পুলিসের সামনেই ডাক্তারকে সপাটে চড়, প্রসূতি মৃত্যু ঘিরে ধুন্ধুমার একবালপুরে
কথা বলার মাঝখানেই সোফায় বসে থাকা প্রসূতির স্বামী তপেন ভট্টাচার্য উঠে গিয়ে সপাটে চড় কষান ডাক্তারের গালে।
নিজস্ব প্রতিবেদন : প্রসূতি মৃত্যু ঘিরে সাতসকালে ধুন্ধুমার বাধল একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। পুলিসের সামনেই ডাক্তারকে সপাটে চড় কষালেন মৃতার স্বামী। আর তারপরই হাসপাতালে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় দুপক্ষের মধ্যে।
জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে হাওড়ার তাঁতিপাড়ার বাসিন্দা পিঙ্কি ভট্টাচার্য এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। পরিবারের দাবি, ভিজিটিং আওয়ারে মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ ছিল। কিন্তু রাত ৩টে নাগাদ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফোন যায়। ফোনে পিঙ্কি ভট্টাচার্যের মৃত্যু সংবাদ দেওয়া হয়। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে এরপরই সকাল থেকে হাসপাতালে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে মৃতার পরিবারের লোকেরা। দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতালে। পরিবার অভিযোগ করে, ঘুমের ওষুধের অতিরিক্ত ডোজের জন্যই মৃত্যু হয়েছে পিঙ্কি ভট্টাচার্যর। বাড়ির তরফে হাসপাতালের বিরূদ্ধে এফআইআর করা হয় একবালপুর থানায়।
অন্যদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পাল্টা দাবি করে, বারবার যোগাযোগ করা হলেও রোগীর পরিবারের লোকজন অনেক পরে হাসপাতালে আসেন। সেইসময়ে উপস্থিত ছিলেন চিকিত্সক। বিনা প্ররোচনায় পরিবারের লোকজন তাঁর উপর চড়াও হন বলেও পাল্টা অভিযোগ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আনে। যেখানে দেখা যায়, মৃতার পরিবারের উত্তেজিত আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলছেন চিকিৎসক বাসব মুখোপাধ্যায়। সেইসময় কথা বলার মাঝখানেই সোফায় বসে থাকা প্রসূতির স্বামী তপেন ভট্টাচার্য উঠে গিয়ে সপাটে চড় কষান ডাক্তারের গালে।
আরও পড়ুন, ভূতের রাজা দিল বর! সত্যজিৎকে আঁকড়ে ডিজিটাল বিয়ের কার্ড তৈরি করে তাক লাগাল যুগল
ফুটেজ সামনে আসতে জোর চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। নিন্দায় সরব হয়েছে চিকিৎসক মহল। অন্যদিকে চিকিৎসক নিগ্রহের এই ঘটনা যে কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না, এক বিবৃতি জারি করে তা স্পষ্ট করে দিয়েছে হাসপাতার কর্তৃপক্ষও। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "বছর তিরিশের এক গর্ভবতীকে ডেলিভারির জন্য CMRI-তে আনা হয়েছিল। গতকাল সকালে তাঁর সি-সেকশনের পর মা ও সন্তান সুস্থ ছিল। কিন্তু আজ সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মায়ের মৃত্যু হয়। হাসপাতালের তরফে জরুরি ভিত্তিতে সমস্তরকম ব্যবস্থা করা হয়েছিল। চিকিৎসক প্রসূতির পরিবারকে সেকথা বোঝাচ্ছিলেন ও ময়নাতদন্ত করার পরামর্শ দিচ্ছিলেন। সেইসময়ই প্রসূতির আত্মীয়রা ডাক্তারকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করে। হাসপাতাল চত্বরে অশান্তি ছড়ায়। এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা রয়েছে, কিন্তু চিকিৎসককে শারীরিক নিগ্রহ কোনওভাবেই মানা হবে না। বরদাস্ত করবে না হাসপাতাল।"