NEET Result : ৫২ বছর বয়সে NEET-এর মেধাতালিকায় নাম তুলেও ডাক্তারি পড়বেন না প্রদীপ!
৫২ বছর বয়সে ডাক্তারির এই পরীক্ষায় বসেছেন এই ‘ছাত্র’। তবে ডাক্তার হওয়ার উদ্দেশ্যে না। উদ্দেশ্য জানলে আরও অবাকই হবেন।
জি ২৪ ঘন্টা ডিজিট্যাল ব্যুরো: NEET অর্থাৎ ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি এন্ট্রান্স এক্সাম সাধারণত ডাক্তারির পরীক্ষা নামেই আমাদের কাছে পরিচিত। প্রত্যেক বছর একাধিক ছাত্র-ছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর এই পরীক্ষায় বসে। সাধারণত মাধ্যমিকের পর সায়েন্স নেওয়া ছাত্র-ছাত্রী যাদের মেডিকেল লাইনে যাওয়ার ইচ্ছে তারা এই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। উচ্চ মাধ্যমিক ও নিটের সিলেবাসের খুব একটা মিল না থাকায় একই সাথে দুটো পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে না বহু স্টুডেন্ট। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ মাধ্যমিকের পর একাধিক ইয়ার ড্রপ দিয়ে পরিখায় উত্তীর্ণ হয়েছে এরকম উদাহরণই বেশি। একারণেই, বর্তমানে ছোট ক্লাস থেকেই এই পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়াতে শুরু করে দিয়েছেন মা-বাবারা। তবে এখানেই শেষ না। পরীক্ষাটি সারা ভারতে হওয়ায়, এর কোচিং-এর সিস্টেম ও মাইনেও খুব উচ্চমানের। যার ফলে বহু ছাত্র-ছাত্রীর ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও উপায় হয় না। তবে এই সব বাঁধাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, সায়েন্স লাইনের না হওয়া পরও মাত্র ৬ মাসের প্রস্তুতি ৯৮.৯৮ পারসেন্টাইল নাম্বার পেলেন এক পরীক্ষার্থী। আপনি আরও অবাক হবেন তাঁর বয়স জানলে। ৫২ বছর বয়সে ডাক্তারির এই পরীক্ষায় বসেছেন এই ‘ছাত্র’। তবে ডাক্তার হওয়ার উদ্দেশ্যে না। উদ্দেশ্য জানলে আরও অবাকই হবেন। সত্যিই, ভালো মানুষ আজও যে এই পৃথিবীতে আমাদেরই চারপাশে আছেন তাঁর প্রমাণ আরও একবার দিয়ে গেলেন এই ৫২ বছর বয়সী নিট পরীক্ষার্থী।
দিল্লির একটি সুপরিচিত স্কুল থেকে ১৯৮৭ সালে উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে ৭১ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেণ প্রদীপ কুমার সিং। তারপর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথমে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং পরবর্তীতে স্কুল অফ ইকোনমিক্স থেকে অর্থনীতিতেই স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে ছাত্রজীবনের ইতি টানেন প্রদীপবাবু। চাকরি জীবনের শুরুটা হয়েছিল এক ব্যবসায়িক জার্নালে কাজ করার মধ্যে দিয়ে। তারপরই নিজেই ব্যবসা করবেন সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর ছেলে বিজিন স্নেহানস এন এইচ এল মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র । ২০১৯ সালে ৭০০ এ ৫৯৫ নম্বর পেয়ে এমবিবিএস (MBBS) পড়তে ভর্তি হয় বিজিন। প্রদীপ জানান, 'নিট (NEET)-এর প্রস্তুতির জন্য ইনস্টিটিউটগুলি একটি মোটা অঙ্কের টাকা মাইনে নেয়, যা নিম্ন মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে'। তাই কোনও কোচিংইয়ে ভর্তি না করে, নিজেই বাড়িতে পড়িয়েছেন ছেলেকে। তবে মাথায় ঘুরতে থাকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ছাত্র-ছাত্রীদের কথা। তিনি আরও জানান, আমি পদার্থবিদ্যা ও রসায়নে ভালো। আমার ছেলে বায়োলজিতে ভালো। তাই পরিকল্পনা করি আমরা একসাথে গরিব বাচ্চাদের কোচিং দেব। আর একারণেই তিনি পরীক্ষায় বসেন। তাঁর মতে, তিনি পরীক্ষায় বসে তাতে সফল হয়ে তাঁর ছাত্র ছাত্রী ও তাঁদের মা-বাবার মনে এই বিষয়ে ভয় দূর করতে পারবেন। জুলাইয়ের এই পরীক্ষার জন্য ফেব্রুয়ারি থেকে জোর কদমে শুরু করে দিয়েছিলেন প্রস্তুতি। অবশেষে ফলপ্রকাশ হলে জানা যায় ৭০০-এর মধ্যে ৬o৯ নম্বর নিয়ে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে প্রদীপ।
আরও পড়ুন : OMG: লিফটে পোষ্য জার্মান শেফার্ড কামড়ে ছিঁড়ে দিল জোমাটো ডেলিভারি বয়ের গোপনাঙ্গ!
তবে এরই মধ্যে অনেকের মনেই নিশ্চই একটা প্রশ্ন বারবার উঠে আসছে। যে, এইধরনের পরীক্ষাগুলির বেশ কিছু নিজস্ব নিয়ম, এবং বাধ্যবাধকতা থাকে। সেগুলির মধ্যে অন্যতম হল বয়সসীমা। তবে কি যে কোনও বয়সের মানুষই দিতে পারবেন এই পরীক্ষা? ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের তরফে ২০২২ এর মার্চে জানানো হয়েছে, এখন থেকে নিট-ইউ জি (NEET-UG) পরীক্ষার জন্য বয়সের কোনও ঊর্ধ্বসীমা থাকবে না। অর্থাৎ যে কোনও বয়সের মানুষই এবার থেকে দিতে পারবেন এই প্রবেশিকা।