বিরোধী দলনেতাকে বলব আয়নায় মুখ দেখুন, সভাপতি অর্ধেক বোঝেন, অর্ধেক বোঝেন না: Saumitra
ফেসবুকে যুব মোর্চার পদ ছাড়ার কথা ঘোষণার পর ফেসবুক লাইভে সৌমিত্র খাঁ নিশানা করেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ও রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh)।
নিজস্ব প্রতিবেদন: একদিকে বাংলা থেকে মন্ত্রী হচ্ছেন ৪ জন। অন্যদিকে দলের অন্দরে ডামাডোল। বুধবার যুব মোর্চার সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে রাখঢাক না রেখেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ও দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh) বিঁধলেন সৌমিত্র খাঁ (Saumitra Khan)। তাঁর অভিযোগ, বারবার দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ভুল বোঝাচ্ছেন। দলের চেয়ে নিজেকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন বিরোধী দলনেতা। এভাবে চললে দলের ভালো হবে না। এও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদীকে দেখেই বিজেপিতে এসেছেন। দলেই থাকবেন।
ফেসবুকে যুব মোর্চার পদ ছাড়ার কথা ঘোষণার পর ফেসবুক লাইভে সৌমিত্র খাঁ (Saumitra Khan) নিশানা করেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ও রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh)। তিনি বলেন,'এক নেতা এসেছেন, যিনি বলছেন তাঁর নেতৃত্বে সব কিছু হয়েছে। আমি এলাকায় না প্রবেশ করে জিতেছি। আমার মনে হয়েছে যুবমোর্চার পদ দিয়েছে দল। লড়াই করেছি। এই যিনি বিধানসভার দলনেতা হয়েছেন তিনি নিজেকে জাহির করছেন, দলকে নয়। যেভাবে চলছে তাতে যুবমোর্চার সভাপতি হিসেবে লড়াই করা মুশকিল হয়ে উঠছে। এখন যিনি নেতা হয়েছেন পুরো ফোকাস এক জায়গায় চলে গিয়েছে। তিনি দিল্লি যাচ্ছেন বারবার। নেতাদের ভুল বুঝিয়ে প্রমাণ করতে চাইছেন তিনিই সবচেয়ে বড় নেতা। তিনি একসময় তৃণমূলে বড় নেতা দেখিয়েছেন।'
দিলীপের কাছেও অভিযোগ করেছেন তিনি। তবে লাভ হয়নি। সৌমিত্র বলেন,'মাননীয় সভাপতিকে বললেও অর্ধেকটা বোঝেন, অর্ধেকটা বোঝেন না। বাংলা বিজেপি যেভাবে চলছে, তাতে ভালো কিছু হবে না। নতুন নেতা এসে দিল্লির নেতৃত্বকে বিভ্রান্ত করেছেন। দলটা একটা জেলার মধ্যে চলে যাচ্ছে। পরিষ্কার বলছি, নরেন্দ্র মোদী যতদিন বাঁচবেন বিজেপি করব।'
শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে দুর্নীতিগ্রস্তদের দলে ঢোকানোর অভিযোগও করেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ। তিনি বলেন,'ভোটের ১ মাস আগে ১২৮ জনকে যোগদান করিয়েছিলেন তিনি। সবগুলো চোর, চিটিংবাজ। তাঁদের অনেকে হেরে গিয়েছেন। হেরে যেতেই পারেন, তা নিয়ে দুঃখ নেই। ব্যর্থতার দায় নিয়ে সরে যাচ্ছি। মানুষের জন্য কাজ করা যাচ্ছে না। বিষ্ণুপুর এলাকাতেও কাজ করতে পারছিলাম না।'
শিশির-সৌমেন্দুর জন্য কি পদ চেয়েছেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)? সৌমিত্রের মন্তব্যে তেমন ইঙ্গিতও রয়েছে। তাঁর কথায়,'ভোটের আগেও বিরোধিতা করেছি। দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক ভুল করছেন বলেছিলাম। একমুখী হচ্ছে দল। খারাপ হচ্ছে। কিন্তু আমায় কোণঠাসা করে দিল। এখন বারবার দিল্লিতে গিয়ে উল্টোপাল্টা বুঝিয়ে চলে আসছেন। যেন তিনি বিজেপির জন্য জীবন দিয়েছেন। ভাবখানা এমন আমাদের কোনও আত্মত্যাগ নেই। তিনিই একমাত্র আত্মত্যাগ করেছেন। আমি কখনও ঘরের লোকের জন্য চাইনি। যে বাবা-ভাইকে এই করে দাও। আমার এসব নিয়ে ভাবার কোনও কারণ নেই। কোনও স্বার্থ নিয়ে আসিনি। দলের তহবিল থেকে ১০০ টাকাও তুলিনি। আমার এখনও একতলা বাড়ি। দুতলা হয়নি।'
আরও পড়ুন- আজ বাবুল-দেবশ্রী খারাপ হয়ে গিয়েছে, মন্ত্রিত্ব থেকে বাদ পড়ায় 'আক্ষেপ' Mamata-র
বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর থেকে একাধিকবার দিল্লি গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা, নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও দেখা করে এসেছেন। কী কারণে তিনি গিয়েছেন, তা জানতেন না দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। সে কথা সংবাদ মাধ্যমে বলেছিলেনও। এ দিন ফেসবুকে ৯ মিনিট ৪১ সেকেন্ডে ভিডিয়োয় বারবারে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে দিল্লির নেতৃত্বকে ভুল বোঝানোর অভিযোগ করেছেন সৌমিত্র। তিনি বলেন,'এক কেন্দ্রিক দল হয়ে যাচ্ছে। তিনি বারবার দিল্লিকে ভুল বোঝাচ্ছেন। যেভাবে একটি জায়গায় দুজন নেতা হয়ে চলছে তা সম্ভব নয়। ভবিষ্যতেও দেখতে থাকবেন। অধিকারী অধিকারী করছে, তাতে আমি হতাশ। আমাকে তো বিজেপি বের করতে পারবে না। বড় দলে নিজের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকে। আমৃত্যু বিজেপির সঙ্গে থাকব। বিরোধী দলনেতাকে বলব আয়নায় মুখ দেখুন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ভুল বোঝাবেন না। এভাবে চললে বাংলায় বিজেপি এগিয়ে যাবে না।'
আরও পড়ুুন- সব দেখেন প্রধানমন্ত্রী অথচ কাঠগড়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী? হর্ষ বর্ধনের ইস্তফায় Mamata