Kolkata Couple Suicide Exclusive: শুধু উইল-ইমেল নয়, কবরের জায়গা-কফিন বাক্স কিনে আত্মঘাতী বাঁশদ্রোণীর যুগল!
"জায়গার দাম ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা তো হবেই। পাশাপাশি দুটো প্লট কেনা আছে। দুটো বেদি করার মতো"
রণয় তেওয়ারি: পরিকল্পনা করে আত্মহত্যা! মৃত্যুর আগে শুধু বন্ধুদের হাতে দেহ তুলে দেওয়ার জন্য উইল (Will) নয়। মৃত্যুর পর কোথায় কোন জায়গায় তাঁদের কবর দেওয়া হবে, সেটাও উইলে লিখেছেন ঋষিকেশ ও রিয়া। কিনে রেখেছিলেন মৃত্যুর পরে কবর দেওয়ার জায়গাও (Cremation Plot)। যুগলের এহেন কান্ডে হতবাক আত্মীয়, বন্ধু থেকে পুলিসও। বাঁশদ্রোণীতে (Banshdroni) যুগল আত্মঘাতী (Kolkata Couple Suicide) হওয়ার ঘটনায় পরতে পরতে যেন শুধুই নাটকীয় মোড়।
২০২২-এর ৩১ মার্চ। উইল করেন ঋষিকেশ ও রিয়া। ZEE ২৪ ঘণ্টার হাতে এসেছে সেই উইল। তাতে স্পষ্ট লেখা, কোথায় তাঁদের কবর দেওয়া হবে। এমনকি এটাও লেখা যে, তাদের কবর দেওয়ার জন্য সেই জায়গাও তাঁরা কিনে রেখেছেন। যুগলের কাণ্ডে হতভম্ব সবাই। কেউ এতটা পরিকল্পনা করে আত্মহত্যা করতে পারে! বিশ্বাসই করতে পারছেন না কেউ। হতবাক পুলিস কর্তারাও।
কী লেখা আছে সেই উইলে?
উইলে লেখা, মল্লিকবাজারে যেখানে ঋষিকেশকে কবর দেওয়া হবে, সেখানে জায়গা আগে থেকেই ঠিক করা আছে। মল্লিকবাজার খ্রিস্টান সিমেট্রির পাট্টা নম্বর ১২৫২৪৭/১৭০ রেফারেন্স নম্বর ১১৩০২/২৪। রিয়ার ক্ষেত্রে ওই একই মল্লিকবাজার সিমেট্রি। রিয়ার পাট্টা নম্বর ১২৫৬৫৯/১৭৪ রেফারেন্স নম্বর ৮৪৮/০৯।
পুলিসের হাতে দুটো উইল এসে পৌঁছেছে। একটা ঋষিকেশের। অপরটা রিয়ার। দুজনে পৃথক উইল করেন। হাইকোর্টের একজন অ্যাডভোকেটকে দিয়ে করানো হয় উইল দুটো। দুজনের উইলেই তাঁদের বন্ধু তাপস দাসের কথা উল্লেখ রয়েছে। সেই তাপস দাস আরও জানান, "জায়গা কবে কিনেছিল সেটা কিছু বলেনি। এমনকি কফিনটাও কিনে রেখেছিল। জায়গার দাম ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা তো হবেই। পাশাপাশি দুটো প্লট কেনা আছে। দুটো বেদি করার মতো। যিনি কফিন বাক্স বানাবেন, তাঁকে পুরো টাকা দেওয়া আছে।প্রায় দিনই ওরা ওই কবরস্থানে যেতেন। ওখানেই ঋষিকেশ পালের দিদির সমাধিও রয়েছে।"
যুগলের এক বন্ধুর কথায়, কবর দেওয়ার জন্য আগে থেকেই যে জায়গা কিনে রাখা হয়েছিল, সেটা বন্ধুরা কেউই জানতেন না। এমনকি কফিন কেনার টাকাও আগে থেকেই দেওয়া ছিল। সেটাও তাঁরা আসার পরই জানতে পারেন। বাঁশদ্রোণীর ঘটনায় সবথেকে বেশি পুলিসকে ভাবাচ্ছে, মৃত্যুর পর যেখানে তাঁদের কবর দেওয়া হবে, সেই জায়গাও দুজনে আগে থেকেই কিনে রেখেছিলেন। এর আগে শহরে কেউ এইভাবে এত পরিকল্পনা করে আত্মহত্যা করেছে বলে মনে করতে পারছেন না খোদ পুলিসকর্তারাও।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে বাঁশদ্রোণীর ব্রহ্মপুরের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় ঋষিকেশ পাল ও রিয়া সরকারের জোড়া দেহ। ঘরে তখন এসি চলছিল। খাটের উপর চাদর চাপা দিয়ে 'শুয়েছিলেন' যুগলে। ঠিক যেন ঘুমাচ্ছে! এরপরই তদন্তে উঠে আসে মৃত্যু আগে যুগলের উইল করে রেখে যাওয়ার কথা। সামনে আসে, সেই উইলে মৃতদেহ বন্ধুদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা। পাশাপাশি, পুলিসকে মেইল এবং বন্ধু ও পরিবারকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করে আত্মহত্যা করতে যাওয়ার কথা জানিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও।