রাজ্যপালের সুপারিশে মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির অনুমোদন রামনাথ কোবিন্দের
১৯৮০ সালের পর ফের মহারাষ্ট্রে জারি হল রাষ্ট্রপতি শাসন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: নাটকের পর নাটক। মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন নিয়ে অচলাবস্থার জেরে জারি হল রাষ্ট্রপতি শাসন। মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত্সিং কোসয়ারি টুইটারে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সুপারিশ করেছে রাজভবন। রাজ্যপালের সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ওই সুপারিশে অনুমোদন দেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। ১৯৮০ সালের পর ফের মহারাষ্ট্রে জারি হল রাষ্ট্রপতি শাসন। বিজেপি, শিবসেনা ও এনসিপি-কে সরকার গঠনের জন্য ডেকেছিলেন ভগতসিং কোসয়ারি। কিন্তু কোনও দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতার দাবি করতে পারেনি। রাজ্যপাল বিজেপির হয়ে কাজ করেছে অভিযোগ করেছে শিবসেনা।
— Bhagat Singh Koshyari (@BSKoshyari) November 12, 2019
President's Rule imposed in the state of #Maharashtra, after the approval of President Ram Nath Kovind. pic.twitter.com/tR3qW4xYbR
— ANI (@ANI) November 12, 2019
২৪ অক্টোবর নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর কেটে গিয়েছে ২০ দিন। শিবসেনা ও বিজেপি জোট করে নির্বাচনে লড়াই করলেও মুখ্যমন্ত্রিত্বে দাবি নিয়ে শুরু হয় টানাপোড়েন। ৫০-৫০ শর্তে জোট হয়েছিল বলে মনে করিয়ে দেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। শিবসেনা দাবি করে, আড়াই আড়াই বছর করে দু'দলের মুখ্যমন্ত্রী থাকবে মহারাষ্ট্রে। প্রথম পর্যায়ে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী থাকলেও আড়াই বছর পর তাঁকে সরে দাঁড়াতে হবে। আর সেটা লিখিত দিতে হবে বিজেপিকে। কিন্তু উদ্ধবের শর্ত মানতে রাজি হয়নি গেরুয়া শিবির। রাজ্যপালের কাছে গিয়ে হাত তুলে দেয় মোদীর দল।
এনসিপি ও কংগ্রেসকে নিয়ে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের তোড়জোড় শুরু করে দেয় শিবসেনা। মোদী সরকারে শিবসেনার একমাত্র মন্ত্রীকে পদত্যাগ করিয়ে তা স্পষ্ট করে দেয় তারা। সোমবার সন্ধেয় রাজ্যপাল ভগতসিং কোসয়ারির সঙ্গে দেখা করে ২ দিন সময় চান আদিত্য ঠাকরেরা। কিন্তু সেই সময় দিতে চাননি রাজ্যপাল। কারণ, এনসিপি বা কংগ্রেসের সমর্থনপত্র দেখাতে পারেননি শিবসেনার প্রতিনিধিরা। এনসিপি-কে ডেকে পাঠানো হয় রাজভবনে। সূত্রের খবর, মহারাষ্ট্রের প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা শিবসেনার সঙ্গে জোট নিয়ে উতসাহী। তবে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে চান সনিয়া গান্ধী। শরদ পাওয়ারের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী। তাঁর আশঙ্কা, বিজেপি ও শিবসেনা স্বাভাবিক বন্ধু। ৩০ বছর ধরে তাঁদের জোট। ফলে উদ্ভূত সংঘাত সাময়িক হতে পারে। কিন্তু শিবসেনা ও কংগ্রেসের নীতি ভিন্নমেরুর। হিন্দুত্ববাদী দলের সঙ্গে হাত মেলালে কংগ্রেসের 'সেকুলার ইমেজে' লাগতে পারে ধাক্কা। সেটা ভালোমতোই বোঝেন কংগ্রেস সভানেত্রী।
কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে এনসিপি, সেটা ইতিমধ্যে স্পষ্ট করে দিয়েছেন অজিত পাওয়ার। সূত্রের খবর, সনিয়ার সঙ্গে আলোচনায় শরদ পাওয়ার ভাবনাচিন্তার জন্য সময় চেয়েছেন। এনসিপি মনে করছে, শিবসেনার থেকে তারা মাত্র ২টি আসন কম পেয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে পূর্ণ সময়ের মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে দাবি করতে পারে শিবসেনা? তাদের দাবি মেনে নেওয়াটাই বা কতখানি যুক্তিযুক্ত?
বলে রাখি, মহারাষ্ট্রে বিজেপির সঙ্গে জোট করে শিবসেনা পেয়েছে ৫৬টি আসন। এনসিপি ও কংগ্রেসের আসন সংখ্যা যথাক্রমে ৫৪ ও ৪৪। ১০৫টি আসন নিয়ে বৃহত্তম দল হয়েছে বিজেপি। ২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় সরকার গঠনের জাদু সংখ্যা ১৪৫। কংগ্রেস, এনসিপি ও শিবসেনা জোট করে আসন দাঁড়াবে ১৫৪টি।
আরও পড়ুন- 'বিরল ঘটনা'! বাণিজ্য বনাম অর্থ, আদালতে যুযুধান মোদী সরকারের দুই মন্ত্রক