রোগীর খাবার চুরি করে বিক্রি! তদন্ত কমিটি গঠন করল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ
মাত্র ২০ টাকা দিলেই মিলছে মাংস, ভাত, ডাল, তরকারি। রোগীর পথ্য চুরি করে চলছে দেদার বিক্রি। রবিবার এমন ছবিই ক্যামেরাবন্দি হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজিতে।
নিজস্ব প্রতিবেদন : কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে রোগীর খাবার চুরির ছবি সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসল কর্তৃপক্ষ। টাকা নিয়ে রোগীর খাবার বিক্রির অভিযোগে সোমবার সকালে বরখাস্ত করা হল অভিযুক্ত কর্মীকে। একইসঙ্গে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করল মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
জানা যাচ্ছে, শুধু রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজি নয়, বিভিন্ন ওয়ার্ডেই একইভাবে চলছে খাবার বিক্রি চক্র। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত কমিটির কাছে বিভিন্ন অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযুক্ত কর্মীদের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই পুলিসে অভিযোগ দায়ের করেছে। রিডিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজির ডিরেক্টর অসীম ঘোষের নেতৃত্বে ওই বিভাগের নার্সিং সুপার, মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডেপুটি সুপার, কিচেন আধিকারিক ও এক হাসপাতাল অধিকর্তাকে নিয়ে এই ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার জানিয়েছেন , "খাবার চুরি করে বিক্রি করার প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। ভিডিও ফুটেজের সত্যতা যাচাই করে দেখা হয়েছে। অভিযুক্তকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। গোটা বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে।"
প্রসঙ্গত, মাত্র ২০ টাকা দিলেই মিলছে মাংস, ভাত, ডাল, তরকারি। রোগীর পথ্য চুরি করে চলছে দেদার বিক্রি। রবিবার এমন ছবিই ক্যামেরাবন্দি হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজিতে। অভিযোগ ওঠে, হাসপাতাল কর্মীদের একাংশ যাঁরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে রোগীদের কাছে খাবার পৌঁছে দেন, তাঁরাই রোগীদের খাবার চুরি করে রোগীর পরিবারের লোকজনকে বিক্রি করছেন। পরিজনরা অভিযোগ করেন, অনেক সময় জোর করেও তাঁদের হাতে খাবার ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, '২০ টাকা দিন, খাবার নিন।'
আরও পড়ুন, ফিরল এটিএম জালিয়াতির আতঙ্ক, যাদবপুরে বহু গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হাজার হাজার টাকা
রোগীর আত্মীয়রা অভিযোগ করেন, একজনের খাবারকে দুভাগ করা হচ্ছে। অর্ধেকটা দেওয়া হচ্ছে রোগীকে। আর বাকিটা বিক্রি করা হচ্ছে। রোগীর জন্য নির্দিষ্ট পরিমাপ মতো খাবার রোগীকে দেওয়া হচ্ছে না। রোগীর আত্মীয়দের কয়েকজন এই গোটা বিষয়টির ভিডিয়ো করেন নিজের মোবাইলে। সেই ফুটেজ নার্সদের দেখানো হয়। ফুটেজ দেখানো হয়, আরআইও-র ডিরেক্টরকেও। ছবি দেখিয়ে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করেন রোগীর পরিবারের আত্মীয়রা। এরপরই এদিন সকালে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার পথে হাঁটল মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।