শিলান্যাসই সার, রাজ্যের রেল প্রকল্পগুলি তিমিরেই

দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের রেলমন্ত্রী হওয়ার পর প্রায় প্রতিদিনই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে কোনও না কোনও রেল প্রকল্পের শিলান্যাস বা উদ্বোধন করতে দেখা যেত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার আগের ৬ মাসে এ রাজ্যে ১০০-র`ও বেশি রেল প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Updated By: Mar 13, 2012, 09:29 PM IST

দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের রেলমন্ত্রী হওয়ার পর প্রায় প্রতিদিনই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে কোনও না কোনও রেল প্রকল্পের শিলান্যাস বা উদ্বোধন করতে দেখা যেত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার আগের ৬ মাসে এ রাজ্যে ১০০-র`ও বেশি রেল প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকল্পগুলি জায়গা করে নিয়েছিল রেল বাজেটেও। সব মিলিয়ে প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকার প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন তত্‍‍‍‍‍কালীন রেলমন্ত্রী।
 
তাঁর দাবি ছিল, প্রতিটি প্রকল্পের কাজই শেষ হবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই। পরবর্তীকালে তিনি জানিয়েছিলেন, উদ্বোধনের পর থেকেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে প্রকল্পগুলিতে।
কিন্তু আদতে প্রকল্পগুলির কী অবস্থা? রেল বাজেটের আগে এক নজরে দেখা নেওয়া যাক প্রকল্পগুলির বাস্তব চিত্র--
কাঁচরাপাড়া কোচ ফ্যাক্টরি।
অনুমানিক খরচ ২৬২ কোটি টাকা।
শিলান্যাস হয়েছিল মার্চ, ২০১০।
এখনও কাজ শুরুই হয়নি।
 
কুলটি ওয়াগন কারখানা।
অনুমানিক খরচ ১২০ কোটি টাকা।
শিলান্যাস হয়েছিল ডিসেম্বর, ২০১০।
কাজ সবে শুরু হয়েছে।
 
বজবজ এসি কন্টেনার কারখানা।
অনুমানিক খরচ ৫৩.৯ কোটি টাকা।
শিলান্যাস হয়েছিল জানুয়ারি, ২০১১।
কাজ সবে শুরু হয়েছে।
 
পেরিসেবল কার্গো সেন্টার।
অনুমানিক খরচ ৩ কোটি টাকা।
শিলান্যাস হয়েছিল নভেম্বর, ২০০৯।
কাজ শেষ হয়েছে।
 
হলদিয়া ডিএমইউ কোচ ফ্যাক্টরি।
অনুমানিক খরচ ১৭০ কোটি টাকা।
শিলান্যাস হয়েছিল ফেব্রুয়ারি, ২০১১।
কাজ সবে শুরু হয়েছে।
 
জলপাইগুড়ি এক্সেল কারখানা।
অনুমানিক খরচ ৩০০ কোটি টাকা।
শিলান্যাস হয়েছিল সেপ্টেম্বর, ২০১০।
এখনও কাজ শুরুই হয়নি।
ডানকুনি থেকে ফুরফুরাশরিফ রেলপথ।
রেলমন্ত্রী হয়েই প্রথমে ডানকুনিতে, আর তারপর ফুরফুরাশরিফে গিয়ে নতুন রেল প্রকল্পের শিলান্যাস করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন ১৮ মাসের মধ্যেই ট্রেন চলবে এই পথে। দেখতে দেখতে কেটে গেছে বেশ কয়েক মাস। কি অবস্থা প্রকল্পের? রেল বোর্ডের তথ্য বলছে, সাড়ে ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথের ডানকুনির দিকে রেলের জমি আছে মাত্র দেড় কিলোমিটার। আর এই কয়েক মাসে ফুরফুরাশরিফের দিকে জমি অধিগ্রহণ হয়েছে মাত্র ৫ কিলোমিটার। ফলে প্রকল্পের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ফুরফুরাশরিফে।
রেলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রাজ্যে যে সমস্ত কারখানার কাজ শুরু হয়েছে, তার কাজ শেষ করতে প্রয়োজন হবে কমপক্ষে ১০,০০০ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে রয়েছে নতুন রেললাইন বসানো আর রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ। প্রশ্ন একটাই- এই চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দাঁড়িয়ে রেলের পক্ষে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আসবে কোথা থেকে? শুধু বামেরাই নয়। তৃণমূল সুপ্রিমোর ঘোষিত প্রকল্পগুলির ভবিষ্যত্‍ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে কংগ্রেসও।

.