Kolkata Dengue: 'ডেঙ্গি নিয়ে মানুষের সচেতনতা একেবারেই নেই'! বিস্ফোরক মেয়র ফিরহাদ হাকিম
রাজ্যের তুলনায় কলকাতায় পজিটিভি রেট দ্বিগুণ। এদিন বেলচা হাতে নিজেই জঞ্জাল সাফাই অভিযানে নামেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
মৌপিয়া নন্দী: 'নজরদারি আছে, কিন্তু সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে'! কলকাতায় ডেঙ্গি প্রতিরোধে শহরবাসীকেই 'দায়িত্ব' নেওয়ার আহ্বান জানালেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। জি ২৪ ঘণ্টার 'আপনার রায়' অনুষ্ঠানে তিনি বললেন, 'মানুষের সহযোগিতা বা সচেতনতা ডেঙ্গির ব্যাপারে একেবারেই নেই! যদি ১০ লক্ষ কর্মচারী রাখতে পারতাম, তাহলে প্রতিটি বাড়ির ছাদে একজন নজরদারি চালাত। সেটা সম্ভব নয়'। সমালোচনা করলেন বিরোধীদের ভূমিকারও।
পুজো মিটতেই বিপদের ইঙ্গিত মিলেছিল। শীতের শুরুতে রাজ্যে দাপট দেখাচ্ছে ডেঙ্গি। লাফিয়ে লাফিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা। সঙ্গে মৃত্যুও! রাজ্যের তুলনায় কলকাতায় পজিটিভি রেট দ্বিগুণ। দক্ষিণ কলকাতায় সংক্রমণের ৮৫ শতাংশ। শহরে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজারেরও বেশি। ডেঙ্গিতে প্রাণ হারিয়েছেন খোদ বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের সহকারী সুপার অনির্বাণ হাজরা। এদিন কলকাতায় বেলচা হাতে নিজেই জঞ্জাল সাফাই অভিযানে নামেন মেয়র।
আরও পড়ুন: Dengue In Kolkata: পার্টির নেতারা মারা যাচ্ছে ডেঙ্গিতে, চেপে যাচ্ছে সরকার, বিস্ফোরক দিলীপ
কেন এমন পরিস্থিতি? জি ২৪ ঘণ্টার 'আপনার রায়' অনুষ্ঠানে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'শুধু কলকাতা বা ভারতবর্ষ নয়, এবার বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গির প্রকোপ প্রচন্ড বেড়েছে। বিশ্ব উষ্ণায়ণের জন্য অস্বাভাবিক আবহাওয়া তৈরি হয়েছে। ভারী বৃষ্টি হচ্ছে না, মাঝে মাঝে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। আদ্রর্তা বেশি থাকছে। আদ্রর্তা বেশি থাকলে যেকোনও জীবাণু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে'। সঙ্গে যোগ করেন, 'ফ্রেরুয়ারি মাস থেকে কলকাতা পুরসভা ৭ দিনে এক একটা অঞ্চল পরিদর্শন করছে। কোভিডের সময়ে মানুষ নিজেরা সচেতন হয়েছিলেন। মাস্ক পরেছিলেন। কিন্তু ডেঙ্গি বেলায় আমি আমার পাশের জমিটা খালি করে রেখে দেব, আর প্রতিবেশী ভ্যাট ভেবে সেখানে ময়লা ফেলবে! একবার, দু'বার, তিনবার, চারবার, পাঁচবার পুরসভা পরিষ্কার করবে। কিন্তু নিয়মিত পরিষ্কার করার মতো লোকবল নেই'। মেয়রের দাবি, 'ডেঙ্গি এখনও নিয়ন্ত্রণ যায়, যদি সব মানুষ সপ্তাহে একবার ছাদে উঠে চারপাশটা দেখে নেয়'।
এদিকে ডেঙ্গি ইস্যুতে আসরে নেমেছে বিরোধীরা। স্রেফ তথ্য গোপনের অভিযোগ নয়, রাজ্যের কেন্দ্রীয় দল পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে দেশের স্বাস্থ্য়মন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মেয়র বলেন, 'আমি যখন বিরোধী কাউন্সিলর ছিলাম, আমার পাড়ার প্ল্যাকার্ড হাতে ঘুরতাম। স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছে কিনা, গিয়ে দেখতাম। মানুষকে সচেতন করতাম। বিকাশবাবুর (বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য) বিরুদ্ধে মশা নিয়ে পুরসভায় গিয়েছে, কিন্তু পদত্যাগ চাইনি। আগে আমি আমার ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করেছি। ব্যুরো চেয়ারম্যান হিসেবে সচেতনতা শিবির করেছি। ছবি তুললাম বিরোধিতা আর মানুষের উপকারে বিরোধিতা দু'টোর মধ্যে পার্থক্য আছে'। এর আগে বামদের পুরবোর্ডে কলকাতার মেয়র ছিলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
শহরে ডেঙ্গি মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ পুরসভার? মেয়র জানালেন, 'যেখানে ডেঙ্গুর লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে আমরা স্প্রে করছি। জ্বর হলে বাড়ি বাড়িতে লোক পাঠাচ্ছি। তাঁদের টেস্ট করিয়ে যেতে বলছি। ডেঙ্গুর ধরা পড়লে প্লেটলেটেকর উপর নজর রাখছি। যাতে প্লেটরেট হঠাৎ করে পড়ে গেলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা যায়। দ্বিতীয় লাগাতার সচেতনতামূলক প্রচার চলছে'। সঙ্গে আশ্বাস, 'মানুষ যদি সঙ্গে থাকে, 'তাহলে ১০-১৫ দিনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে'।