ব্রিগেড- সন্ধ্যায় বইমেলায় এলেন ‘রবীন্দ্রনাথ’!
কবিগুরুর জেরক্স কপি...
নিজস্ব প্রতিবেদন: রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির স্টলে বসে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ! হ্যাঁ, এক ঝলক দেখলে মনে হবে একবিংশ শতকে রবীন্দ্রনাথ দর্শন হয়ে গেল। তাক ভর্তি সাজানো বই, তার পাশেই চেয়ারে এক কোণে বসে তিনি। পরনে হলুদ পাঞ্জাবি, তার ওপর ব্রাউন রংয়ের জহর কোট আর সঙ্গে ঝোলা ব্যাগ। এক ঝলক দেখলে ভিরমি খেয়ে যেতে হবে। সত্যি সত্যিই রবীন্দ্রনাথ না কি? না রবীন্দ্রনাথ নন, তবে অবিকল রবীন্দ্রনাথের মতোই দেখতে তাঁকে। বিশেষ করে চুল আর দাড়ি, কবিগুরুর জেরক্স কপি বললেও ভুল বলা হবে না। রবিবাসরীয় বইমেলায় এইভাবেই দেখা মিলল গুরুদেবের! ৩৫০ নম্বর, রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির স্টলের এক কোণায় ঠায় বসেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন- অসুস্থতা উপেক্ষা করেই ব্রিগেডে এলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, গাড়িতে বসেই শুনলেন বক্তৃতা
সোমনাথ ভদ্র। হেদুয়ায় স্কটিশ চার্চ কলেজের কাছেই থাকেন তিনি। বিএসএনএল কর্মী। পড়াশুনা মাধ্যমিক পর্যন্তই, তবে বিশ্বকবির প্রতি তাঁর অনুরাগ কিন্তু প্রথাগত শিক্ষার গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ থাকেনি। এখন তিনি রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির লাইফটাইম মেম্বার। সেই সূত্রেই এবারের বইমেলায় রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির স্টলে আসা, থাকা এবং দীর্ঘ সময় কাটানো।
আরও পড়ুন- ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে ধরনা, মেট্রো চ্যানেলের মঞ্চ থেকে ঘোষণা মমতার
তখন সন্ধে সাতটা বা তার কিছুটা বেশি। ৪৩তম আন্তর্জাতিক বইমেলার প্রথম রবিবার, তবে তুলনায় ঝিমানো। এমনি দিনে যতটা ভিড় থাকে, এই রবিবারেও বইমেলার চেহারাটা একই ছিল। খাবার দোকান আর লিটিল ম্যাগাজিনের চত্বরটা বাদ দিলে জনতা আরাম করেই হেঁটে চলে বেড়াতে পারছিল। সেলফি তোলার জন্যও বিশেষ অসুবিধা হচ্ছিল না। ফাঁকাই, ধাক্কাধাক্কির কোনও ব্যাপার নেই। আর পাঁচটা সাধারণ দিনের মতোই ছিল রবিবাসরীয় বইমেলা। বইপ্রেমীদের অনেকেই বলাবলি করছিল, ব্রিগেড বলেই না কি মেলায় ভিড় নেই। সে যাই হোক, সোমনাথ বাবুর কিন্তু সেসবে মাথা ব্যাথা নেই। তিনি নিয়ম করেই বইমেলায় আসেন। রবিবারও এসেছিলেন।
ছোটবেলায় তার মুখের গঠন ও চুলের জন্য অনেকেই তাকে রবি বলে ডাকতো। মহুয়া রায় চৌধুরির মত অভিনেত্রীও সস্নেহে তাঁকে রবিই বলতেন। পরবর্তী কালে বালিগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ বলেছিলেন সোমনাথ বাবু আপনি চুল, দাড়ি কাটবেন না। সেই থেকে নিজের কেশসজ্জায় কাঁচি ছোঁয়াননি তিনি। তবে সোমনাথ বাবু নিজে কোনওদিন দাবি করেন তিনি রবীন্দ্রনাথের হামসকল। তাঁর কথায়, “আমি ছোটবেলা থেকেই রবীন্দ্রানুরাগী। সেই থেকেই জোড়াসাঁকোয় যাতায়াত। পরে রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির লাইফটাইম মেম্বার। আমি কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে নকল করিনি। মিডিয়াই করেছে। ২৫শে বৈশাখে অনেক পত্র পত্রিকাতে আমার ছবি ছাপা হয়েছিল। এখন তো অনেকেই দেখলেই চিনতে পারেন।”