বিচারপতির সামনেই গাড়ি থামিয়ে তোলা তুলতে ব্যস্ত পুলিস!

শ্রাবন্তী সাহা : ট্রাফিক পুলিশ, সিভিক ভলেন্টিয়ারদের সামনেই সরকারি স্টিকার সাঁটা গাড়িতে যাত্রী তোলা হয়। অথচ পুলিশ প্রশাসন সেদিকে নজর দেয় না বলেই দীর্ঘদিনের অভিযোগ সাধারণ মানুষের। সোমবার কার্যত সেই অভিযোগই সত্যি প্রমাণিত হল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাশীষ করগুপ্তের গাড়ির সামনে। এজেসি বোস রোড উড়ালপুলে ওঠার মুখে সরকারি স্টিকার সাঁটা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গাড়িতে যাত্রী তোলা হচ্ছে বেআইনি ভাবে। বিষয়টি নজরে আসে বিচারপতির। গাড়ি থেকে নেমে এসে দেখেন তাঁর সামনে দাঁড়িয়েই চলছে ট্রাফিক পুলিসের বেপরোয়া তোলাবাজি। গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি এজলাসে বসে তলব করেন রাজ্যের আডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তকে।
বিচারপতি দেবাশীষ করগুপ্ত নিউটাউনের বাসভবন থেকে আদালতে আসছিলেন সোমবার। মা উড়ালপুল পার হয়ে তার গাড়ি এজেসি বোস রোড উড়ালপুলে ওঠার মুখে(পার্ক সার্কাসের দিকে) ছিল তীব্র যানজট। কী কারণে যানজট হয়েছে, তা দেখতে বিচারপতি গাড়ি থেকে নামেন। দেখেন, ট্রাফিক পুলিশ ও সিভিক ভলেন্টিয়ারদের সামনেই সরকারি স্টিকার সাঁটা গাড়িতে যাত্রীরা উঠছেন। আর সেই সঙ্গে ট্রাফিক পুলিস ও ভলেন্টিয়াদের হাতে টাকা গুঁজে দিচ্ছেন চালকরা। বিচারপতির গাড়ির চালক নেমে এসে এক পুলিসকর্মীকে ডেকে বলেন, গাড়িতে বিচারপতি রয়েছেন। অভিযোগ তাতেও কর্ণপাত করেনি পুলিস। পাল্টা পরামর্শ দেন, বিরক্ত না করার জন্য। বেশ কিছুক্ষণ পর, একজন ট্রাফিক পুলিশের বিষয়টি নজরে আসে। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি তা সামাল দেন।
আরও পড়ুন- বিজেপির 'ডেঙ্গি' বিক্ষোভ, পুলিসের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে স্বাস্থ্যভবনে ধুন্ধুমার
এরপর আদালতে এসে এজলাসে বসে ক্ষুব্ধ বিচারপতি দেবাশীষ করগুপ্ত তলব করেন রাজ্যের আডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তকে। তিনি স্পষ্ট বলেন, এখনি বিষয়টি আপনি জানান ডিসি ট্রাফিককে। ডিসি ট্রাফিক ব্যবস্থা না নিলে, বিচারপতির নির্দেশ, বিকেল ৪টেয় আদালতে হাজির হতে হবে খোদ ডিসি ট্রাফিককেই।
অভিযোগ, সল্টলেক থেকে রবীন্দ্রসদন পর্যন্ত গোটা রাস্তাতে প্রতিদিনই এভাবে রুট পারমিট ছাড়াই সরকারি, বেসরকারি গাড়ী যাত্রী তোলে। ট্রাফিক পুলিশদের 'তোলা' দিলেই তারা একাজে বাধা দেন না। আর তাই অবাধে চলে বেয়াইনিভাবে রুট ভেঙে যাত্রী পরিবহন।