করোনাকালে স্কুলের পুলকারগুলিকে অ্যাম্বুল্যান্স হিসেবে ব্যবহারের আর্জি সংগঠনের
শুধু কলকাতা শহরেই প্রায় ৩৮০০০ মানুষ পুলকার নির্ভর সংসার চালান।
অয়ন ঘোষাল: ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষবার চাকা গড়িয়েছিল পুল কারের। অর্থাৎ বিগত ১৬ মাস ধরে এই ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ। শুধু কলকাতা শহরেই স্কুল পড়ুয়া পরিবহণের অনুমতিপত্র বা পারমিট আছে এরকম পুলকারের সংখ্যা ৩২০০। পারমিট নেই, আদতে প্রাইভেট গাড়ি, কিন্তু পুলকার হিসেবে কাজ করে এরকম গাড়ি আরও ২০০০। এই ইন্ডাস্ট্রির ওপর সরাসরি নির্ভরশীল পরিবারের সংখ্যা ৯৫০০। প্রতি পরিবারে ন্যূনতম ৪ জন করে সদস্য ধরলে শুধু কলকাতা শহরেই প্রায় ৩৮০০০ মানুষ পুলকার নির্ভর সংসার চালান।
বিগত ১৬ মাস ধরে যাঁরা সম্পূর্ণ বেকার। ঘরে যা ছিল হয় বেচে দেওয়া হয়েছে, নাহলে বন্ধক রাখা হয়েছে । মেয়ের বিয়ের গয়না, বিমা, সেভিংস সার্টিফিকেট ভাঙিয়ে কয়েকমাস টানার পর এখন তাও শেষ । কিন্তু স্কুল খোলেনি। কবে খুলবে, আদৌ খুলবে কিনা, কেউ জানেনা। এই অবস্থায় আর অর্ধাহার অনাহারের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে, এই প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে নিজেদের গাড়িগুলিকে অ্যামবুল্যান্স হিসেবে ব্যবহার করার জন্য রাজ্য পরিবহন দফতরের কাছে আবেদন জানাতে চলেছে পুলকার সংগঠন।
অ্যামবুল্যান্সই একমাত্র গাড়ি, যার পারমিট সাতটি কাজের দিনের মধ্যে যোগাড় করা যায়। অন্য যেকোনো ক্ষেত্রে পারমিট প্যাটার্ন চেঞ্জ করতে ন্যূনতম ৩ মাস অপেক্ষা করতে হয়। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কোভিড সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় বাজারে হঠাৎ করেই অ্যামবুল্যান্সের চাহিদাও কমে গিয়েছে। সামান্য চাহিদা রয়েছে অক্সিজেন সিলিন্ডার বা কনসেনট্রেটরবাহী গাড়ীর। সেই রাস্তাও খুলে দেওয়া সম্ভব কিনা, পরিবহন দফতরের কাছে তা জানতে চেয়েছে পুলকার সংগঠন। ২০১৬ সালে শুভেন্দু অধিকারী পরিবহন মন্ত্রী থাকাকালীন পুলকারগুলিকে ভিন জেলায় যাতায়াতের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল। এতে গরমের ছুটি, পুজোর ছুটি এবং বড়দিনের ছুটিতে এই গাড়িগুলি দীঘা, শান্তিনিকেতন, মন্দারমণিতে ট্যুরিস্ট নিয়ে যেতে পারত। ২০১৮ সালের মার্চে সেই অনুমতিও খারিজ হয়ে যায় । ফলে কালকের পর যদি বিধিনিষেধ উঠেও যায়, স্কুল না খোলা পর্যন্ত আর কোনো বিকল্প জীবিকা এদের হাতে নেই।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)