রাজ্যপালের নিরাপত্তায় আধাসেনা কেন? সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি নবান্নের
রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা না করেই কেন্দ্র একতরফাভাবে কেন রাজ্যপালের নিরাপত্তায় আধাসেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিল? নবান্নের দেওয়া চিঠিতে সেই বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়েছে।
সুতপা সেন : এবার রাজ্যপালের নিরাপত্তা ইস্যুতে চরমে উঠল কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। সিআরপিএফ বা আধাসেনার হাতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের নিরাপত্তা ছাড়তে নারাজ রাজ্য। আর এই মর্মে ইতিমধ্যেই নবান্নের তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। চিঠিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে আরও একবার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে দেখার আর্জি জানানো হয়েছে। নবান্ন সূত্রে এমনই জানা গিয়েছে।
কেন রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা না করেই কেন্দ্র একতরফাভাবে রাজ্যপালের নিরাপত্তায় আধাসেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিল? সূত্রের খবর, চিঠিতে সেই বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, "রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে রাজ্যপালকে নিরাপত্তা দেওয়া রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। রাজ্যপাল দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিন থেকেই রাজ্য তাঁকে জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দিয়ে আসছে। তাহলে হঠাৎ কেন বা কীসের জন্য রাজ্যপালের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আধাসেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিল।" নবান্নের তরফে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজ্য সরকারের তরফে রাজ্যপালের নিরাপত্তায় কোনও ফাঁক রাখা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ৩০ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নেন জগদীপ ধনখড়। এরপর ১৫ অক্টোবর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতি জারি করে রাজ্যপালের নিরাপত্তায় আধাসেনা মোতায়েনের কথা জানানো হয়। নির্দেশিকায় বলা হয়, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন ৪ থেকে ৫ জন আধাসেনা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এই নির্দেশিকা সামনে আসতেই রুষ্ট হয় রাজ্য। তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে, নির্দেশিকার পর প্রায় এক সপ্তাহ কেটে গেলেও এখনও রাজ্যপালের নিরাপত্তাভার গ্রহণ করেনি আধাসেনা।
জানা গিয়েছে, রাজ্যপালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বেশ কয়েকবার রাজ্য পুলিস ও আধাসেনার পদস্থ কর্তারা বৈঠকে বসেন। কিন্তু , কীভাবে রাজ্যপালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মোতায়েন করা হবে? দুতরফের আলোচনায় সেই নিয়ে কোনও সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসেনি। এরফলে আধাসেনার পক্ষেও রাজ্যপালের নিরাপত্তার দায়িত্বভার গ্রহণ ঘিরে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, রাজ্যপালের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত ফের পুনর্বিবেচনার জন্য কেন্দ্রকে চিঠি দিল রাজ্য।
আরও পড়ুন, 'রাজ্যপালকে ছোট করছেন আমলারা, ১১ তারিখ ৪ ঘণ্টা কার পাবলিসিটি হয়েছিল সবাই জানে', বিস্ফোরক ধনখড়
উল্লেখ্য, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধারে গিয়ে ঘেরাও হয়েছিলেন রাজ্যপালও। সেই ঘটনার পরই রাজভবনের তরফে রাজ্যপালের নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানানো হয় বলে সূত্রের খবর। বর্তমানে রাজ্যপাল জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান। রাজভবনের তরফে তাঁকে জেড প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য বলা হয়। বলে রাখি, বর্তমানে রাজ্য দুজন জেড প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।