সকালে মাছ, বিকেলে গাছ
মাছের সঙ্গে গাছের কী সম্পর্ক?
মাছের সঙ্গে গাছের কী সম্পর্ক?
ধ্বনিগত সাদৃশ্যটুকু ছাড়া আর কিছু আছে বলে তো মনে হয় না। কিছু কিছু গাছ জলে জন্মালেও গাছ মূলত ডাঙার জিনিস, মাছ জলের। ফলে মিলের প্রশ্নই নেই!
মিল আবার আছেও। মিলটুকু রচনা করেছেন জনৈক সুব্রত মুখার্জি। পশ্চিমবঙ্গ মৎস্য দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিক। সুব্রতবাবু সোম থেকে শুক্রবার সারা দিন ধরে মৎস্য দফতরের ফাইলই নাড়াচাড়া করেন। কিন্তু বিকেলের পরে উনি সম্পূর্ণ অন্য মানুষ। তখন আর তিনি মাছের নন, তখন তিনি গাছের। কাজের শেষে নিজের বাড়ির ছাদে তিনি একজন পুরোদস্তুর বটানিস্ট। সেখানে একক উদ্যোগে ফলিয়েছেন আম, জাম, কাঁঠাল, পেঁপে, বাতাবিলেবু, পেয়ারা, কামরাঙা, নাশপাতি-- বলে শেষ করা যাবে না।
গাছ তাঁর নেশা। এ নেশা অনেকেরই আছে। বিষয়টি নতুন নয়। অনেকেই বাগান করতে গিয়ে বাড়ির ছাদকে বেছে নেন। কিন্তু নিছক নেশার পরিসরে বিষয়টিকে আবদ্ধ রাখেননি সুব্রতবাবু। তিনি গাছের ক্ষেত্রেও পুরোদস্তর পেশাদার হয়ে উঠেছেন। ছাদ-বাগানে তিনি রোজই নানা ভাবে তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন।
এ নিয়ে মৎস্যবিদ এবং উদ্ভিদপ্রেমী সুব্রতবাবু নিজে কী বলছেন? তিনি জানাচ্ছেন, এ বাগানের সবটাই তাঁর নিজের হাতে করা। পরিচর্যার জন্য একজনকে রাখা হয়েছে। সেটুকু বাদ দিলে বাকিটা সম্পূর্ণ তাঁরই দায়িত্ব, ভাললাগা, অবসরযাপন।
সারাদিনের হাড়ভাঙা খাটুনির পরে কীসের প্রেরণায় তাঁর এই গাছ-প্রেম?
সুব্রতবাবু জানাচ্ছেন, তাঁর বাড়ির ঢিলছোঁড়া দূরত্বে এক বহুতলের ছাদে বসেছে মোবাইল টাওয়ার। এর ফলে প্রকৃতির নানা ক্ষতি হয় এ দিকে ক্রমশ সবুজ হারিয়ে যাচ্ছে শহর থেকে। একটু একটু করে তিলোত্তমার দখল নিচ্ছে কংক্রিটের জঙ্গল। তাই তিনি চেয়েছেন, এরই মধ্যে তাঁর বাড়িটুকু অন্তত ব্যতিক্রম থাকুক।
সত্যিই ব্যতিক্রম। তাঁর বাড়ি এই শহরের ধূসর প্রেক্ষাপটে যেন মূর্তিমান সবুজ। যেন সবুজ বিপ্লব।
আরও পড়ুন: উড়ে এল অনুষ্কা শর্মার ফ্লাইং কিস! মাখো মাখো প্রেমে আরবের আইপিএল জমজমাট