টিকায় বঞ্চিত বাংলা, মোদীকে চিঠি মমতার; উত্তর না পেলেও লিখে যাব, আক্ষেপ মুখ্যমন্ত্রীর
বাংলায় ১৪ কোটি টিকার ডোজ দরকার বলে দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)।
নিজস্ব প্রতিবেদন: উত্তরপ্রদেশে গিয়ে টিকাকরণে যোগীর প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। তার অব্যবহিত পরে তাঁর বিরুদ্ধে টিকা বণ্টনে বঞ্চনার অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর কথায়,'আমাদের চেয়ে অনেক বেশি টিকা পেয়েছে অন্যান্য রাজ্য। তাঁরা পাক আমাদের আপত্তি নেই। আমাদের জনসংখ্যা অনুযায়ী ১৪ কোটি ডোজ দরকার।' তৃতীয় ঢেউ আসার আগে বাংলায় টিকা জোগান বাড়ানোর দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলায় কোভিড নিয়ন্ত্রণে চলে এসে বলে দাবি করেন মমতা (Mamata Banerjee)। তিনি বলেন,'দৈনিক কোভিড সংক্রমণ ৮০০ থেকে ৯০০-র মধ্যে সীমাবদ্ধ। অন্যান্য রাজ্যে বাড়ছে অবশ্য। কারণটা বুঝতে পারছি না। তৃতীয় ঢেউ তো এখনও আসেনি। বাংলায় সংক্রমণ হার ১.৫ শতাংশ। ৯৮ শতাংশ সুস্থতার হার।' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এ দিন আরও বলেন,'আমরা আড়াই কোটি মানুষকে টিকা দিয়েছি। প্রথম টিকা দিয়েছি ১.৮ কোটি লোককে। দ্বিতীয় ডোজ দিতে পেরেছি ৭০ লক্ষ লোককে। এছাড়াও সুপারস্প্রেডার ৫১ লক্ষকে টিকা দিয়েছি। আমার টিকা প্রয়োজন ১৪ কোটি ডোজ। আমার টিকা ঠিকমতো পাচ্ছি না। ২.১২ কোটি পেয়েছি আজ পর্যন্ত। আমরা ১৮ লক্ষ ডোজ কিনেছি। কিনছে বেসরকারি হাসপাতালগুলিও। দ্বিতীয় টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতে আমরাই সেরা। আমি প্রতিদিন ১০ লক্ষ টিকা দিতে পারি। টিকায় সবচেয়ে ভালো ফল করেছি আমরা।'
বাংলাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মমতা (Mamata Banerjee)। তিনি বলেন,'অনেক রাজ্যকে বেশি দেওয়া হচ্ছে। কোনও রাজ্যকে দেওয়াই হচ্ছে না। উত্তরপ্রদেশে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলছেন, সবচেয়ে টিকা বেশি দেওয়া হয়েছে। উনি ইউপি-কে দিলে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু বিজেপি-শাসিত রাজ্যকে বেশি দেবেন আর বাংলাকে সবসময় বন্যাত্রাণ, খরাত্রাণে টাকা দেবেন না। পাওনা টাকা দেবেন না। জিএসটি-র টাকা দেবেন না। টিকা দেবেন না। এটা তো অন্যায়। বঞ্চনা চলছে।'
বাংলায় ১৪ কোটি টিকার ডোজ দরকার বলে দাবি মমতার। বলেন,'বাংলায় টিকা নষ্ট হয়েছে সবচেয়ে কম। আমাদের চেয়ে অনেক বেশি টিকা অন্যান্য রাজ্য পেয়েছে। তাঁরা পাক আমাদের আপত্তি নেই। আমাদের জনসংখ্যা অনুযায়ী ১৪ কোটি দরকার। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ১২ বছর পর্যন্ত বাচ্চার মায়েদের টিকা দেব। কিন্তু টিকাই তো দিচ্ছে না। প্রতিদিন ১০ লক্ষ দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন ৭৫ লক্ষ দিয়েছি। আদতে ২৫ লক্ষ পেয়েছি। এই অবস্থায় আজও চিঠি দিয়েছি, আমাদের রাজ্যকে টিকা দেওয়া হোক। টিকা ঠিক মতো আসছে না। ফলে কোনওদিন দিতে পারছি, কোনওদিন দিতে পারছি না। ১৪ কোটি টিকা দেওয়ার ক্ষমতা রাখি। পাঠাতে তো হবে। মাসে ২ কোটি করে তো দিন। তাহলেও তো প্রায় ৬ মাস লাগবে।'
প্রধানমন্ত্রীকে একের পর এক চিঠি দিলে প্রত্যুত্তর না মেলায় আক্ষেপ রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। তাঁর কথায়,'আজ প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। টিকা যাতে পাই এটা দেখার জন্য তাঁকে বলেছি। হয়তো উত্তর পাব না। কারণ উত্তর আমরা পাই না। তাও প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা আমার দায়িত্ব। উত্তর পাই না না পাই চিঠি লিখে যাব।'
আরও পড়ুন- মমতার নির্বাচনী এজেন্ট থেকে মন্ত্রী, হাইকোর্টে 'কুখ্যাত দুষ্কৃতী' তালিকা দিল NHRC