দীপ জ্বেলে হারানো সুরের খোঁজে রীনা ব্রাউন
কথা ছিল, শনিবার হয়ত হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে সুচিত্রা সেনকে। নিজেও মনে-প্রাণে চাইছিলেন বাড়ি ফিরতে। হল না। ২৬ দিনের লড়াই শেষ হয়ে গেল এক মুহূর্তে। প্রায় সাড়ে তিন দশক নিজেকে লোকচক্ষুর অন্তরালে রাখার পর চির অন্তরালে চলে গেলেন মহানায়িকা।
কথা ছিল, শনিবার হয়ত হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে সুচিত্রা সেনকে। নিজেও মনে-প্রাণে চাইছিলেন বাড়ি ফিরতে। হল না। ২৬ দিনের লড়াই শেষ হয়ে গেল এক মুহূর্তে। প্রায় সাড়ে তিন দশক নিজেকে লোকচক্ষুর অন্তরালে রাখার পর চির অন্তরালে চলে গেলেন মহানায়িকা।
না হাসপাতাল। না পরিবারের কেউ। দুঃসংবাদটা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "সকাল ৮টা ২৫ নাগাদ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়, তাতে তিনি মারা যান।" চলে গেলেন মহানায়িকা। মেয়ে মুনমুন সেন বলেন, "সকলকে আমার মায়ের নমস্কার।"
অথচ এই খবরটা যাতে না শুনতে হয় সেজন্য গত চার সপ্তাহে প্রায় প্রত্যেক মুহুর্তে প্রার্থনা করেছেন সুচিত্রাপ্রেমীরা। জ্বর, সর্দি, ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ২৩ ডিসেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। চিকিত্সার জন্য গঠন করা হয় মেডিক্যাল বোর্ড। সকাল-বিকেল হাসপাতালের মেডিক্যাল বুলেটিনে কি থাকে, সেদিকে এই কদিন কড়া নজর ছিল রাজ্যবাসীর। কেমন আছেন সুচিত্রা সেন? ভাল তো? এই প্রশ্নটাই বারবার শোনা যাচ্ছিল সবার মুখে।
অবস্থার অবনতি হওয়ায় একটা সময় রাখতে হয়েছিল নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনেও। শেষদিকে খাওয়ানো হচ্ছিল রাইলস টিউবে। বুকে সংক্রমণ, কিডনি-হার্টে সমস্যা, রক্তচাপ, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা- সবকিছু নিয়েই উদ্বিগ্ন ছিলেন চিকিত্সকরা। কখনও অবস্থার অবনতি। আবার কখনও একটু আশা জাগিয়ে অবস্থার সামান্য উন্নতি। লড়াইটা চলছিল।
সবার প্রার্থনা ছিল, এবারও নিশ্চই বাড়ি ফিরে যাবেন তাঁদের প্রিয় রমা। ঠিক যেমনভাবে ফিরে গিয়েছিলেন আগেরবার। কিংবা তার আগেরবারও। চিকিত্সকদের রাত-দিনের চেষ্টা, পরিবারের আশা, অনুরাগীদের শুভকামনায় কোনও খামতি ছিল না। বৃহস্পতিবার যখন শোনা গেল, শারীরিক অবস্থার আর অবনতি না হলে, শনিবার, আঠেরই জানুয়ারিই হয়ত হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে সুচিত্রা সেনকে, তখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল গোটা বাংলা।
চোখের সামনে দেখা নাই বা দিলেন, তিনি আছেন এই সত্যিটাও তো কম স্বস্তির নয় বাঙালীর কাছে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে গেল সব আশা। দুঃস্বপ্নটাই সত্যি হল।