ভোটে লুম্পেনরাজ- পুলিস, তাবড় নেতাদের সামনে সাংবাদিক পেটালেও এখনও বহাল তবিয়তে অভিযুক্তরা
টিভি ক্যামেরা, পুলিসকর্তা, তাবড় নেতাদের সামনে সাংবাদিক পেটালেও এখনও বহাল তবিয়তে অভিযুক্তরা। ঘটনার একদিন পরও পুলিস অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি। গতকাল সল্টলেকে পুরভোটে শাসকদলের দাদাগিরির ছবি তুলতে গিয়ে আক্রান্ত হয় চব্বিশঘণ্টা সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা।
ওয়েব ডেস্ক: টিভি ক্যামেরা, পুলিসকর্তা, তাবড় নেতাদের সামনে সাংবাদিক পেটালেও এখনও বহাল তবিয়তে অভিযুক্তরা। ঘটনার একদিন পরও পুলিস অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি। গতকাল সল্টলেকে পুরভোটে শাসকদলের দাদাগিরির ছবি তুলতে গিয়ে আক্রান্ত হয় চব্বিশঘণ্টা সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা।
তৃণমূল নেতা সুজিত বসু, পরেশ পাল, অর্জুন সিংয়ের সামনেই আক্রান্ত হন চবিবশ ঘণ্টার সাংবাদিক মিন্টু বসাক। আক্রান্ত এবিপি আনন্দের সাংবাদিক অরিত্রিক ভট্টাচার্য। চব্বিশ ঘণ্টার সাংবাদিক দেবারতি ঘোষকে ধর্ষণের হমকি দেওয়া হয়। এরপরও কেন পুলিস অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।
ভিআইপিতে কংগ্রেস-তৃণমূল দুই পক্ষের সংঘর্ষ। রাস্তায় দাউ দাউ জ্বলছে বাইক। চলল গুলি। ফুটপাথের ধারে পড়ে রয়েছে বোমা। ঘটনায় আটক ৮ জন। কোন রাজনৈতিক দলের সমর্থক তাঁরা, তা এখনও স্পষ্ট জানা যায়নি। অতি সংবেদনশীল জায়গায় এই ঘটনায় পুরো এলাকা জুড়েই তৈরি হয়েছে সন্ত্রস্ত পরিবেশ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ২০টি বাইক নিয়ে টহল দিচ্ছিল গোটা ৬০ জনের একটি বাইক বাহিনী। ঘটনাস্থলে ওই বাইক বাহিনীর ওপর চড়াও হয় অন্য আরেক পক্ষ। এরপরই গুলি চলছে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বাইক গুলিতে। অন্যদিকে বিধাননগরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে পিস্তল বোমা সহ দুষ্কৃতীদের ধরে ফেলল বিরোধীরা। তাদের দাবি ওই দুষ্কৃতীরা ভোট লুঠ করতেই এসেছিলেন। বিরোধীদের আরও অভিযোগ সদ্য সিপিআইএম থেকে বহিষ্কৃত বর্তমান তৃণমূল নেতা তাপস চ্যাটার্জি ওই দুষ্কৃতীদের বুথ দখল করার জন্য পাঠিয়েছে। বিরোধীদের হাতে ধরা পড়ল ভোট লুঠ করতে আসা তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিস বাহিনী। তাদের গ্রেফতার করে পুলিস।
শনিবার ৩ অক্টোবর, রাজ্যের তিনটি জেলায় পুরনির্বাচনে সকাল থেকেই ধুন্ধুমার কাণ্ড। সল্টলেকে বহিরাগতদের দাপাদাপি, বোমাবাজি। তৃণমূল বিধায়ক সুজিত বোস, বেলেঘাটার বিধায়ক পরেশ পাল, ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিংহের নেতৃত্বে ভাঙা হয় চিত্র সাংবাদিকের ক্যামেরা। মারধর করা হয় সাংবাদিকদের। এমনকি মহিলা সাংবাদিককে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়। পুরনির্বাচনে উত্তপ্ত রানিগঞ্জ। চলল গুলি। মুড়ি-মুরকির মতো বোমাবাজি। লাঠি হাতে তাণ্ডব। পুলিসের সামনেই অবাধ লাঠিযুদ্ধ। আঙুল উঁচিয়ে ছবি তুলতে বাধা। সিপিএমের বুথ অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পাল্টা মার সিপিএমের। ভোট ময়দান, না রণক্ষেত্র!
এলোপাথাড়ি গুলি। কোথাও ভোটাররা গুলিবিদ্ধ। কোথাও আবার কান কেটে নেওয়া হল এক তৃণমূল সমর্থকের। ভোটের দিন মোটের ওপর উত্তপ্তই থাকল আসানসোল। বিজেপি এবং তৃণমূলের সংঘর্ষ বেধে যায়। আচমকাই গাড়িতে চড়ে বুথের সামনে হাজির চার পাঁচজন। চলে এলোপাথাড়ি গুলি। গুলিবিদ্ধ হন তিনজন ভোটার। বিজেপির দাবি, তিনজনই তাঁদের সমর্থক।
নাগাড়ে বোমাবাজি। অবাধে চলল গুলি। ঠুঁটো জগন্নাথ পুলিস। আঙুল উঁচিয়ে ছবি তুলতেও বাধা। রক্তাক্ত রানিগঞ্জ। যত কাণ্ড কাঠগাদায়।
একানব্বই নম্বর ওয়ার্ড। রামকুমার খৈতান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল বুথ। লাঠি হাতে তাণ্ডব। এক যুবকের মাথায় পড়ল লাঠি।
সকালে ভোট শুরুর পর থেকেই ওই ওয়ার্ডে ভোট কেন্দ্রের সামনে দুই পক্ষের জমায়েত ছিল। দুপক্ষের বচসা, ধস্তাধস্তি। সিপিএমের বুথ অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে গুলি, বোমা ছোড়ার অভিযোগ। তৃণমূল কর্মীদের মারধরের অভিযোগ ওঠে সিপিএমের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিস বাহিনী পৌছলেও কার্যত নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। আহত হয়েছেন দুপক্ষের বেশ কয়েকজন।
ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে, তাই পুনর্নির্বাচন করতে হবে বিধাননগরে। এই দাবিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অফিসে অবস্থানে সামিল বিরোধী দলের নেতারা। দুপুরেই নির্বাচন কমিশনের দফতরে গিয়ে ডেপুটেশন জমা দেন রাহুল সিনহা। সঙ্গে ছিলেন দলের অন্য নেতারা। যদিও, ছাপ্পা ভোট নিয়ে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি বলে দাবি রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্ত রঞ্জন উপাধ্যায়ের।এরপরেই কমিশনের দফতরে অবস্থানে বসেন রাহুল সিনহা। বিকেলে কমিশনের দফতরে হাজির হন কংগ্রেস ও বাম দলের প্রতিনিধিরা। কমিশনের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
বালিতে আসল ভোটারদের বুথ থেকে বের করে দিয়ে ভোট দিচ্ছে নকল ভোটার। ছাপ্পা ভোটেরও অভিযোগ উঠল শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
বালিতে মাথা ফাটল কংগ্রেস কর্মীর। একষট্টি নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী সঞ্জীব বনশলের মাথা ফাটে। অভিযোগ, একষট্টি নম্বর ওয়ার্ডের আট নম্বর বুথে কংগ্রেস প্রার্থী পৌছলে তাঁকে ধাক্কা মেরে বের করে দেওয়া হয়। এরপর ওই একই ওয়ার্ডের নয় নম্বর বুথে গেলে সঞ্জীব বনশলকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। পুরো ঘটনায় অভিযোগের তির তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে। অভিযোগ গোটা ঘটনার সময়ে কার্যত দর্শকের ভূমিকায় ছিল পুলিস।
ছাপ্পা ভোটের খবর এসেছে হাওড়া থেকেও। বিরোধীদের অভিযোগ, লিলুয়ার খেমকা স্কুলে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করাচ্ছেন তৃণমূল এজেন্ট। সেই ছবি ধরা পড়েছে চব্বিশ ঘণ্টার ক্যামেরায়।
হাওড়া কর্পোরেশনে জুড়ে যাওয়ার পর প্রথম ভোটে বালি। আজ ভোট বালির ষোলটি ওয়ার্ডে। গত লোকসভা ভোট বলছে দাপট রয়েছে ঘাসফুলের। ইতিমধ্যে সামনে এসেছে বালি পুরসভার ইঞ্জিনিয়রের বাড়ি থেকে ঘুষের কোটি কোটি উদ্ধারের ঘটনা। এটা কি বামেদের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে? উত্তরটা মিলবে আগামী বুধবার।