শিল্প ক্ষেত্রে নিজদক্ষতা ও সৃজনশীল ধ্যান ধারণার মাধ্যমে ব্যবসায়িক জগতে রতন দেবনাথের আধিপত্য বিস্তার

একটি ক্ষুদ্র ব্যবসাকে কর্পোরেশনে পরিণত করা কোনো পার্কে হাঁটা নয়, অনেক মানুষ এই ধরণের কাজে সাফল্য অর্জন করার সুযোগের অপেক্ষায় জীবন কাটিয়ে দেয়। বিদ্যালয়ে পাঠরত অবস্থাতেই পিতা আশুতোষ দেবনাথের ব্যবসার প্রতি তার আকর্ষণ লক্ষ্য করা যায়। সেই সময় পিতা আশুতোষ দেবনাথ পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার রানীর বাজার অঞ্চলের একজন সফল ব্যবসায়ী এবং তিনি ছিলেন পুত্রের অনুপ্রেরণার উৎস।

Updated By: Nov 18, 2022, 05:14 PM IST
শিল্প ক্ষেত্রে নিজদক্ষতা ও সৃজনশীল ধ্যান ধারণার মাধ্যমে ব্যবসায়িক জগতে রতন দেবনাথের আধিপত্য বিস্তার

আমাদের গ্রহ বহু বুদ্ধিমান ও জ্ঞানীগুণীদের দ্বারা উওরোওর সমৃদ্ধ হচ্ছে। উদ্দ্যমশীল ব্যবসায়ী  এবং তরুণ ধনকুবের  দ্বারা  পরিপূর্ণ এই বিশ্বজগতের ক্ষুদ্র কিংবা বৃহদাকার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বিবর্তনের ধারাপথে বিকাশিত হওয়ার যোগ্য। একবিংশ শতকে দাঁড়িয়ে সকলেই যেকোনো সমস্যার সহজ সমাধানের প্রচেষ্টা করে, এই সমস্ত চিন্তার মাধ্যমেই নতুন নতুন ব্যবসার সূচনা হয়। ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সমূহ সময়ের সাথে সাথে নিজেদের ব্যবসাকে বিকশিত করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকায় কর্মসংস্থান তৈরী করতে সাহায্য করে। আর এমনই এক আঞ্চলিক শিল্পোদ্যোগী শ্রী রতন দেবনাথ বিশ্বের দরবারে তার অসাধারণ ব্যবসায়িক দক্ষতা ও কর্মপ্রচেষ্টার দ্বারা শিলাগাএে নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে খোদাই করতে সক্ষম হয়েছে।

একটি ক্ষুদ্র ব্যবসাকে কর্পোরেশনে পরিণত করা কোনো পার্কে হাঁটা নয়, অনেক মানুষ এই ধরণের কাজে সাফল্য অর্জন করার সুযোগের অপেক্ষায় জীবন কাটিয়ে দেয়। বিদ্যালয়ে পাঠরত অবস্থাতেই পিতা আশুতোষ দেবনাথের ব্যবসার প্রতি তার আকর্ষণ লক্ষ্য করা যায়। সেই সময় পিতা আশুতোষ দেবনাথ পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার রানীর বাজার অঞ্চলের একজন সফল ব্যবসায়ী এবং তিনি ছিলেন পুত্রের অনুপ্রেরণার উৎস। উচ্চমাধ্যমিক পাশের  শ্রী দেবনাথ আগরতলা স্থিত মহারাজা বীরবিক্রম মহাবিদ্যালয়  থেকে  বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন । মহাবিদ্যালয়ে পড়াশুনা চলাকালীন তিনি পিতাকে  ব্যবসায়ে সাহায্য করতে থাকেন এবং ধীরে ধীরে নিজেই ব্যবসায়ের পথে চলতে শুরু করেন এবং স্নাতক ডিগ্রী লাভের পর ১৯৯৬-৯৭ সালে স্ব-উদ্যোগেই  গড়ে তুলেন নিজের প্রথম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মেসার্স  অন্নদা ফাটিলাইজারস এবং এগ্রোকেমিক্যালস নামক ট্রেডিং ইউনিট, বহিঃরাজ্য থেকে রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক ক্রয় করে এনে এই রাজ্যে বিক্রি করতেন ।  সফলতার সহিত যখন তিনি মেসার্স  অন্নদা ফাটিলাইজারস এবং এগ্রোকেমিক্যালসের ব্যবসা করছিলেন  উনার মনের কোনে একখানা স্বপ্ন উঁকি মারছিলো নিজে কিছু তৈরী করার, এই উৎসাহ উদ্যমকে  সাথে নিয়ে ২০০৯-১০ সালে মেসার্স শোভা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি জৈব সার এবং ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন ইউনিট চালু করেন। পরবর্তীকালে এই ইউনিট বিভিন্ন শ্রেণীর (স্ট্রেইন) তরল জৈব সার ও বিভিন্ন জৈব উত্তেজক উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ শুরু করে। এই জৈব সার এবং জৈব উত্তেজক চাষের কাজে ব্যবহার করে ত্রিপুরা ও উত্তরপূর্বভারতের কৃষকেরা প্রভূত পরিমাণে উপকৃত হচ্ছে।

