সেলফিতে 'না', দলের কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিলীপ ঘোষের
দলের কর্মীদের সেলফি তোলার প্রবণতা ঠেকাতে নির্দেশিকা আনতে চলেছে বিজেপি, খবর সূত্রের।
অঞ্জন রায়
দলের কর্মীদের সেলফি তোলায় রাশ টানতে চাইছে রাজ্য বিজেপি। বুধবার বিজেপির মহিলা মোর্চের রাজ্য কর্মশালায় দলের কর্মীদের মধ্যে 'নিজস্বী আসক্তি' নিয়ে নিজের বিরক্তি প্রকাশ করলেন দিলীপ ঘোষ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন,''নিজের ছবি নিজে তোলেন কেন? ফটো তুলে ফেসবুকে দেবেন! এজন্য রাজনৈতিক দল নয়। ছবি তুলতে হলে রাজনীতি ছেড়ে দিন। এমন জায়গায় নিজেকে নিয়ে যান, যাতে লোকে আপনার ছবি তোলে।''
বিজেপির বিভিন্ন মিটিং-মিছিলে দেখা গিয়েছে, নেতাদের ভাষণ ছেড়ে নিজস্বী তুলতে মত্ত কর্মীরা। কেউ আবার মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে ধারে দাঁড়িয়ে নিজস্বী তুলছেন। শুধু নিজস্বীই নন, গ্রুপফিও তুলছেন কর্মীরা। দল বেঁধে দাঁড়িয়ে পড়ছেন ক্যামেরার সামনে। সভার মাঝে নেতাদের বক্তব্য ছেড়ে ছবি তোলার ব্যস্ততা নজর এড়ায়নি শীর্ষ নেতাদের। এতে সভা-সমাবেশের গুরুত্ব হ্রাস পায় বলে মত বিজেপি নেতৃত্বের। সূত্রের খবর, নিজস্বী তোলার প্রবণতা ঠেকাতে এবার নির্দেশিকা আনতে চলেছে রাজ্য বিজেপি। প্রাণের ভয়ই যেখানে সেলফি আসক্তি ঠেকাতে পারছে না, সেখানে দলের নির্দেশ কর্মীরা কতটা মানবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে।
আরও পড়ুন- 'মুকুল ভূত' দেখছেন না কি রাজ্য বিজেপি নেতারা?
বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে নিজস্বী ও গ্রুপফি-র ক্রেজ দিনে দিনে বাড়ছে। রাজনৈতিক নেতারাও তা এড়িয়ে যেতে পারছেন না। আগে পছন্দের রাজনৈতিক নেতানেত্রী বা অভিনেতার অটোগ্রাফ নেওয়ার চল ছিল। এখন সেই জায়গা নিয়েছে সেলফি। সমর্থক-কর্মীদের 'সেলফি' সাধ মেটান খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। গুজরাটের প্রচারেও নিজস্বী তুলেছেন। আর ২০১৪ সালে ভোটদানের পর দলীয় প্রতীক হাতে মোদীর ছবি তো বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে সেলফি তুলে ফেসবুক ও টুইটারে পোস্ট করেছেন নরেন্দ্র মোদী। টুইটার, ফেসবুকে ফলোয়ারের সংখ্যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও পিছিয়ে দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তাঁর দলেই তবে কেন সেলফি-আপত্তি?
আরও পড়ুন- রাজনাথকে এড়িয়ে গেলেন বিজেপির রাজ্য নেতারা
এক বিজেপি নেতার মন্তব্য, নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাধারণ নেতা-কর্মীদের গুলিয়ে ফেললে চলবে না। ভোটপ্রচার বা কূটনৈতিক স্বার্থে নিজস্বী তোলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু, কোনও সভা-সমাবেশ বা বৈঠকের মাঝে কী দেখেছেন মোদীকে হঠাত্ ফোন বের করে নিজস্বী তুলতে? সেখানে মন দিয়ে সবার কথা শোনেন। আর এজন্যই তিনি নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর থেকে এটাই শিক্ষনীয়। নিজস্বী তোলার ক্ষেত্রে পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনা করতে হবে কর্মীদের।