গোপনে জোট করছে কংগ্রেস-বিজেপি, ‘হাত’ না মেলায় বিস্ফোরক কেজরীবাল
এখানেই শেষ নয়, তিনি বিস্ফোরক অভিযোগ করেন, এমনও খবর মিলছে কংগ্রেস-বিজেপি গোপনে সমঝোতা করেছে। কংগ্রেস-বিজেপির সঙ্গে লড়াই করতে আপ প্রস্তুত বলে জানান অরবিন্দ কেজরীবাল।
নিজস্ব প্রতিবেদন: আপ-র সঙ্গে জোট না করার সিদ্ধান্ত কংগ্রেস নেওয়ার পরই অরবিন্দ কেজরীবালের তোপ, তলে তলে জোট করেছে কংগ্রেস-বিজেপি। আজ কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে আলোচনা সেরে শীলা দীক্ষিত জানিয়ে দেন, আপের সঙ্গে জোট করে নির্বাচনে লড়বে না কংগ্রেস। এ দিন টুইটে অরিবন্দ বলেন, “মোদী-শাহ জুটিকে হারাতে যখন দেশের গোটা বিরোধী দল এক জোট হয়েছে, কংগ্রেস সেখানে বিজেপি-বিরোধী ভাগ করে সাহায্য করছে বিজেপিকেই।” এখানেই শেষ নয়, তিনি বিস্ফোরক অভিযোগ করেন, এমনও খবর মিলছে কংগ্রেস-বিজেপি গোপনে সমঝোতা করেছে। কংগ্রেস-বিজেপির সঙ্গে লড়াই করতে আপ প্রস্তুত বলে জানান অরবিন্দ কেজরীবাল।
উল্লেখ্য, আজ দিল্লির কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের সভাপতি রাহুল গান্ধী। সংবাদমাধ্যমকে দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি শীলা দীক্ষিত জানান, সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপের সঙ্গে জোটে যাচ্ছে না কংগ্রেস। রাহুল গান্ধী এর আগে এক লড়ারই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরীবালের তরফে একাধিকবার জোটের বার্তা দেওয়া হলেও, কর্ণপাত করেনি কংগ্রেস। গত শনিবার প্রার্থী ঘোষণার সময় এমনটাই অভিযোগ আনে আম আদমি পার্টি।
গত শনিবার দিল্লির ৭টি আসনের ৬টিতে প্রার্থী ঘোষণা করে অরবিন্দ কেজরীবালের দল। এখনও পর্যন্ত একটিতে ঘোষণা করা হয়নি। রাজনৈতিক মহল এমনটাই মনে করছে, কংগ্রেসের জন্য তারা ২টি আসনও ছাড়তে পারে। বদলে, পঞ্জাবে কংগ্রেসকে কিছু আসন ছাড়ার সওয়াল করেন অরিবন্দ। তবে, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা অমরিন্দর সিং স্পষ্ট করে দেন, কোনও আসন ছাড়তে তারা রাজি নয়। সূত্রে খবর, কংগ্রেসের অভ্যন্তরে কিছুটা চাপে পড়েই দিল্লির জোট নিয়ে কোনও রা কাটচ্ছেন না রাহুল।
আরও পড়ুন- বায়ুসেনার শক্তি বাড়াতে সুখোই যুদ্ধবিমানে যুক্ত হচ্ছে স্পাইস বোমা
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে হটিয়ে ক্ষমতায় ফেরে আম আদমি পার্টি। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় কংগ্রেসের সমর্থনেই মাত্র ৪৯ দিন সরকার চালায় আপ। এর পর ২০১৫ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ৭০টিতে একাই ৬৭ পেয়ে ফের ক্ষমতায় ফেরেন অরবিন্দর কেজরীবাল। শূন্য আসন পায় কংগ্রেস। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে কোনও আসন না পেলেও আপের ঝুলিতে বিপুল শতাংশ ভোট পড়ে। পঞ্জাবে ৪টি আসনে জয়লাভ করে। সে রাজ্যেও প্রায় ২৫ শতাংশ ভোট পায় আপ।
গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে দিল্লি এবং পঞ্জাবে আপের জনপ্রিয়তা এখনও ফিকে হয়েনি বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। দিল্লিতে বিজেপিকে রুখতে আপের সঙ্গে কংগ্রেসের জোটে যাওয়ার পক্ষে মহাজোট নেতৃত্ব। একাধিকবার সে আলোচনাও হয় বিরোধীদের বৈঠকে। জানা গিয়েছে, আপের সঙ্গে সমঝোতা করতে রাহুল গান্ধীকে পরামর্শও দিয়েছেন অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু এবং ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেসের সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারও।
আরও পড়ুন- পাকিস্তানে সক্রিয় ১৬টি জঙ্গিঘাঁটি, ভারতের হাতে গোপন রিপোর্ট
গতকাল রাহুল গান্ধীর সঙ্গে আলোচনা সেরে কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, “জোট সিপিএম নেতৃত্ব কথা বলছে। ওঁরা সিদ্ধান্ত নেব। দুদলের আলোচনাতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” সূত্রের খবর, জোট নিয়ে আগামী দুদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। এদিকে, অধীর চৌধুরীর দিল্লি সফর নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, “ অধীর চৌধুরী গিয়েছেন, আমি জানি না তিনি। বর্ষীয়ান সাংসদ হিসাবে যেতেই পারেন।” জোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বৈঠকের ফল না জানতে পারলে, কিছুই এখন বলতে পারব না। জোট হলে বামেদের সঙ্গে হবে। প্রদীপ ভট্টাচার্য, শঙ্কর মালাকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, দেখা যাক কী হয়!”