রিজেন্ট পার্কের রহস্য-মৃত্যু, খারিজ হল খুনের তত্ত্ব
রিজেন্ট পার্কের ঘটনায় খুনের তত্ত্ব খারিজ হয়ে গেল তদন্ত শুরুর দ্বিতীয় দিনেই। ম্যুর এভিনিউর বসু পরিবারের সদস্যদের কেউ আত্মঘাতী হননি বলেও কার্যত নিসংশয় হয়েছেন গোয়েন্দারা। ময়নাতদন্তের মৌখিক রিপোর্ট অনুযায়ী ৫ জনেরই মৃত্যু হয়েছে আগুন লাগার ফলে কার্বন মনোঅক্সাইড গ্যাসের বিষক্রিয়ায়।
রিজেন্ট পার্কের ঘটনায় খুনের তত্ত্ব খারিজ হয়ে গেল তদন্ত শুরুর দ্বিতীয় দিনেই। ম্যুর এভিনিউর বসু পরিবারের সদস্যদের কেউ আত্মঘাতী হননি বলেও কার্যত নিসংশয় হয়েছেন গোয়েন্দারা। ময়নাতদন্তের মৌখিক রিপোর্ট অনুযায়ী ৫ জনেরই মৃত্যু হয়েছে আগুন লাগার ফলে কার্বন মনোঅক্সাইড গ্যাসের বিষক্রিয়ায়। মৃতদের কারও শরীরেই আঘাতের কোন চিহ্ন নেই বলেও জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিত্সকরা। ফলে, প্রাথমিক ভাবে যা মনে করা হচ্ছিল যে বাকি ৪ জনকে হত্যা করার পর আত্মঘাতী হয়েছেন সুপ্রতীমবাবু, সেই তত্ত্ব মূলত খারিজ হয়ে গিয়ে অন্য মোড় নিল রহস্য।
যেই ঘর থেকে ৫ টি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে সেটি ছিল স্বদেশবাবু ও তাঁর ২ নাতনির শোবার ঘর। ঘরে একমাত্র স্বদেশবাবুর দেহটি ছিল ডিভানের ওপর, এবং বাকি ৪টি দেহ মাটিতে পড়ে ছিল বিক্ষিপ্তভাবে। এসি চলার কারণে ঘরটি বন্ধ করা ছিল। সেই কারণেই মূলত বাইরে বেরোতে পারেননি কেউই। ফলে ঘরের মধ্যেই কার্বন মনোঅক্সাইড-এর বিষক্রিয়ায় তাঁরা প্রথমে সংজ্ঞা হারান। তারপর অগ্নিদগ্ধ হয়ে তাঁদের মৃত্যু হয় বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা।
খুন এবং আত্মহত্যার সম্ভাবনা নাকচ হয়ে গেলেও কিছু বিষয় নিয়ে এখনও ধন্ধে রয়েছেন গোয়েন্দারা। ফলে, আরও ঘনীভূত হচ্ছে রহস্যের জট।
প্রথমত, অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হলে সুপ্রতামবাবুর ঘরে রক্ত মাখা কাঠের শো পিস এল কোথা থেকে? ঘরে রক্তের দাগই বা রয়েছে কেন?
দ্বিতীয়ত, পরিবারের ৫ জনই এক ঘরে গেছিলেন কেন?
কী করছিলেন তাঁরা ওই ঘরে?
গোয়েন্দাদের অনুমান, পরিকল্পিতভাবে ঘরে আগুন লাগানো হয়েছিল। সেক্ষত্রে কে আগুন লাগালো এবং কেন আগুন লাগানো হল, সেই প্রশ্নও ধন্ধে ফেলে দিয়েছে গোয়েন্দাদের।
রবিবার রাত পৌনে ২ টো নাগাদ গঙ্গোত্রী অ্যাপার্টমেন্টের ৩ তলার একটি ঘরের ভিতর থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিস এবং দমকলে খবর দেওয়া হয়। পুলিস এসে ঘরের দরজা ভেঙে ঢোকার পর দেহগুলি পড়ে থাকতে দেখা যায়। বন্ধ ফ্ল্যাটের ভিতরে একই ঘরের মধ্যে থেকে উদ্ধার হয় ৫টি দেহই। বাড়িতে দু'টি সারমেয় ছিল বলে জানা যায়। তার মধ্যে একটি সারমেয়ও মৃত অবস্থায় ঘরের মধ্যে থেকে মেলে। অপর সারমেয়টি সেইসময় ফ্ল্যাটের বাইরে ছিল বলে জানান প্রতিবেশীরা।