নিউটাউনে শুটআউটে ধৃত ২ সুপারি কিলার কুখ্যাত কর্ণ বেরার ঘনিষ্ঠ
নিউটাউন শুটআউটের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন : নিউটাউনে চঞ্চল মণ্ডল খুনের ঘটনায় ধৃত দুই সুপারি কিলার কাঁথির কুখ্যাত ডাকাত কর্ণ বেরার ঘনিষ্ঠ। মঙ্গলবার রাতেই নিউটাউনে এসে দুজনকে জেরা করে কাঁথি থানার পুলিস। উল্লেখ্য, কর্ণ বেরার ঘনিষ্ঠ ধৃত দুই দুষ্কৃতী শেখ রফিক ও সিরাজুল গতমাসেই দুঃসাহসিক কাণ্ড ঘটায় কাঁথি শহরে। পুলিসের হাত থেকে বোমা-গুলি ছুঁড়ে কর্ণকে ছাড়িয়ে নেয় দুই দুষ্কৃতী। যদিও কর্ণ ধরা পড়ে যায়। কিন্তু সেসময়ই এই দুই দুষ্কৃতী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
রবিবার সন্ধায় নিউটাউনের পাথরঘাটা মালোপাড়ায় বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। গুলিবিদ্ধ হন চঞ্চল মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি। গুলি চালিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। নিহতের বাড়ির লোকেরা জানান, বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করতেন চঞ্চল মণ্ডল। ১৭টি প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। শনিবারই জমি জরিপের কাজের বরাত দিতে এসেছিল দুই যুবক। একজন নিজেকে রফিকুল বলে পরিচয় দেয়। মুর্শিদাবাদের একটি জমি জরিপের কাজ দেয় তারা। কাজের জন্য ৫০০ টাকা দাবি করেছিল চঞ্চল। এরপরই রবিবার সন্ধেয় বাইকে তিনজন আসে। রফিকুল বলে যে নিজের পরিচয় দিয়েছিল সে-ই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালায়। তিনটি গুলি লাগে চঞ্চল মণ্ডলের গায়ে।
জমি জরিপ সংক্রান্ত সূত্র ধরেই তদন্ত শুরু করে পুলিস। আটক করা হয় ৭ জনকে। তাদেরকে জেরা করেই তদন্তের জাল গুটিয়ে আনে পুলিস। পুলিস জানতে পারে, মৃত চঞ্চল মণ্ডলের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত অজিতেশ হালদার এবং বিজেশের। তিনজন একই জায়গায় কাজ করত। জমি জরিপের পাশাপাশি জমি কেনাবেচায় মধ্যস্থতাকারীর কাজও করতেন চঞ্চল। সম্প্রতি পাথরঘাটার বাসিন্দা অজিতেশ হালদার এবং বিজেশের দুটি জমি খুব কম দামে বিক্রি করে দিয়েছিল চঞ্চল। সেই থেকে তার ওপর রাগ ছিল দুজনের।
আরও পড়ুন, রাতের কলকাতায় তরুণীকে ধর্ষণ-খুনের চেষ্টা অটোচালকের
এরপর ঘটকপুকুরের এক আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে অজিতেশ। সেই আমিনই মহম্মদ নামে স্থানীয় এক দুষ্কৃতীর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয় অজিতেশের। এরপর মহম্মদ মারফত্ জীবনতলার তিন সুপারি কিলারের সঙ্গে পরিচয় হয় অজিতেশের। তারা রাজারহাট এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করত। রফা হয় দুলক্ষ টাকায়। সেইমত কিছু টাকা অগ্রিমও দেয় অজিতেশ।
ঘটকপুকুরের আমিনই এরপর মুর্শিদাবাদের একটি জমি জরিপের নাম করে চঞ্চল মণ্ডলের বাড়ি নিয়ে যায় তিন সুপারি কিলারকে। ঘটনার চারদিন আগে এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে, চঞ্চলের গতিবিধির ওপর নজর রাখত সুপারি কিলাররা। তারপর পরিকল্পনা মাফিক কাজ করে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় তিন ভাড়াটে খুনি। মঙ্গলবার নিউটাউন শুটআউটের কিনারা করে পুলিস। গ্রেফতার করে খুনের ঘটনায় মাস্টারমাইন্ড অজিতেশকে। নিউটাউন শুটআউটের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।