করোনা পরিস্থিতিতে অক্লান্ত পরিশ্রমেও নামমাত্র বেতন, ধর্মঘটে ৬ লক্ষ আশাকর্মী
সকাল ৭ টায় দিন শুরু। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পঞ্চায়েতের নির্দেশ মেনে কাজ থেকে গ্রীষ্মের রোদ বা বর্ষার জল পেরিয়ে বাড়ি বাড়ি স্বাস্থ্যসমীক্ষা- সন্ধ্যা ৫টা-৬টা পর্যন্ত এভাবেই দিনটা কেটে যায় আশাকর্মীদের।
নিজস্ব প্রতিবেদন : পোলিও মোকাবিলায় তাঁদের অবদানকে কুর্নিশ জানিয়েছে বিশ্ব। তাঁদের প্রচেষ্টা, প্রচার ও আন্তরিকতা বদলে দিয়েছে গোটা একটি প্রজন্মের ভবিষ্যত। করোনা পরিস্থিতিতেও অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন তাঁরা। অথচ তাঁদের বেতন মাত্র ২,০০০-৪,০০০ টাকা। নেই পর্যাপ্ত পিপিই কিট এমনকি ঝুঁকি নেওয়ার ভাতাও। আর তারই প্রতিবাদে এবার সরব হলেন দেশের ৬ লক্ষ আশাকর্মী।
পর্যাপ্ত বেতন কাঠামো, পিপিই কিট, রিস্ক অ্যালোয়ান্স-সহ একাধিক দাবিতে শুক্র-শনি বনধে সামিল হয়েছেন আশাকর্মীরা। দেশের ১০টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন বৃহস্পতিবার এই কর্মবিরতির ঘোষণা করে। কর্মবিরতিতে যোগ দিয়েছেন অঙ্গনওয়ারি ও ন্যাশানাল হেলথ মিশনের কর্মীরাও। সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার বেসরকারিকরণেরও প্রতিবাদ জানিয়েছেন অ্যাক্রেডিটেড সোশ্যাল হেল্থ অ্যাক্টিভিস্ট (ASHA)কর্মীরা।
সকাল ৭ টায় দিন শুরু। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পঞ্চায়েতের নির্দেশ মেনে কাজ থেকে গ্রীষ্মের রোদ বা বর্ষার জল পেরিয়ে বাড়ি বাড়ি স্বাস্থ্যসমীক্ষা- সন্ধ্যা ৫টা-৬টা পর্যন্ত এভাবেই দিনটা কেটে যায় আশাকর্মীদের। সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন, প্রচার, মাস ভ্যাকসিনেশনে আশাকর্মীদের গুরুত্ব কী, তা জনসাধারণের অজানা নয়।
এই বিষয়টি তুলে ধরেই আশাকর্মীদের দাবি, আইসিডিএস, এনএইচএম ও এমডিএমএস-এর মতো কাজগুলিকে স্থায়ী চাকরির স্বীকৃতি দিক সরকার। সেই সঙ্গে নূন্যতম বেতন কাঠামোও তৈরি করা হোক। এছাড়া কাজের সুবিধার জন্য দেওয়া হোক পর্যাপ্ত পিপিই কিট, মাস্ক, স্যানিটাইজার। কারণ ২,০০০ টাকা মাসিকের পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত ২,০০০ টাকা ঘোষণা করা হলেও অনেকেই তা পাচ্ছেন না। ফলে এই বাজারে সব খরচ সামলে উঠতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের।
পোলিও মোকাবিলায় আশাকর্মীরা কীভাবে কাজ করেছেন, তা সকলেই জানেন। তাছাড়া গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন রোগের বিষয়ে সচেতনতা প্রসার, রোগীদের চিকিত্সার ব্যবস্থা করা, মাতৃত্বকালীন নজরদারি, শিশুস্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ, সবই করতে হয় দেশের প্রায় ১০ লক্ষ আশাকর্মীদের।
করোনা মোকাবিলাতেও বাড়ি বাড়ি খোঁজ নেওয়া, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ি চিহ্নিত করা, কোভিড পজিটিভ ব্যক্তি কার কার সংস্পর্ষে এসেছেন তার ট্রেসিং করা, সমীক্ষা চালানো এবং পাড়ায় পাড়ায় সচেতনতা প্রসার, মাইকিং- সব বেসিক কাজগুলির দায়িত্ব নির্দ্বিধায় কাঁধে তুলে নিয়েছেন আশাকর্মীরা। এই দায়িত্বের উপযুক্ত পারিশ্রমিকও তাই আশা করছেন তাঁরা।
এর আগে জুলাইয়ে কর্ণাটকে করোনা পরিস্থিতিতে কাজের জন্য নুন্যতম ১২,০০০ টাকা বেতন ও সেফটি কিটের দাবিতে কর্মবিরতিতে বসেন আশাকর্মীরা। তার আগে জানুয়ারি মাসেও আশাকর্মীদের বিশাল গোলাপি মিছিলের ছবি ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আরও পড়ুন : নতুন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধিতে বিশ্বে ১ নম্বরে ভারত