'গৃহযুদ্ধ ও রক্তগঙ্গা' মন্তব্যের জন্য মমতার বিরুদ্ধে চতুর্থ এফআইআর দায়ের অসমে

এফআইআরে অভিযোগ করা হয়েছে,নাগরিকপঞ্জি নিয়ে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন মমতা। 

Updated By: Aug 4, 2018, 11:51 PM IST
'গৃহযুদ্ধ ও রক্তগঙ্গা' মন্তব্যের জন্য মমতার বিরুদ্ধে চতুর্থ এফআইআর দায়ের অসমে

নিজস্ব প্রতিবেদন: অসমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দায়ের হল আরও একটা এফআইআর। নাগরিকপঞ্জি নিয়ে তাঁর 'গৃহযুদ্ধ ও রক্তগঙ্গা' মন্তব্যের জন্য এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এনিয়ে  চারটি মামলা হল তৃণমূল নেত্রীর নামে।    

এফআইআরে অভিযোগ করা হয়েছে,নাগরিকপঞ্জি নিয়ে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন মমতা। তাঁর মন্তব্যের জেরে অসমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভঙ্গ হতে পারে। অবনতি হতে পারে আইনশৃঙ্খলার। আগের একটি এফআইআরও একই অভিযোগে করা হয়েছে. 

নয়াদিল্লিতে ক্যাথলিক বিশপদের একটি আলোচনাচক্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ''রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নাগরিকপঞ্জি তৈরি করা হয়েছে। এটা আমরা চলতে দিতে পারি না। মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করছে বিজেপি। এটা সহ্য করা যায় না। এর ফলে দেশজুড়ে গৃহযুদ্ধ লাগতে পারে। বইতে পারে রক্তগঙ্গা''। 

অসমে নাগরিকপঞ্জির বিরোধিতায় সুর চড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশেই বৃহস্পতিবার শিলচরে যায় তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল। ওই দলে ছিলেন সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, রত্না দে নাগ, মমতা ঠাকুর, নাদিমুল হক ও অর্পিতা ঘোষ এবং বিধায়ক মহুয়া মৈত্র, রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তাঁদের শিলচর বিমানবন্দরের বাইরে পা ফেলতে দেয়নি অসম পুলিস। তাঁদের মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। পাল্টা অসম পুলিস দাবি করে, তাঁদের দুজন মহিলা কনস্টেবল ও এক পুলিস কর্মীকে শারীরিক হেনস্থা করেন তৃণমূলের বিধায়ক মহুয়া মৈত্র। তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার ২৪ ঘণ্টাকে ফোনে অভিযোগ করেন, মনে হচ্ছে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়েছে। তাঁদের গায়ে হাতও তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূল সাংসদের। তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা তথা জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ওব্রায়েনের কথায়, দেশজুড়ে সুপার এমার্জেন্সি লাগু করেছে মোদী সরকার। তাঁর আরও অভিযোগ, তৃণমূল সাংসদ তথা রাজ্যসবায় দলের মুখ্যসচেতক সুখেন্দুশেখর রায়ের বুকে রয়েছে পেসমেকার। তা সত্ত্বেও তাঁকে বুকে আঘাত করেছে অসম পুলিস। ডেরেকের সুরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ''সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন আমাদের প্রতিনিধিরা। বিজেপির মুখোশ খুলে গিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে ও সত্য চাপা দিতেই আজ তৃণমূলের প্রতিনিধিদলকে বাধা দেওয়া হয়েছে। বিজেপি সরকারের বলপ্রয়োগের ধরণ দেখে মনে হচ্ছে যেন দেশে সুপার ইমারজেন্সি চলছে।''

 

 

 শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে লোকসভায় শোরগোল করেন তৃণমূল সাংসদরা। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ''দেশের যে কোনও প্রান্তে যাওয়ার স্বাধীনতা রয়েছে ভারতীয় নাগরিকদের। শিলচরে কোনও সভা হবে না বলে অসম পুলিসকে জানিয়েছিলেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। তা সত্ত্বেও তাঁদের আটক করা হয়।'' তার জবাবে রাজনাথ সিং বলেন, ''গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করেছে অসম সরকার। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় শিলচর বিমানবন্দরে তৃণমূলের সাংসদ-বিধায়কদের আটক করে পুলিস''।

রাজনাথের বিবৃতির প্রেক্ষিতে আগামী পদক্ষেপ এখনও ঠিক করে উঠতে পারেনি। সূত্রের খবর, সপ্তাহান্তে দলনেত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এটা নিশ্চিত, শিলচর-কাণ্ডের জল বহুদূর গড়াতে চলেছে। এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে কেন্দ্রীয় সরকারকে চেপে ধরতে চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।             

আরও পড়ুন- বিরোধী ঐক্যের ভরসায় তিনটি বড় রাজ্যের ১৬৮ আসন টার্গেট কংগ্রেসের 

 

.