জিডি বিড়লা স্কুলের ঘটনা কি ধর্ষণ? দোষ প্রমাণ হলে আজীবন কারাবাস!
যৌনাঙ্গে বা নারীর শরীরের যে কোনও অংশে কেবল লিঙ্গ নয়, কোনও কিছু অনিচ্ছাকৃত ভাবে প্রবেশ করালেই তা ধর্ষণ। ঘর্ষণের সময় সেখানে ধর্ষক ছাড়া অন্য কেউ উপস্থিত থাকলেই তা গণধর্ষণ। নাবালিকার ক্ষেত্রে তার সম্মতিতে যৌনাঙ্গ বা শরীরের অন্য কোনও অংশে যৌন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোনও কিছু প্রবেশ করানোও ধর্ষণ।

নিজস্ব প্রতিবেদন: সত্য হল নির্যাতিতার বাবার দাবিই। ডাক্তারি পরীক্ষাতেই প্রমাণিত হল, জিডি বিড়লা স্কুলের নির্যাতিতা শিশুর যৌনাঙ্গে ঢোকানো হয়েছে আঙুল। এসএসকেএম সূত্রের খবর, শিশুর যৌনাঙ্গে আঙুল ঢোকানোয় ক্ষত হয়েছে। এমনকি ক্ষত স্থান থেকে অনবরত রক্ত বেরোচ্ছে বলেও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে, তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে শুধু অভিষেক রায় নন, জিডি বিড়লা স্কুলে প্রাক-প্রাথমিকের ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহের ঘটনায় যুক্ত রয়েছেন আরও এক শিক্ষক।
৪ বছরের ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, চকোলেটের লোভ দেখিয়ে শিশুকে শৌচাগারে নিয়ে যায় ওই দুই শিক্ষক। তারপর স্কুলের পর্ন দেখিয়ে প্রথমে খোলা হয় শিশুর লেগিন্স। তারপর খোলা হয় অন্তর্বাস। শারীরিশিক্ষার শিক্ষক অভিষেক রায় প্রথমে নির্যাতিতার শরীরের নিন্মাংশে হাত দেয় এবং পরে যৌনাঙ্গে আঙুল ঢোকায়। শিশুর বয়ান অনুযায়ী সেই সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন আরও এক শিক্ষক!
আরও পড়ুন- জিডি বিড়লা স্কুলে ৪ বছরের ছাত্রীকে 'যৌন নির্যাতন', অভিযুক্ত পিটি টিচার
বৃহস্পতিবার রাতের এই ঘটনা সংবাদমাধ্যমের নজরে আসতেই অভিযুক্তকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে যাদবপুর থানার পুলিস। গোটা বিষয়ে আইনি পদক্ষেপও করছে নির্যাতিতার পরিবার।
এই ঘটনার আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে দ্বিমত রয়েছে আইনজ্ঞ মহলে। জিডি বিড়লা স্কুলের এই ঘটনাকে কি গণধর্ষণের মামলা দায়ের হবে? না কি বিচার হবে যৌন হেনস্থা হিসাবেই? আইনজ্ঞ মহল বলছে, ভারতীয় দণ্ডবিধিতে ধর্যণের নতুন সংজ্ঞা অনুসারে এই ঘটনা গণধর্ষণই। ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় ধর্ষণের নয়া সংজ্ঞায় পরিষ্কার লেখা রয়েছে, যৌনাঙ্গে বা নারীর শরীরের যে কোনও অংশে কেবল লিঙ্গ নয়, কোনও কিছু অনিচ্ছাকৃত ভাবে প্রবেশ করালেই তা ধর্ষণ। ঘর্ষণের সময় সেখানে ধর্ষক ছাড়া অন্য কেউ উপস্থিত থাকলেই তা গণধর্ষণ। নাবালিকার ক্ষেত্রে তার সম্মতিতে যৌনাঙ্গ বা শরীরের অন্য কোনও অংশে যৌন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোনও কিছু প্রবেশ করানোও ধর্ষণ।
আরও পড়ুন- যৌনাঙ্গে আঙুল ঢুকিয়ে নির্যাতন, দেখানো হয় পর্ন, জানাল জিডি বিড়লার নির্যাতিতা শিশু
উল্লেখ্য, দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ডের পর ধর্ষণের সংজ্ঞায় বদল এনে বিল পাশ করে ইউপিএ ২ সরকার। নতুন আইন অনুসারে অভিযুক্তের দোষ প্রমাণিত হলে সাজা হতে পারে ন্যূনতম ২০ বছর। এমনকি আজীবন কারাদণ্ডের রায়ও দিতে পারে আদালত।
জিডি বিড়লা স্কুলের ঘটনা ধর্ষণ তো বটেই গধর্ষণের মামলাও হতে পারে বলে মত আইনজীবীদের একাংশের। যেহেতু নির্যাতিতা তদন্তকারীদের দু'জনের উপস্থিতির কথা জানিয়েছে, সেক্ষেত্রে গণধর্ষণের মামলাও দায়ের হতে পারে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। একই সঙ্গে এই ঘটনায় শিশুর ওপর যৌন নির্যাতনের প্রতিরোধ আইন বা পকসো প্রয়োগ করা হতে পারে। দোষ প্রমাণিত হলে এই ক্ষেত্রেও হতে পারে আজীবন কারাদণ্ডের সাজা।
আরও পড়ুন- পিটি শিক্ষকের 'দুষ্টুমি'! পড়ুয়াদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার আশ্বাস প্রিন্সিপালের