আন্দোলন প্রত্যাহার করল যাদবপুর, আগামীকাল রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক
![আন্দোলন প্রত্যাহার করল যাদবপুর, আগামীকাল রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক আন্দোলন প্রত্যাহার করল যাদবপুর, আগামীকাল রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2016/01/10/47734-10ju.jpg)
যাদবপুরে অবস্থান তুলে নিল ছাত্র ছাত্রীরা। আগামীকাল বৈঠক হবে রাজ্যপালের সঙ্গে। আলোচনা না হলে ফের অবস্থান করবে ছাত্ররা, এমনটাই বক্তব্য আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের। আন্দোলন টুলে নেওয়ায় অভিনন্দন জানালেন উপাচার্য্যের। আলাপ-আলোচনা করে যেকোনও সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিলেন সুরঞ্জন দাস।
নির্বাচনের দাবিতে ঘেরাও? নাকি ঘেরাওটাই লক্ষ্য, ভোটের দাবিটা নেহাতই উপলক্ষ্য মাত্র? যাদবপুরে ছাত্র আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে উঠছে এরকমই নানা প্রশ্ন। বারবার এই ধরনের পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করছে বলেই মনে করছেন সাধারণ মানুষ থেকে শিক্ষাবিদরা।
যাদবপুরে আবার কলরব। আগের কলরবে নাগরিক সমাজের একটা বড় অংশের সমর্থন ছিল। সরতে হয়েছিল উপাচার্যকে। কিন্তু, এবারের আন্দোলন কতটা যুক্তিযুক্ত? শুরু থেকেই উঠছে প্রশ্ন।
ছাত্রছাত্রীদের দাবি, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে নির্দিষ্ট সময়ে ছাত্র সংসদের ভোট হোক। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতিও তাঁদের সঙ্গে একমত। কিন্তু, রাজ্য সরকার জানিয়েছে, নভেম্বরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পরীক্ষার মরসুমে রাজ্যের কোনও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন করা যাবে না। নিয়মের ব্যতিক্রম হবে না যাদবপুরেও। এই পরিস্থিতিতে আচার্য রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়।
ছাত্রছাত্রীদের মতোই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতিও নির্দিষ্ট সময়ে ছাত্র ভোট চায়। এরপরও উপাচার্য, রেজিস্ট্রার সহ কর্মসমিতির সদস্যদের ঘেরাও কেন?
কবে কার সঙ্গে কীভাবে দেখা করবেন সেটা একেবারেই আচার্য-রাজ্যপালের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। সেই তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়
কর্তৃপক্ষকে এখনই বলে দিতে হবে, ছাত্রছাত্রীদের এই দাবির পিছনে যুক্তি কোথায়?
বারবার ছাত্রছাত্রীদের ঘেরাও আন্দোলনে কি যাদবপুরের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট হচ্ছে না? যাদবপুরের আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা ঠিক কী চান সেটা তারা নিজেরাও জানেন কী? কারণ, বারবার তাঁদের অবস্থান বদলে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। শুক্রবার সন্ধে পর্যন্ত যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীদের দাবি ছিল রাজ্যপালের সঙ্গে কথা না বলে এদিনই ছাত্রভোটের দিন ঘোষণা করতে হবে। শনিবার রাতে সেই অবস্থান থেকে সরে এসে ছাত্রছাত্রীরা জানান, তাঁরা আলোচনায় রাজি। কবে রাজ্যপাল তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেই জানাতে হবে।
রবিবার আবার ছাত্রছাত্রীদের দাবি, রাজ্যপালের সঙ্গে যখন কর্মসমিতি দেখা করবে তখন তাঁদের প্রতিনিধিদেরও সেখানে থাকতে দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও যে এটাই চাইছে তা নিয়ে দিতে হবে লিখিত প্রতিশ্রুতি।
ফলে প্রশ্ন উঠছে, দাবিদাওয়ার অজুহাতে উপাচার্য-রেজিস্ট্রারকে ঘেরাও করে শক্তি দেখানোই কি যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীদের লক্ষ্য? হোক কলরব সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশের সমর্থন পেয়েছিল। সেই সাফল্যকেই কি এবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করতে চাইছেন ছাত্রছাত্রীরা?অনেক শিক্ষাবিদই বলছেন, এই কৌশল ব্যুমেরাং হতে পারে। বরং ছাত্রছাত্রীদের এবারের আন্দোলন সাধারণ মানুষের মনে খাটো করে দিতে পারে হোক কলরবের উচ্চতা। আগের কলরবে ছাত্রছাত্রীদের পাশে ছিল যাদবপুরের অধ্যাপক সংগঠন জুটা। নির্দিষ্ট সময়ে ভোট চাইলেও এবার কিন্তু আন্দোলনের পাশে তারা নেই।