শাসক দলের বিরোধীতা, তাই কি ব্রাত্য `গানওয়ালা`-র উল্লেখভরা পাঠ্য বই? উঠছে প্রশ্ন

কবীর সুমনের বহুল প্রশস্তির কারণেই কি শাসকের রোষে পড়েছে উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পাঠ্যবই? প্রশ্ন উঠছে। তবে সেই আলোচনার আগে দেখে নেওয়া যাক, বইটিতে কবীর সুমনকে নিয়ে কী প্রশস্তি করা হয়েছে?

Updated By: Jun 28, 2014, 07:52 PM IST

কবীর সুমনের বহুল প্রশস্তির কারণেই কি শাসকের রোষে পড়েছে উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পাঠ্যবই? প্রশ্ন উঠছে। তবে সেই আলোচনার আগে দেখে নেওয়া যাক, বইটিতে কবীর সুমনকে নিয়ে কী প্রশস্তি করা হয়েছে?

পৃষ্ঠা নম্বর আঠারো। অধ্যায়, বাংলা গানের ইতিহাস।

লেখা হয়েছে, এরকম এক দুর্যোগের কালেই আধুনিক শ্রোতাকে চমকে দিয়ে সুমন চট্টোপাধ্যায় বা এখনকার কবীর সুমনের আবির্ভাব।

আধুনিক বাংলা গানের মঞ্চে পদার্পণের সঙ্গে সঙ্গেই সুমন যে অভূতপূর্ব আপ্যায়ন পেয়েছিলেন, তাতেই বোঝা যায়, উপযুক্ত গানের অভাবে স্রোতের মনে নতুন গানের জন্য জলহীন জমি প্রস্তুত ছিল আগে থেকেই।

ওরিয়েন্ট ব্ল্যাকসোয়ান বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতির অধ্যায়ের পর অধ্যায় জুড়ে রয়েছে বানান বিভ্রাট, ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য। তারই কয়েকটি তুলে দেওয়া হল।

বারো নম্বর পৃষ্ঠা। অধ্যায় বাংলা গানের ইতিহাস।
রজনীকান্ত সেন সম্পর্কে লেখা হয়েছে কোনও বড় কাব্য রচনা করেননি রজনীকান্ত।

পৃষ্ঠা নম্বর চৌত্রিশ। অধ্যায় বাংলা চিত্রকলার ইতিহাস।
রামকিঙ্কর বেজ সম্পর্কে লেখা হয়েছে, রামকিঙ্কর বেইজ ছিলেন একজন ভারতীয় সাঁওতালী ভাস্কর।

পৃষ্ঠা নম্বর পঁয়ত্রিশ। অধ্যায় বাংলা চিত্রকলার ইতিহাস।
সেখানে বিশ্বকবি সম্পর্কে লেখায় রয়েছে বানান বিভ্রাট। লেখা হয়েছে, একথা মোটামুটি প্রচলিত যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আঁকার কাজে হাত দেন একেবারেই পরিণত বয়সে অর্থাত্ প্রৌঢ় বয়সে। প্রধানত পাণ্ডুলিপিতে কাটাকুটি ঢেকে দেবার জন্য উদ্দেশ্যহীন আঁকাআঁকি থেকে, রেখায় রেখায় মেলবন্ধন থেকে রবিকবির চিত্রশিল্প চর্চার শুরু।

পৃষ্ঠা নম্বর সাঁইত্রিশ। অধ্যায় বাংলা চিত্রকলার ইতিহাস।

জয়নাল আবেদিনের নাম জয়নুল আবেদিন লেখা হয়েছে।

পৃষ্ঠা নম্বর সাতচল্লিশ। অধ্যায় বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাস।
সত্যজিত রায় সম্পর্কে লেখা হয়েছে, সত্যজিত বরাবর উনিশ শতকের বাংলার সামাজিক ইতিহাসে বিশেষ আগ্রহী ছিলেন। জলসাঘর হচ্ছে তাঁর প্রথম ছবি যেখানে সেই উনিশ শতকী সংস্কৃতি আর স্বভাবের সমন্বয় দেখা যায়, যার শেষ পর্ব হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের ঘরে বাইরে উপন্যাসের চলচ্চিত্রায়ণে।

শিক্ষা দফতরের দাবি বইয়ে রয়েছে বিস্তর ভুল? কিন্তু কি করে ভুল নিয়ে প্রকাশিত হয়ে গেল বই? কী করছিল শিক্ষা দফতরের সিলেবাস কমিটি, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সিলেবাস কমিটি বলছে, মে মাসে বইটি তাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল । তখনই বইয়ে বিস্তর ভুল নাকি চোখে পড়ে। সে কথা জানিয়ে সিলেবাস কমিটি চিঠিও দেয় উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদকে। সংসদের অবশ্য দাবি তারা কোনও আপত্তিমূলক চিঠি পায়নি । বরং পাল্টা যুক্তি সিলেবাল কমিটির অনুমতি নিয়েই বই ছাপা হয়েছিল। তবে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের ঠেলায় এখন সমস্যায় রাজ্যের কয়েক লক্ষ পড়ুয়াএখন বিভ্রান্ত। কী পড়বেন কবে পড়বেন তা জানে না কেউ।

.