মেসার্স  অন্নদা ফাটিলাইজারস এবং এগ্রোকেমিক্যালস ও মেসার্স শোভা এন্টারপ্রাইজ দুইখানা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান যখন সফলতার সিঁড়িতে  ঊর্ধ্বমুখী তখন তিনি এক সমস্যার সম্মুখীন হন, তা  হলো  বহিঃ রাজ্য থেকে আমদানিকৃত সার, কীটনাশক ঔষধ এবং নিজের স্ব- উৎপাদিত  জৈব সারের সংরক্ষণাগার, কেননা তৎকালীন সময়ে রাজ্যে উন্নত মানের কোনো বেসরকারি পণ্য সংরক্ষণশালা  ছিল না, এই সম্যসা শুধুমাত্র রতন দেবনাথের জন্যই ছিল তেমনটা নয়, অন্যান্য ব্যবসায়ী বন্ধুগণও একই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন; যেহেতু বেসরকারি ভাবে গুদাম ভাড়া পাওয়া যথেষ্ট অভাব। এই সমস্ত অভিজ্ঞতার কারণে পশ্চিম ত্রিপুরার আর.কে.নগরে উচ্চ গুণমান সম্পন্ন গুদাম তৈরির পরিকল্পনা করেন যাতে তার নিজের এবং সাথে সাথে অন্যান্য শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনে পণ্য গুদামজাত করণের সমস্যা লাঘব হয়। এই উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি "লংতরাই লজিস্টিকস" নামে একটা নিবিড় এলাকায় ১ লক্ষ বর্গফুটের জাতীয় স্তরের মান অনুযায়ী গুদাম তৈরী করেন। তার লক্ষ্য হলো আগামী দিনে ২লক্ষ বর্গফুট ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন গুদাম তৈরী করা।

সমাজে ব্যাপক উন্নয়ন সাধনের পাশাপাশি শ্রী রতন দেবনাথ ক্রমে ক্রমে সাফল্যের উচ্চ শিখরে উঠতে চলেছেন। তিনি এবং তার প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গুলি সমাজে মানুষের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় অনেক সমস্যার সমাধান সহ উন্নত জীবন যাপনে উৎসাহিত করছে। ভারত বর্ষে মশলার ব্যাপক ব্যবহার তথা মশলা ব্যবসার ব্যাপকতায় অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রী রতন দেবনাথ ২০১৪ সাল থেকে অন্নদা স্পাইসেস ইন্ডাস্ট্রি নামে এবং " লংতরাই গুঁড়ো মশলা " ব্র্যান্ড নাম দিয়ে মশলার ব্যবসা শুরু করেন যা আজকের দিনে ত্রিপুরা রাজ্য ছাড়াও ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্য গুলিতেও খ্যাতি অর্জন করছে।

শ্রী রতন দেবনাথ নিঃসন্দেহে সফলতার সূচনাকারী হিসেবে যাত্রা শুরু করেছেন। একজন উঠতি তরুণ ব্যবসায়ী হিসেবে শ্রী রতন দেবনাথ শুধুমাত্র ব্যবসার কথা চিন্তা না করে বিভিন্ন সামাজিক কাজেও সমান গুরুত্ব সহকারে মনোনিবেশ করে নিজের নৈতিক দায়িত্ব পালন করতে সচেষ্ট থাকেন। এই কাজগুলি তাকে জীবনের নৈতিকতা ও নীতিবোধের দ্বারা অনুপ্রাণিত করেছিল। ব্যবসার সমুদ্রে পাড়ি দিতে গিয়ে শ্রী দেবনাথ তার অসামান্য কর্ম দক্ষতার স্বীকৃতি স্বরূপ বিভিন্ন পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন, যেমন ইন্দো-বাংলা চেম্বার্স কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃক ২০২১ সালে করোনা যোদ্ধা হিসেবে প্রশংসিত হন। এছাড়াও ত্রিপুরা সরকারের ৩০ তম ও ৩১ তম শিল্প বাণিজ্য মেলায় যথাক্রমে ২০২০ এবং ২০২১ সালে উদ্যোক্তা হিসেবে শিল্পপ্রচারে তার প্রচেষ্টার জন্য তিনি সম্মানিত হন । সর্বোপরি ২১ শে জানুয়ারী, ২০২২ ত্রিপুরা পূর্ণ রাজ্যের ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে শিল্প সামগ্রী উৎপাদন ও শিল্পমহলে কর্ম প্রচেষ্টার অসামান্য অবদানের কথা স্মরণ করে ত্রিপুরা সরকার কর্তৃক কর্ম প্রচেষ্টা পুরস্কার - ২০২২ - এ ভূষিত হন। যাইহোক, এগুলিই শেষ নয় তিনি আশাবাদী, আগামী কিছু সময়ের  মধ্যে তিনি আরও কিছু নতুন ব্যবসা শুরু করতে চলেছেন, যা আমাদের দেশকে আত্মনির্ভরশীল করে তোলার দিকে আরো এক পা এগিয়ে নিয়ে যাবে।

(আর্টিকেলটি ফিচার কনটেন্ট। এর সঙ্গে IDPL-এর এডিটোরিয়াল সংযোগ নেই। এর জন্য IDPL দায়ী নয়।)

.