Maha Shivratri: সারা রাত ঘন অরণ্যে কাটিয়ে বাড়ি ফিরে কী দেখলেন ব্যাধ?
ব্যাধ যেন নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিল না।
নিজস্ব প্রতিবেদন: আগামী ১ মার্চ মঙ্গলবার পালিত হতে চলেছে মহাশিবরাত্রি উৎসব। এদিন ঘোর সমারোহে দিকে দিকে পুজো করা হয় দেবাদিদেবের।
বলা হয়, শিব একটু জল আর বেল পাতাতেই তুষ্ট হন। এ নিয়ে ভক্তদের যথেষ্ট কৌতূহলও আছে। নানা দেবতার পূজাবিধি নানারকম-- জটিল, বিচিত্র, দীর্ঘ। কিন্তু শিবপুজো কেন এত সহজ সরল কী করে? এর কি কোনও ইতিহাস আছে? এক লোককথায় এর একটা আভাস পাওয়া যায়।
কাহিনিটি এরকম: ফাল্গুন মাসের এক উজ্জ্বল দিনে এক ব্যাধ (মতান্তরে ভীল সম্প্রদায়ের এক মানুষ) বেরিয়েছিলেন শিকার করতে। সারাদিন সেদিন তাঁর খুব পরিশ্রম যায়। তেমন শিকারও মেলে না। এদিকে দিন ফুরিয়ে সন্ধে নামতেই ব্যাধ পড়ল মহা ফাঁপরে। পথ ঠিক করতে পারল না সে। শেষে নিরুপায় হয়ে একটি গাছে উঠে নিজের সঙ্গের কাপড় দিয়ে নিজেকে শক্ত করে গাছে বেঁধে নিয়ে ঘুমোতে চেষ্টা করল। সারা রাত তাঁর খুব কষ্টই গেল-- গাছের কাঁটা, অন্ধকার বনের আতঙ্ক, মশা ইত্যাদি পতঙ্গের জ্বালাতন। সে একেবারে ঘেমেনেয়ে উঠল। যাইহোক, অনেক কষ্টে কোনও রকমে রাতটুকু কাটিয়ে ভোর হতেই গাছ থেকে নেমে বাড়ি ফিরল সে।
বাড়ি ফিরে সে তো অবাক! স্বয়ং শিব তাঁর সামনে আবির্ভূত! ব্যাপার কী! সে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারল না। শিব তাকে বর প্রার্থনা করতে বললেন। হতবুদ্ধি ব্যাধ শিবের কাছে তার এই সৌভাগ্যের কারণ জানতে চাইল। শিব বললেন, বৎস! তুমি শিবরাত্রির ব্রত করে আমাকে সন্তুষ্ট করেছ। গত রাত ছিল শিবরাত্রি। সেই রাত্রে তুমি সারা রাত জেগে থেকে আমাকে বেলপাতা ও জল দিয়ে পুজো করেছ। তাই আমি তৃপ্ত। ব্যাধ নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিল না। তারপর সে ক্রমে জানল, সে যে গাছে উঠে বসেছিল, সেই গাছটি ছিল একটি বেলগাছ। আর ওই গাছের নীচেই ছিল এক শিবলিঙ্গ। ব্যাধের শরীরের ঘর্ষণে গাছ থেকে বেলপাতা ছিঁড়ে পড়েছিল সেই শিবলিঙ্গের মাথায়। বিল্বপত্রের সঙ্গে পড়েছিল ব্যাধের শরীরের ঘাম (অথবা রাতের হিম সঞ্জাত শিশির)। এতেই ভগবান খুশি হন।
অবশেষে ব্যাধকে তিনি 'মুক্তি'র বর দিলেন। ব্যাধ তার সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়ে শিবলোকে লীন হয়ে গেল। শিবরাত্রির মহিমা দিকে দিকে প্রচারিত হল।
আরও পড়ুন: Maha Shivratri: মহা শিবরাত্রিতে জল এবং বেলপাতা নিবেদন করলে কেন প্রসন্ন হন শিব?