৭৩৭ ম্যাক্স বিমান ওড়ানোর নতুন নির্দেশিকা জারি করল বোয়িং, সতর্ক করল DGCA-ও
অটোপাইলটে অতিরিক্ত আস্থাই ডেকে এনেছে বিপদ, বলছেন তদন্তকারীরা
নিজস্ব প্রতিবেদন: ইন্দোনেশিয়ায় লায়ন এয়ারের বিমান দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারতীয় বিমানসংস্থাগুলির জন্য নির্দেশিকা জারি করল ডিরেক্টর জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন। মার্কিন অসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা FAA ও বিমানটির নির্মাতা সংস্থা বোয়িংয়ের নির্দেশিকার ভিত্তিতে জারি হয়েছে এই নির্দেশিকা। তাতে জানানো হয়েছে, নিয়ম মেনে বিমান না চালালে যে কোনও সময় মাটিতে আছড়ে পড়তে পারে সেটি।
গত ২৯ অক্টোবর ১৮৯ জন আরোহী নিয়ে জাকার্তার কাছে সমুদ্রে আছড়ে পড়ে ইন্দোনেশিয়ার লায়ন এয়ারের বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান। তদন্তে জানা যায়, বিমানটির বায়ুর গতিবেগ মাপার মিটার ঠিকমতো কাজ করছিল না। তাতেই ঘটে বিপর্যয়। এর পরই অত্যাধুনিক বিমানটি ওড়ানোর জন্য নতুন নির্দেশিকা জারি করে বিমানটির নির্মাতা সংস্থা বোয়িং।
চলতি বছরই আকাশে উড়তে শুরু করেছে বোয়িংয়ের নতুন বিমান 737 Max. বিমানটি বাণিজ্যিক ভাবে প্রথম আকাশে ওড়ায় লায়ন এয়ার-ই। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি চালিত এই বিমান প্রায় পুরোটাই স্বয়ংক্রিয়ভাবে আকাশে ওড়ে। পাইলটের নির্দেশ দিলে নিজে থেকেই গতি, অভিমুখ ও উচ্চতা বদলায় এই বিমান। এহেন বিমানে কোনও সেন্সর খারাপ হলে যে কী ভয়ঙ্কর পরিণতি হতে পারে তার নজির লায়ন এয়ারের দুর্ঘটনা।
টিকিট না পেয়ে প্রকাশ্যে কাঁদলেন বিজেপির এই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
তদন্তে উঠে এসেছে, বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্সের ২ ডানার নীচে রয়েছে ২টি অ্যাঙ্গেল অফ অ্যাটাক সেন্সর। এই সেন্সরের পাঠানো সংকেতের ওপর নির্ভর করে নিজের আরোহনের নতি নিজেই ঠিক করতে পারে এই বিমান। কিন্তু বিমানের গতি খুব বেশি হলে বা কোনও কারণে বিমানের নতি খুব বেড়ে গেলে এই সেন্সর ঠিকমতো কাজ করে না। যার ফলে বিমানটি নিজে থেকেই মাটিতে আছড়ে পড়তে পারে। লায়ন এয়ারের ক্ষেত্রে এমন কিছু ঘটেছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
এই ধরণের বিপর্যয় এড়াতে কোনও কারণে অ্যাঙ্গেল অফ অ্যাটাক সেন্সর ঠিকমতো কাজ না করলে বিমান সম্পূর্ণ ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ওড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে বোয়িং। সেক্ষেত্রে অটোপাইলট ও অটো ট্রিম কন্ট্রোল (যা বিমানের নতি ঠিক করে) বন্ধ করে দিতে হবে। লায়ন এয়ারের বিমানের ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডারের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে অভিঘাতের মুহূর্ত পর্যন্ত অটোপাইলট বন্ধ করেননি চালক।
আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তালিবানের সঙ্গে বৈঠকে বসছে ভারত
অভিজ্ঞ পাইলটরা বলছেন, বর্তমানে অটোপাইলটের যুগে বিমান নিজে হাতে সুযোগই পান না পাইলটরা। ফলে তাদের দীর্ঘ উড়ানের অভিজ্ঞতা থাকলেও নিজে হাতে বিমান ওড়ানোর অভিজ্ঞতা থাকে তার ভগ্নাংশমাত্র। এরকম কোনও পাইলট জরুরি অবস্থায় কী ভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে তা বুঝে উঠতে পারেন না। যার ফলে ঘটে দুর্ঘটনা।
গোটা ঘটনাক্রম পর্যবেক্ষণ করে বিমানসংস্থাগুলির জন্য নির্দেশিকা জারি করেছে ডিজিসিএ। বর্তমানে জেট এয়ারওয়েজ ও স্পাইসজেট বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান ব্যবহার করে। জেট এয়ারওয়েজের কাছে রয়েছে ৫টি বিমান, স্পাইসজেটের কাছে রয়েছে ১টি বিমান। তবে তারা আজ পর্যন্ত কোনও সমস্যার কথা জানায়নি।