া করেছিলেন ভুয়ো সিবিআই কর্তা শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় । হাতিবাগান থেকে কিনেছিলেন নীল বাতি। সেখান থেকে বানিয়েছিলেন গভঃ অব ইন্ডিয়া লেখা ভুয়ো বোর্ড। সেই ক্যাবে লাগিয়েছিলেন ওই নীল বাতি ও বোর্ড। সেই ক্যাবেই নীল বাতি লাগিয়ে ঘুরতেন শুভদীপ, এমনটাই দাবি, ক্যাব চালক রমেশ গায়োত্রের। জি ২৪ ঘন্টাকে তিনি জানান, গত বছর কয়েক ঘণ্টার জন্য তাঁর ক্যাব বুক করেন শুভদীপ। ধর্মতলা পর্যন্ত যান। গাড়িতে গল্প জমিয়ে চালকের কাছে শুভদীপ দাবি করেন, তিনি পোস্টাল ভিজিল্যান্সের বড় কর্তা। এই গাড়িতে নানা দিকে ঘুরে পরদিন আবার চালককে আসতে বলেন প্রতারক শুভদীপ। এরপর থেকে রোজই এইভআবে রেন্টালে গাড়ি ভাড়া নিয়ে কখনও সল্টলেক, কখনো জিপিও এসব দিকে ঘুরে বেড়াতেন শুভদীপ। চালক রমেশের দাবি, হঠাৎ একদিন হাতিবাগানে গাড়ি নিয়ে গিয়ে নীল বাতি কিনে আনেন। নিজেই গাড়িতে লাগিয়ে দেন সেসব। চালকের আরও দাবি, নীল বাতির বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করলে শুভদীপ জানান, তিনি কেন্দ্রীয় সরকারি দফতরে বড় কর্তা। তাঁর অনুমতি রয়েছে। সেই নীল বাতির গাড়ি চালিয়ে এক আত্মীয়ের বিয়েতেও গিয়ছিলেন শুভদীপ। চালকের দাবি তাঁকেও চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রতারক।
আরও পড়ুন: #ArrestFakeCBI: Zee ২৪ ঘণ্টার খবরের জের, গভীর রাতে দিল্লি থেকে গ্রেফতার শুভদীপ ব্যানার্জি
জি-২৪ ঘন্টার খবরের জেরে রবিবার গভীর রাতে দিল্লি থেকে গ্রেফতার হয়েছেন শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ট্রানজিট রিমান্ডে তাঁকে হাওড়া নিয়ে এসে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে পুলিশ। সিবিআই-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সরকারি দফতরের নথি, স্ট্যাম্প ব্যবহার করে চাকরির নামে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে ওই যুবকের বিরুদ্ধে। শুভদীপ দাবি করেছিলেন, বিহারের বাসিন্দা লালনের কথাতেই নাকি তিনি ভুয়ো কাজ করতেন। অথচ ‘জি-২৪ ঘন্টা’কে লালন জানান, তাঁর কাছ থেকে টাকা নিয়ে সিবিআই কনস্টেবল পদে তাঁকে চাকরি পাইয়ে দেন। সেই সঙ্গে উঠে আসে চাকরির নামে প্রতারণা সংক্রান্ত বিস্ফোরক তথ্যও। সিবিআইতে চাকরির নামে বিভিন্ন চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে পুলিশ ভেরিফেকশন বাবদ নিত নেওয়া হত টাকা। লালনের দাবি, শুভদীপ আইবি ভেরিফেকশন (IB Verification) করার জন্য তাঁকে তিনজনের কাছে পাঠিয়েছিলেন। সিবিআইয়ের ভুয়ো ইমেল আইডি থেকে মেল করে কার কার ভেরিফিকেশন করতে হবে, সেই কাজ তাঁকে নিযুক্ত করেছিলেন শুভদীপ ( Subhodip Banerjee)।
ভেরিফিকেশনের বাবদ দু’জনের থেকে সত্তর হাজার টাকা করে এবং একজনের থেকে শুভদীপকে তিরিশ হাজার টাকা নগদ এনে দেন লালন। বিহারের বাসিন্দা লালনের তিন বন্ধুকে সিবিআইতে চাকরি দেওয়ার নামেও এক একজনের থেকে প্রায় দেড় লক্ষ করে টাকা নেন। এখানেই শেষ নেই। ভুয়ো চাকরিতে ছিল আবার ভুয়ো সাসপেনশনও। দেওয়া হত ভুয়ো নথি। চাকরীপ্রার্থীরা যখন বেতন দাবি করতেন, তখন তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে বসিয়ে দিতেন প্রতারক শুভদীপ।
প্রতারিত হয়েছে বুঝতে পেরে, পরে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন অনেকেই। তখন টাকা ফেরত দিয়ে তাঁদের মুখ বন্ধ করে দেয় তাঁর পরিবার। শুভদীপের পাশাপাশি, লালন কুমার, ক্যাব চালক রমেশের ভূমিকাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সেই সঙ্গে কোথা থেকে শুভদীপ জাল নথি, স্ট্যাম্প বানাতেন, কে সাহায্য করত, সে সব জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।