বৈশাখীকে সঙ্গে নিয়েই দিদির কাছে ফোঁটা নিলেন কানন, ভাইফোঁটা মুকুলকেও
'দিদি কপালে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে যা বলল, সেটা দিদি আর আমার মধ্যেই থাক। টস হয়ে গিয়েছে। ফিক্সারও তৈরি। মাঠে-ঘাটের কথা ঠিক উপযুক্ত সময়ে জানিয়ে দেব।'
শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্য়ায় : ভাইফোঁটায় তৃণমূলের নতুন সমীকরণ? কালীঘাটে পুরনো সৈনিকদের ভাইফোঁটা দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। দিদির কাছে ভাইফোঁটা নিতে কালীঘাটে 'কানন'। শোভনকে কানন নামেই ডাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তবে শোভন চট্টোপাধ্য়ায় একা যাননি। বৈশাখী বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে সঙ্গে নিয়েই কালীঘাটে 'দিদি' মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছে ভাইফোঁটা নিতে আসেন শোভন। শুধু স্নেহের 'কানন' নন, একদা দলের 'নম্বর ২' মুকুল রায়ও এদিন ফোঁটা নিতে কালীঘাটে যান। মুকুল রায়কেও ভাইফোঁটা দেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছে ভাইফোঁটা নিয়ে বেরিয়ে শোভন চট্টোপাধ্য়ায় বলেন, 'দিদির কাছে তুই আমার কাছে আসবি বা আমি আসব দিদির কাছে, সেরকম প্রসঙ্গই নয়। ভাইফোঁটা হয়েছে। দিদি ভাইফোঁটা দিচ্ছে। আমি প্রথম থেকেই তাঁর যে স্নেহ, ভালোবাসা পেয়েছি, স্বাভাবিকভাবেই দিদি আমার শেষ কথা। আমার মা-বাবা নেই। ডেফিনেটলি আমার কাছে দিদির অন্য কোনও অবস্থান নেই। দিদির জন্য আনার জন্য আমার কাছে কী আছে? যা আমি দিদিকে নিয়ে ভাবি, চিন্তা করি, সেটা যদি দিদির কাছে পৌঁছয়, সেটা আসলে দিদিরই দেওয়া জিনিস। যা আমি নিয়ে আসছি। আর দিদি কপালে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে যা বলল, সেটা দিদি আর আমার মধ্যেই থাক। টস হয়ে গিয়েছে। ফিক্সারও তৈরি। এবার বাকি কথা, মাঠে-ঘাটের কথা ঠিক উপযুক্ত সময়ে জানিয়ে দেব। পঞ্চায়েত, বিধানসভা, লোকসভা, পুরসভা এটা বিষয় নয়। দিদির সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক। আজ ৪০ বছরের উপর দিদি যেভাবে আমাকে গাইড করেছে, আমি সেই পদক্ষেপ ছাড়া অন্য পথে হাঁটিনি। দিদি যদি বলত, ৪৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রাতেও ডোরিনা ক্রসিংয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে, যেখানে পিচ থেকে ধোঁয়া বেরচ্ছে, আমি তাহলে খালি পায়ে সেখানেই দাঁড়াতাম।' তৃণমূলে ফেরা বা ঘর ওয়াপসি নিশ্চিত করলেও, তৃণমূলের হয়ে মাঠে-ময়দানে কবে নামছেন? সেই বিষয়ে হেঁয়ালি উত্তর দিলেন শোভন চট্টোপাধ্য়ায়। তবে স্পষ্ট ভাষায় নিশ্চিত করে দিলেন যে, টস হয়ে গিয়েছে। এবার গ্লাভস-প্যাড পরে ক্রিজে নামার অপেক্ষা।
প্রসঙ্গত, ভাইফোঁটায় প্রতিবছরই কালীঘাটের বাড়িতে আয়োজন করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দলের নেতাদের ভাইফোঁটা দেন তিনিয মাঝে ২ বছর করোনার জন্য একদমই ঘরোয়াভাবে ফোঁটা দিয়েছেন মমতা। কিন্তু এবারে আবার ফোঁটার আয়োজন করেন তৃণমূল নেত্রী। যেখানে ফোঁটা নিতে আসতে দেখা যায়, অরূপ বিশ্বাস, শান্তনু সেন, নির্মল মাজি, ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত বক্সী প্রমুখকে। তাঁদের সঙ্গেই ফোঁটা নিতে আসতেন আরও ৩ জন। যে দলে রয়েছেন মুকুল রায়, শোভন চট্টোপাধ্য়ায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্য়ায়। যা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহল মহল। বিশেষ করে তৃণমূলের 'অন্দরমহলে' এই ঘটনার গুরুত্ব অপরিসীম বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে, এদিন মমতার কাছে শোভন-মুকুলের ভাইফোঁটা নেওয়া প্রসঙ্গে সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন,'শোভন-বৈশাখীর এই হাস্যকর পরিস্থিতি কতদিন? কাকে কোথায় টসের কথা বলছেন জানি না। বিজেপি থেকে ফিরে এসেছে তাই দর বেশি। যত কালারফুল ততই মমতার সুবিধা।'