একবার বিধায়ক হলেই বাড়ি-গাড়ির ছড়াছড়ি, ইনি চারবারেও পাকা বাড়ি করতে পারলেন না!
জনপ্রতিনিধি বলতে তিনি বোঝেন, মানুষের হয়ে কাজ করতে হবে। জনপ্রতিনিধি মানে বিরাট বাড়ি বা দামি গাড়ির মালিক হওয়া নয়।
নিজস্ব প্রতিবেদন- আশেপাশে সব কোটিপতি বিধায়ক। তাঁদের মাঝে তিনি বড়ই বেমানান। অন্য বিধায়কদের চারতলা, পাঁচতলা বাড়ি। সঙ্গে দামি গাড়ির ছড়াছড়ি। জীবনযাত্রার মানও তাঁদের অনেক উন্নত। সেই তুলনায় কোথায় তিনি! তাঁর তো একখানা পাকা বাড়ি পর্যন্ত নেই। চাষবাসের কাজ করেন। তবে যাই করুন না কেন, মাথা উঁচু করে বাঁচেন তিনি। আমজনতা জানে, তাঁর কাছে আসলে কী আছে! তাঁর পুঁজি সততা। জনপ্রতিনিধি বলতে তিনি বোঝেন, মানুষের হয়ে কাজ করতে হবে। জনপ্রতিনিধি মানে বিরাট বাড়ি বা দামি গাড়ির মালিক হওয়া নয়। আর তাই দুর্নীতিতে ভরা ভারতীয় রাজনীতির উঠোনে তিনি এখনো সততার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। মানুষের মাঝে, মানুষের মনে তাঁর জায়গা অনেক উঁচুতে।
সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে লোকজন এখন তাঁর কথা জানতে পেরেছে। বিহারের কাটিহার জেলার বলরামপুর থেকে এই নিয়ে চারবার বিধায়ক হলেন তিনি। মেহেবুব আলম। চারবার বিধায়ক হওয়ার পরও যাঁর কিনা একটা পাকা বাড়ি পর্যন্ত নেই! এখনো কোথাও যেতে হলে দুই পা-ই ভরসা। দু চাকা বা চারচাকা তাঁর কাছে স্বপ্নের মতো। তিনি জনপ্রতিনিধি। মানুষের হয়ে কাজ করাই তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য। বাড়ি, গাড়ি হাঁকানো নয়। মেহেবুব আলম সিপিআই-এর বিধায়ক। তিনি বিহারের অহংকার, দেশের গর্ব।
আরও পড়ুন- ''আপনারা আছেন তাই দেশ আছে, উত্সব আছে!'' সেনা জওয়ানদের বললেন প্রধানমন্ত্রী
ভাকপা মালের টিকিটে বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়িয়ে বলরামপুর সিট থেকে ৫৩ হাজারেরও বেশি ভোট ব্যবধানে জিতেছেন সিপিআই-এর বিধায়ক মেহেবুব। এবার বিহার নির্বাচনে তিনি সব থেকে বেশি ভোট ব্যবধানে জয়ী প্রার্থী। ৪৪ বছর বয়সী মাহবুব আলম ক্লাস টেন পাশ। চাষবাস করে দিন আনি দিন খাই জীবন কাটে তাঁর। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া হলফনামায় সম্পত্তির পরিমাণের জায়গায় তিনি শূন্য লিখেছেন। কারণ সত্যিই তাঁর সম্পত্তি বলতে কিছু নেই। একখানা কাঁচা বাড়ি আর চাষের কিছু জমি। যা দিয়ে দিন গুজরান হয়। জমানো অর্থ বলতে কিছুই নেই। তিনি এদেশের রাজনীতিবিদ। অথচ তাঁর কিনা এমন অবস্থা! মেহবুব আলমের মতো মানুষরাই এখনো দেশবাসীকে বিশ্বাস ও ভরসা যুগিয়ে চলেছেন। রাজনীতিতে পা রাখলেই দুর্নীতির কাদায় ডুব দিতে হয় না। চারপাশে কাদার ছড়াছড়ি থাকলেও নিজে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা যায়। এটাই যেন শিখিয়ে যাচ্ছেন মেহেবুব আলম।