অস্তিত্বের লড়াইয়ে ভাটপাড়া থেকে হাতে কাস্তে নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া সোমেন-সূর্য
লোকসভা ভোটে রাজ্যে প্রথমবার বাম-কংগ্রেসকে ব্যাকফুটে ঠেলে প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি।
মৌমিতা চক্রবর্তী
লোকসভা ভোটে আলাদা লড়াই করে ঢের শিক্ষা হয়েছে। একসঙ্গে চলা ছাড়া আর উপায় নেই। আর সেই একসঙ্গে চলার যোগসূত্র তৈরি করল ভাটপাড়া। অর্জুন সিংয়ের দুর্গকে সামনে রেখে বিধানসভা ভোটের আগে একজোট হওয়ার চেষ্টায় বাম-কংগ্রেস। বামেদের মিছিলে পা মেলাচ্ছেন কংগ্রেস নেতারা। আবার সোমেন মিত্রের গণঅবস্থানে থাকছেন সিপিএম নেতারা। পুর ও পঞ্চায়েত ভোটের আগে এভাবেই রাজ্যবাসীকে জোটবার্তা দেওয়ার চেষ্টায় দুই শিবিরের নেতারা।
লোকসভা ভোটে রাজ্যে প্রথমবার বাম-কংগ্রেসকে ব্যাকফুটে ঠেলে প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি। দুই শিবিরই মনে করছে, সমঝোতা ভেস্তে না গেলে মানইজ্জত অন্তত বাঁচত। গেরুয়া আগ্রাসন রুখতে হাত ধরতেই হবে কাস্তে হাতুড়িকে। ঠেকে শিখেছেন দুই পক্ষের নেতারাই। বিধানসভার অলিন্দে তাই প্রায়ই একজোটে লড়াই করতে দেখা যাচ্ছে সুজন চক্রবর্তী-আব্দুল মান্নানকে। এবার ভাটপাড়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতিকে হাতিয়ার করে মাঠে নামছে বাম-কংগ্রেস।
সোমবার ভাটপাড়া পরিদর্শনে যাচ্ছে বাম-কংগ্রেস প্রতিনিধি দল। সূর্যকান্ত মিশ্র-মহম্মদ সেলিমের সঙ্গে পা মেলাবেন প্রদেশ ও জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। এখানেই শেষ নয়। ভাটপাড়াকে সামনে রেখে মানুষের কাছে বাম-কংগ্রেস জোটকে বিশ্বাসযোগ্য করার চেষ্টায় দুই শিবির।
বৃহস্পতিবার বারাকপুর স্টেশনে গণ অবস্থানের ডাক দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। গণ অবস্থানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বামেদের। বামেরাও তা স্বীকার করেছে, এমনকি সোমেন মিত্রের সঙ্গে ফের একবার ভাটপাড়াতেও যাবেন বাম নেতৃত্ব।
বছর ঘুরলেই পুরসভার ভোট। তারপর পঞ্চায়েত ও বিধানসভা। আর কোনওমতেই লোকসভার ভুল দ্বিতীয়বার করতে চাইছে না বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। জোটপন্থী অধীর চৌধুরী লোকসভায় কংগ্রেসের মুখ হওয়ায় এবার পরিস্থিতি আরও অনূকুল। তাই আলিমুদ্দিন নেতারা চাইছেন আগেভাগে কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে আম জনতার কাছে বিজেপির বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প হিসাবে জোটকে তুলে ধরতে। প্রদেশ নেতৃত্বের সঙ্গে তলায় তলায় কথাও চলছে। বারে বারে মিটিং করছেন তন্ময় ভট্টাচার্য-মনোজ চক্রবর্তীরা।
জোটে 'কাঁটা'
ভোটের সময় আসন সমঝোতার স্বার্থে জোট মানুষ পছন্দ করছেন না। কংগ্রেস-বাম দুপক্ষের লক্ষ্যই স্পষ্টভাবে আম জনতার কাছে তুলে ধরা যায়নি, ভোট গিয়েছে গেরুয়া শিবিরে। অথচ, অধীরের বিরুদ্ধে বামেরা প্রার্থী না দেওয়ায় দাঁত ফোটাতে পারনি বিজেপি। আর এই সমীকরণকে সামনে রেখে নতুন করে সমঝোতার চেষ্টায় বাম-কংগ্রেস। ইয়েচুরিও মনে করেন, ফর্মুলাকে সামনে রেখে তৃণমূল -বিজেপি বিরোধী লড়াইকে জোরদার করা সম্ভব। হারানো ভোট ব্যাঙ্ক ফেরাতে এটাই সবচেয়ে কার্যকরী।
কিন্তু যেভাবে রাজ্য়ে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক মেরুকরণ হয়েছে, তাতে বাম-কংগ্রেস জোট কি বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারবে? লড়াই কঠিন, মানছেন নেতারাও।
আরও পড়ুন- মমতার কাটমানি মন্তব্যে ব্যুমেরাং, ডিগবাজি দিয়ে তৃণমূলের দাবি, ৯৯.৯৯% নেতাই সত্